শান্তির খোঁজে সীমান্তের ওপারে
গত ১৫ মাসে পাকিস্তানে থেকে ষোল হাজারের বেশি হিন্দু সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন৷ পাকিস্তানে তাদের জীবন যাপনের ব্যবস্থা ভাল থাকলেও প্রতিবেশি দেশেই তারা বেশি নিরাপদ বোধ করছেন বলে দাবি করেন৷
দেশভাগে দেশছাড়া
১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর পাকিস্তানের বসবাসরত হিন্দুদের বড় অংশই পাড়ি জমায় ভারতে৷ তারপরও কিছু মানুষ তাদের ভিটেমাটিতেই থেকে যান৷ বর্তমানে দেশটির মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র দুই শতাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী৷
নিজ দেশে পরবাসী
পাকিস্তানে হিন্দু, আহমদিয়াসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘুদের উপর বৈষম্য আর নির্যাতন দিনদিন বেড়ে চলছে৷ মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অভিযোগ দেশটির ব্লাসফেমি আইনের মূল উদ্দেশ্যই সংখ্যালঘুরা৷ আফগান সীমান্তবর্তী উপজাতি অঞ্চলগুলোসহ বেশ কিছু স্থানে এমনকি জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মান্তরের ঘটনাও ঘটেছে৷
মোদীর ডাকে সাড়া
ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রতিবেশি দেশগুলোর হিন্দুদের আশ্রয় দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে৷ নতুন নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের আগে আসা হিন্দুরা সহজেই নাগরিকত্ব পাবেন ভারতে৷ ছবিতে একজন শরণার্থীর ঘরের দেয়ালে নরেন্দ্র মোদীর পোস্টার ঝুলছে৷
শরণার্থী স্রোত
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত ১৫ মাসে ১৬ হাজার ১২১ জন পাকিস্তানের নাগরিক ভারতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন৷ গত কয়েক বছরে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা শত থেকে হাজারে পৌঁছেছে৷
উগ্র হিন্দুদের অভ্যর্থনা
শরণার্থীদের এই স্রোতকে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর কাজে লাগাচ্ছে উগ্র হিন্দু গোষ্ঠীগুলো৷ যেমন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ শরণার্থী শিবিরগুলোতে তাদের ধর্মীয় শিক্ষাগুরুদের নিয়োগ দিয়েছে৷ ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এই দলটির বিরুদ্ধে মুসলিম সংখ্যালঘুদের উপর সহিংস কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে৷
কথা বলতে মানা
শরণার্থীদের গণমাধ্যমে কথা বলতে বারণ করেছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা৷ সেখানে বসবাসরতদের একজন ধর্মবীর সোলঙ্কি বলেন, ‘‘তারা আমাদের সাহায্য করতে চায়৷’’ নিজের অনুভূতির কথা জানিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখানে নতুন করে বাঁচতে চেষ্টা করছি৷’’
একই জীবন ভারতীয় মুসলিমদের
পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের মতোই পরিস্থিতি ভারতের মুসলিমদের৷ মোদী সরকারের নতুন নাগরিকত্ব আইন ভারতে তাদের অবস্থান আরো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিডম কমিশনের এক শুনানিতে ভারত বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষাবিদরা এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন৷ এই আইনে মুসলিম সংখ্যালঘুরা নাগরিকত্ব হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন৷