1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শহীদুল আলমের ‘জরুরি চিকিৎসা' প্রয়োজন

২৩ আগস্ট ২০১৮

আন্তর্জাতিক এক টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা করার পর থেকে কারাবন্দি আছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম৷ কারাগারে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ৷

https://p.dw.com/p/33cY1
ছবি: bdnews24.com

ঢাকায় সাম্প্রতিক ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সরকারের কড়া পদক্ষেপের সমালোচনা করে আল-জাজিরা টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকার দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই শহীদুল আলমকে তাঁর বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাক পরা একদল গোয়েন্দা পুলিশ৷ তাঁকে এমন এক সময় আটক করা হয়, যখন ঢাকার রাজপথে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজপথে অবস্থান করছিল কয়েক হাজার শিক্ষার্থী৷ চলতি মাসে শুরুর দিকে তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণসহ নানাভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে৷ তাদের সেই আন্দোলনে শরিক হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷ কিন্তু পুলিশ এক পর্যায়ে তাদের রাজপথ থেকে সরাতে রাবার বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে৷ অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মীরাও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর সহিংস আক্রমণ করেছিল৷ এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়৷ গ্রেপ্তারও করা হয় বেশ কয়েকজনকে৷

গত পাঁচ আগস্ট রাতে আলোকচিত্রী এবং মানবাধিকার কর্মী শহীদুল আলমকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর কয়েক দিনের জন্য তাঁকে রিমান্ডে নেয়া হয় এবং পরবর্তীতে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়৷ তাঁর স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ ২২ আগস্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কারাগারে শহীদুল আলমের নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে, যা তাঁর আগে কখনো ছিল না৷ ফলে, তাঁর দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন৷ 

বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘আমরা সরকার এবং আরো সুনির্দিষ্টভাবে কারা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, ড. শহীদুল আলমকে অনতিবিলম্বে হাসপাতালে স্থানান্তরের মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক৷''

নারী অধিকার কর্মী শিরিন হক সম্প্রতি কারাগারে শহীদুল আলমকে দেখে এসেছেন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি জানান, ৬৩-বছর বয়সি আলমের শারীরিক অবস্থার সত্যিই অবনতি ঘটেছে৷ তাঁর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এবং শরীরের নানা স্থানে ব্যথা শুরু হয়েছে৷ আলম আদালতে উল্লেখ করেছিলেন যে, তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছে৷

আলমের দীর্ঘদিনের এই বন্ধু বলেন, ‘‘মানসিকভাবে তিনি শক্ত থাকলেও তাঁকে দেখে তেমন সুস্থ মনে হয়নি৷''

শহীদুল আলমকে এখনো কোনো মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়নি৷ পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে বিতর্কিত তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় আটক করা হয়েছে৷ এই ধারা অনুযায়ী, কেউ অনলাইনে প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা করলে তাঁকে গ্রেপ্তারের সুযোগ রয়েছে৷ আল-জাজিরা টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকার ছাড়াও আলম ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়েছেন বলেও দাবি কর্তৃপক্ষের৷

আলমকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সরকারের অন্যান্য সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও মনে করেন শিরিন হক৷ তিনি বলেন, ‘‘এই গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সবাইকে অনানুষ্ঠানিকভাবে এই বার্তা দেয়া হয়েছে যে, সরকারের সমালোচনা করার সাহস করো না, করলে তা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হবে৷''

এদিকে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল থেকে শহীদুল আলমকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার দাবি উঠেছে৷ মার্কিন পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্ট সম্প্রতি শহীদুলের প্রতি সমর্থন জানিয়ে একাধিক সংবাদভাষ্য প্রকাশ করেছে, যাতে তাঁকে দ্রুত মুক্তি দিতে বলা হয়েছে৷ তাঁকে আটকে রাখার বিষয়টিকে ‘বিচারবহির্ভূত' আখ্যা দিয়ে তাঁর মুক্তি দাবি করেছেন দশজন নোবেল বিজয়ী৷ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার তরফ থেকেও অনতিবিলম্বে তাঁর মুক্তি কামনা করা হয়েছে৷ 

ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গও দ্রুত শহীদুল আলমের মুক্তি দাবি করেছেন৷ জার্মানির আন্তর্জাতিক সম্প্রচার কেন্দ্রটির সঙ্গে আলমের দীর্ঘদিনের কাজের সম্পর্ক রয়েছে৷ ডয়চে ভেলের আধুনালুপ্ত ‘দ্য বব্স' প্রতিযোগিতার বাংলা ভাষার বিচারক ছিলেন তিনি৷

ওলে টান্গেন জুনিয়র / এআই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য