শিল্পী, সাহিত্যিকদের অস্বাভাবিক মৃত্যু
তাঁদের জীবন জনতার কাছে খোলা খাতা৷ সাহিত্য, সংগীত ও শিল্পের সঙ্গে সারা জীবন কাটিয়ে জীবনের শেষ মুহূর্তে তাঁরা ভক্তদের থেকে বিদায় নিয়েছেন আশ্চর্যজনকভাবে৷ ছবিঘরে দেখুন এমনই কয়েকজন তারকার আশ্চর্য মৃত্যু৷
এলভিস প্রেসলি
এলভিস প্রেসলি বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়কদের মধ্যে একজন৷ তিনি তাঁর ডাকনাম এলভিস নামেও পরিচিত৷ তাঁকে বলা হয় ‘কিং অফ রক অ্যান্ড রোল’ অথবা শুধু ‘দ্য কিং’৷ তিনি জীবনের শেষদিকে এসে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন এলভিস৷ অনেকে মাদকাদ্রব্যকেই তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে অভিহিত করেন৷ নিজের বাথরুমে তিনি ১৯৭৭ সালের ১৬ই আগস্ট হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান৷
যুবরানি ডায়না
১৯৮১ সালে ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লসের সাথে বাগদানের পর থেকে ১৯৯৭ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ডায়ানাকে বলা হতো পৃথিবীর সবচেয়ে খ্যাতিমান নারী৷ ফ্যাশন, সৌন্দর্য, এইডস রোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়৷ এই খ্যাতিই হয়ত ডায়ানার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সের প্যারিস শহরে ডায়ানা ও তাঁর তৎকালীন প্রেমিক দোদি ফায়েদ এক গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন৷
ফান গখ
পোস্ট-ইমপ্রেশনিজমবাদী ওলন্দাজ চিত্রশিল্পী ফান গখের সপ্রতিভ রঙের ব্যবহার শিল্পকলায় সুদূরপ্রসারি প্রভাব রেখেছিল৷ কিন্তু জীবনের প্রতি প্রবল হতাশায় ভুগে ১৮৯০ সালের ২৯ জুলাই রিভলভার দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি৷
ভার্জিনিয়া উল্ফ
ভার্জিনিয়া উল্ফ ১৯ শতকের ব্রিটিশ আধুনিকতাবাদী লেখকদের মধ্যে অন্যতম৷ ডিপোলার ডিজঅর্ডার নামক একটি মানসিক রোগে ভুগেছিলেন তিনি৷ শেষ উপন্যাস ‘বিটউইন দ্য অ্যাক্টস’ লেখা শেষ করার পর তিনি বিষণ্ণতায় ভুগতে শুরু করেন৷ ২৮শে মার্চ ১৯৪১ সালে তিনি তাঁর ওভারকোটের পকেট ভারি পাথর দিয়ে ভর্তি করে ওউজ নদীতে আত্মহত্যা করেন৷
মেরিলিন মনরো
এই শতাব্দীতেও তাঁকে নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই৷ মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া সৌন্দর্য আর অভিনয় দক্ষতার পাশাপাশি যৌনতার প্রতীক হিসেবে গোটা বিশ্বে ধারাবাহিকভাবে চর্চিত হয়েছেন মার্কিন অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো৷ লস অ্যাঞ্জেলেসের ব্রেন্টউডে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মনরো মাত্রাতিরিক্ত বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন ১৯৬২ সালের ৫ আগস্ট৷
ব্রুস লি
অভিনেতা ব্রুস লি মার্শাল আর্ট শিল্পী, শিক্ষক ৷ মাত্র ৩২ বছর বয়সে ব্রুস লির মৃত্যু হয় হংকংয়ে এবং তখনই এই মৃত্যু নিয়ে নানা বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে৷ ১৯৭৩ সালের মে মাসে একটি চলচ্চিত্রে ডাবিংয়ের সময় ব্রুস লির মস্তিষ্ক হঠাৎই ফুলে উঠতে শুরু করে, সঙ্গে শুরু হয় তীব্র মাথাব্যথা৷ চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় সেরেব্রাল এডেমা৷ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো যায়নি৷
মাইকেল জ্যাকসন
মাইকেল জ্যাকসনের আচমকা মৃত্যুর জন্য দীর্ঘমেয়াদে পেইন কিলার সেবনকে দায়ী করা হয়৷ তবে এ নিয়ে বিতর্ক বোধ হয় কোনো দিনই শেষ হবে না৷ শুরুতে জানানো হয়েছিল তাঁর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটেছে৷ পরে জানানো হয়, ডেমারোল নামের ব্যথানাশক ইনজেকশন নেওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে জ্যাকসনের৷ ডেমারোল নেওয়ার পর থেকেই নাকি তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস ধীর হতে শুরু করে৷ এবং এক পর্যায়ে একেবারে বন্ধ হয়ে যায়৷
স্টিভ আরউইন
স্টিভেন রবার্ট আরউইন ওরফে স্টিভ বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ও টিভি ব্যক্তিত্ত্ব ছিলেন৷ বিশ্বব্যাপী প্রচারিত ‘ক্রোকোডাইল হান্টার’ নামের একটি টেলিভিশন প্রামাণ্যচিত্রের জন্য বিখ্যাত তিনি৷ গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে ডুব-সাঁতার দেয়ার সময় একটি স্টিং-রে বার্ব তাঁর বুক ফুটো করে হুল ফোটালে তিনি তৎক্ষণাৎ মারা যান৷
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
মার্কিন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আর্নেস্ট মিলার হেমিংওয়ের ওপর নির্মেদ ও নিরাবেগী ভাষার ভীষণ প্রভাব ছিল৷ তাঁর অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় ও জনপ্রিয় ইমেজও পরবর্তী প্রজন্মের ওপর ভীষণ প্রভাব ফেলে৷ ১৯৫৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন হেমিংওয়ে৷ এরপর ১৯৬১ সালের ২রা জুলাই ভোর-সকালে নিজের প্রিয় শটগান দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি৷