1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শান্তির ‘অস্ত্র' হতে পারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

১২ জুলাই ২০১৯

বিদ্বেষ ছড়াতে যতটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহৃত হচ্ছে, ততটাই তা প্রতিরোধে এর ব্যবহার বাড়াতে হবে৷ বিশেষ করে ধর্মের অহিংসতা ও শান্তির বাণী প্রচার করতে হবে বেশি বেশি৷ এক আলোচনায় উঠে এসেছে এসব বক্তব্য৷ 

https://p.dw.com/p/3Lz3e
Religion and Media Program conducted by Deutsche Welle Akademie
ছবি: DW/A. Purwaningsih

ধর্ম ও গণমাধ্যম বিষয়ে জার্মানির বন ও বার্লিনে সম্প্রতি পাঁচদিন ব্যাপী সেমিনারের আয়োজন করে জার্মানির ডয়চে ভেলে একাডেমি৷ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সহায়তায় অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারীরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির বাণী ছড়াতে সামাজিক গণমাধ্যমকে ‘অস্ত্র হিসেবে' ব্যবহার করতে হবে৷

আলোচনায় রিলিজিওন্স ফর পিস মিয়ানমার-এর সদস্য মিরা লুইন মার উ জানান, তাঁর দেশে কোনো কোনো বৌদ্ধ ও মুসলিম ধর্মীয় পণ্ডিত ও নেতা এরই মধ্যে এই উপায় অবলম্বন করেছেন৷

‘‘মিয়ানমারে ফেসবুক সবচেয়ে প্রভাবশালী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম,'' বলছিলেন তিনি৷ ‘‘কোনো কিছু ভাইরাল হতে সময় নেয় না৷ তাই আমি মনে করি, শান্তির বাণী ছড়াতে এর সম্ভাবনা বিপুল৷''

ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে উস্কানি দেয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে৷ বিশেষ করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের সময় সংঘাত কিংবা ২০১২ সালে সেখানে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সাম্প্রদায়িক হামলার সময়, ফেসবুকে অনেক ভুয়া ছবি ভাইরাল হয়েছে৷ শুধু মিয়ানমার নয়, বাংলাদেশেও ফেসবুকের ভুয়া পোস্ট ব্যবহার করে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে

মিরা বলেন, অনেক ঘটনায় দেখা গেছে, ফেসবুকে অনেকে এমন ছবি বা বক্তব্য প্রকাশ করেছেন, যা বিভিন্ন সংঘাতকে উস্কে দিয়েছে৷ তাই ভুয়া ও উস্কানিমূলক এসব খবরের বিরুদ্ধে উলটো ফেসবুককেই ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করেন তিনি৷

ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা দেখেন কেউ কেউ৷ ডিপ্লোমেটিক স্কুল ইয়াঙ্গুনের লুইন ইব্রাহিম বলেন, ‘‘একে অন্যকে যেন বুঝতে পারি, তাই ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে আমরা সংলাপের আয়োজন করি৷ আমরা ধর্মের ইতিবাচক রূপটি তুলে ধরবার জন্য ‘কাউন্টার ন্যারেটিভ' তৈরি করি৷''

এছাড়া স্কুলগুলোতে, বাধ্যতামূলকভাবে সম্প্রীতির পাঠ দেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয় সেমিনারে৷

Religion and Media Program conducted by Deutsche Welle Akademie
ছবি: DW/A. Purwaningsih

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়শিয়ার প্রথম নারী রেক্টর অধ্যাপক দাতুক সেরি জালেহা কামারুদ্দিন মনে করেন, ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীলতা বৈশ্বিকীকরণের নতুন ওয়েভ৷

‘‘মানুষ কোনো বিষয়ে অসন্তুষ্ট হলে প্রতিবাদে রাস্তায় নামতেন৷ এখন নতুন প্রজন্ম সামাজিক মাধ্যমে লেখে,'' বলেন তিনি৷ 

অধ্যাপক জালেহা কামারুদ্দিন যোগ করেন, ‘‘নতুন প্রজন্মের মাঝে স্থিতিশীলতা তৈরি করতে হবে৷ তাদের সঙ্গে আধ্যাত্মবাদ নিয়ে কথা বলতে হবে৷ অন্য ধর্মের সঙ্গে সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে৷''

জার্মানির পররাষ্ট্র দপ্তরের ধর্ম ও বিদেশ নীতি বিভাগের প্রধান ফলকার বেরেসহাইম বলেন, শান্তি রক্ষায় ভুমিকা রাখতে চায় জার্মানি৷ তাই দেশটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভুমিকা রাখতে পারেন এমন বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মাঝে সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করবে৷

‘‘আর এই কাজটি করতে হলে গণমাধ্যমকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তা বিশেষ করে ভাবতে হবে৷ তাই ধর্মীয় বা আধ্যাত্মবাদের বিষয়গুলো নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদেরও গণমাধ্যম ব্যবহারের এই শিক্ষা প্রয়োজন৷''

আগামী ২০ থেকে ২৩ আগস্ট জার্মানির লিনডাওতে দশম ‘রিলিজিয়ন্স ফর পিস' সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে৷ সেখানে বিশ্বের ১০০টি দেশ থেকে ১৭টি ধর্মের অনুসারীদের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন৷ মোট অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৯০০ জন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷

আয়ু পূর্বানিংসিহ/জেডএ