শিবানন্দ কি বিশ্বের বয়স্কতম মানুষ?
ভারত সরকারের দেয়া আধার কার্ড বলছে, তার জন্ম ১৮৯৬ সালে। ১২৬ বছর বয়সেও অনায়াসে যোগ ব্যায়াম করেন স্বামী শিবানন্দ।
জাপানকে টক্কর?
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী এই মুহূর্তে পৃথিবীর বয়স্কতম মানুষের নাম কেন তানাকা। তার বাড়ি জাপানে। কিন্তু এবার তাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন ভারতের স্বামী শিবানন্দ। সরকারি নথি বলছে, তার বয়স ১২৬ বছর।
যোগ ব্যায়ামই জীবন
প্রতিদিন ভোর তিনটেয় ঘুম থেকে ওঠেন শিবানন্দ। ঘণ্টাখানেক হাঁটেন। তারপর প্রায় একঘণ্টা যোগ অভ্যাস করেন। এরপর ভজন করে কিছুক্ষণ রৌদ্রস্নান করে ঘরে ঢোকেন তিনি।
দুইবেলা খান
পরিমিত খাবার খান শিবানন্দ। দুইবেলা। সকালে প্রাতরাশ করেন না। তার বক্তব্য, যোগ ব্যায়াম করেই নিজেকে সুস্থ রেখেছেন তিনি। কোনো রোগ নেই। ১২৬ বছর বয়সেও শরীর সচল।
ছেলেবেলার কথা
ছোটবেলার কথা খুব বেশি মনে পড়ে না শিবানন্দের। চার বছর বয়সে এক সন্ন্যাসীর কাছে তার ছেলেকে সমর্পণ করেছিলেন বাবা-মা। শিবানন্দের ছয় বছর বয়সে একই দিনে দুইজনেরই মৃত্যু হয়। তারপর থেকে সন্ন্যাসীর সঙ্গেই ঘুরেছেন তিনি।
খুবই গরিব পরিবারে জন্ম
শিবানন্দের মনে পড়ে, খুবই গরিব পরিবারে জন্ম হয়েছিল তার। ভাত নয়, বাড়িতে ফ্যান খাওয়া হতো। সন্ন্যাসীর কাছে গিয়েই প্রথম ভাত খান তিনি।
বেনারসের বাসিন্দা
এখন বেনারসে একটি এক কামরার ঘরে থাকেন তিনি। দামি খাবার খান না। এমনকী, ফল বা দুধও নয়। ওই সমস্ত খাবার দেখলেই তার মনে হয়, গরিব মানুষের ভাগ্যে এসব জোটে না।
খালি পায়ে রাষ্ট্রপতি ভবন
যোগ ব্যায়ামের জন্য একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন শিবানন্দ। সম্প্রতি পেয়েছেন ভারত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সম্মান পদ্মভূষণ। খালি পায়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে সেই সম্মান নিয়েছিলেন তিনি।
সদা থাকো আনন্দে
শিবানন্দের মূল মন্ত্র আনন্দ। সকলকে আনন্দে থাকার উপদেশ দেন তিনি। তার বক্তব্য, অল্পে খুশি থাকাই তার জীবনের লক্ষ্য ছিল বরাবর। সে কারণে বড় বাড়িতে থাকার কথাও ভাবেননি কখনো তিনি।
যোগবীরের শিষ্যরা
গোটা দেশে অসংখ্য শিষ্য আছে শিবানন্দের। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাকে নিয়ে যান তারা। ডয়চে ভেলেকে তারা জানিয়েছেন, বিশ্বের বয়স্কতম মানুষ হিসেবে তার নথিপত্র গিনেস কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই প্রাথমিক কাজ শেষ হবে।
কুষ্ট রোগীদের পাশে
যোগ ব্যায়ামের পাশাপাশি কুষ্ট রোগীদের সাহায্য করা শিবানন্দের আরেক নেশা। ৫৫ বছর ধরে একাজ করছেন তিনি। ভক্তদের কাছ থেকে কখনো অর্থ নেন না তিনি। টাকা নেয়া অপরাধ বলে মনে করেন তিনি। তবে ভক্তরা যদি কুষ্টরোগীদের সাহায্যে অর্থসাহায্য করতে চান, তাহলে তা গ্রহণ করেন শিবানন্দ।