1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শহরে গাড়ি হটিয়ে সাইকেল বাড়াতে চান এক ডিজাইনার

২৮ ডিসেম্বর ২০২১

পরিবেশবান্ধব শহর সম্ভব করতে স্বপ্ন দেখা বন্ধ করা উচিত নয়৷ হামবুর্গের এক গ্রাফিক ডিজাইনার অ্যানিমেশনের মাধ্যমে সম্ভাব্য সমাধানসূত্র তুলে ধরছেন৷ নেদারল্যান্ডসের সাইকেলবান্ধব অবকাঠামো তাকে প্রেরণা দিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/44sz0
Schnee in Niederlande
প্রতীকী ছবিছবি: Nicolas Economou/NurPhoto/picture alliance

হামবুর্গের হোলস্টেনপ্লাৎস এলাকায় ভবিষ্যতে হয়ত কোনো গাড়িঘোড়া চলবে না৷ চারিদিকে সবুজের সমারোহ থাকবে৷ পথচারী ও সাইকেল-চালকদের জন্য সেটা হবে এক স্বর্গীয় অনুভূতি৷

কিন্তু বাস্তবে অবস্থা এখনো বদলায়নি৷ শহরের গ্রাফিক ডিজাইনার ইয়ান কামেনস্কির সেটা মোটেই পছন্দ নয়৷ তিনি রাজপথে মৌলিক পরিবর্তন চান৷ সেই তাগিদ থেকে তিনি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে কাল্পনিক জগত সৃষ্টি করেন৷ ইয়ান জানালেন, ‘‘করোনা সংকটের শুরুতে এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল৷ চারিদিকে নজর দিয়ে ভেবেছিলাম, আমি আর অত্যন্ত জরুরি পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করবো না, বরং নিজেই একটা অবদান রাখবো৷ ভিসুয়াল আর্টিস্ট হিসেবে শহরে পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে মনোযোগ দিলাম৷''

ইয়ান গোটা বিশ্বে ধূসর সড়ক ও বিষাদময় চত্বরে পরিবর্তন আনতে চান৷ কমপক্ষে্ অ্যানিমেশনের মাধ্যমে সেই সম্ভাবনা তুলে ধরতে চান তিনি৷ যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহর, বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস অথবা জার্মানির রাজধানী বার্লিন৷

একাধিক সামাজিক মাধ্যমে তিনি ‘ইউটোপিয়া ফর বাইসাইক্লিস্টস' নামের চ্যানেলও চালু করেছেন৷ ইয়ান কামেনস্কি ‘‘সাইকেলের জন্য আরও জায়গা এবং আরও সাইকেলের প্রয়োজন, যাতে সাইকেলের মাহাত্ম পুরোপুরি স্পষ্ট হয়৷ সাইকেল কার্বন নির্গমন ঘটায় না, অন্যান্য যানের তুলনায় কম জায়গা নেয় এবং নানাভাবে এটি কাজে লাগানো যায়৷''

জার্মানির প্রতিবেশী দেশ নেদারল্যান্ডসে ইয়ান কামেনস্কির স্বপ্ন আংশিকভাবে বাস্তব হয়ে উঠেছে৷ যেমন সে দেশের চতুর্থ বৃহত্তম শহর উটরেখটে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার,  অর্থাৎ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ সাইকেল চালান৷ খারাপ আবহওয়াও তাদের দমিয়ে রাখতে পারে না৷

ক্রিস ব্রুন্টলেট সে কারণে অত্যন্ত খুশি৷ যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি ‘ডাচ সাইক্লিং এম্ব্যাসি' নামের এক নেটওয়ার্ক চালান৷ সেটি আরও বেশি সাইকেলের জন্য আন্দোলন করছে৷ নেদারল্যান্ডসের সবচেয়ে ব্যস্ত সাইকেল সড়ক ‘ফ্রেডেনবুর্গ'-এ তিনি সাইকেল চালাতে খুব ভালোবাসেন৷ দিনে প্রায় ৩৩,০০০ মানুষ সেই সড়ক ব্যবহার করেন৷ অতীতে সেখানে গাড়ির আধিপত্য ছিল৷ ক্রিস বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত অনেক শহরে সাইক্লিং শুধু শক্তপোক্ত, সাহসি ও ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ৷ তারা মোটরগাড়ির সঙ্গে টক্কর দিতে পারেন৷ তবে শহরে এমন মানুষ মোটেই সংখ্যাগুরু নয়৷ তারা সচল থাকতে চায়, যাত্রা উপভোগ করতে চায়৷ সাইক্লিংয়ের জন্য নিরাপদ ও পৃথক জায়গা দিলে মানুষ আরও ঘনঘন সাইকেল চালাবে৷ আরও বেশি নারী, শিশু, বয়স্ক মানুষ, এমনকি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অনেকে এই যান বেছে নেবেন৷''

নেদারল্যান্ডস ইতোমধ্যে সাইকেলের জন্য বাস্তব সমাধানসূত্র কার্যকর করে সবার নজর কাড়ছে৷ এমন সাইকেল-বান্ধব দেশ খুব কমই আছে৷ শহরের বাসিন্দাদের মতে, শহরের মধ্যে সাইকেল চালানো অনেক সুবিধাজনক৷ আরও দ্রুত ও আনন্দের সঙ্গে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়৷

ইয়ান হামবুর্গেও এমন অবস্থার স্বপ্ন দেখেন৷ তিনি কমপক্ষে বিষয়টি নিয়ে তর্কবিতর্ক শুরু করতে চান৷ তিনি বলেন, ‘‘আগে থেকেই বিষয়টি উত্থাপন করে আমি আলোচনা শুরু করতে চাই৷ অর্থাৎ কোনো না কোনোভাবে বিষয়টি নিয়ে সংঘাত উসকে দিচ্ছি৷''

ইয়ান কামেনস্কি তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত করতে চান৷ প্যারিসের মতো শহরও অদূর ভবিষ্যতে তাঁর স্বপ্ন পূরণ করে সাইকেলবান্ধব শহরে পরিণত হবে, এটা জেনে তিনি নিজের শহর হামবুর্গেও এমন পরিবর্তনের আশা করছেন৷

মারিনা স্ট্রাউস/এসবি