শরণার্থীদের পানিতে ফেলে দিল পাচারকারীরা!
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ মাইগ্রেশন আইওএম বলছে, ইয়েমেনের কাছে ৫০ জন শরণার্থীর সলিল সমাধি ঘটেছে৷ নিখোঁজ আরও একশ’ জন৷ পাচারকারীরা ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের পানিতে ফেলে দিয়েছে৷ এরা সোমালিয়া এবং ইথিওপিয়ার অধিবাসী৷
মাত্র ২৪ ঘণ্টায় দু’টি অমানবিক ঘটনা
বুধবার ইয়েমের উপকূলে ১২০ জন শরণার্থীকে নৌকা থেকে পানিতে ফেলে দিয়েছিল মানব পাচারকারীরা৷ তাঁদের মধ্যে ৫০ জন প্রাণ হারিয়েছে বলে আইওএম-এর ধারণা৷ এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই আবারও ১৮০ জন শরণার্থীর সঙ্গে ঘটল একই ঘটনা৷ এই ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ ৫০ জন৷
আহতদের চিকিৎসা
লোহিত সাগরের তীরে ইয়েমেন সৈকতে আহত ২৫ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে৷ এদের বেশিরভাগই সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ার হলেও নিহতদের সবার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা৷
১২০ জন এক নৌকায়
বুধবার ইয়েমেন উপকূলে ১২০ জন শরণার্থীকে একটি নৌকায় করে নিয়ে আসছিল পাচারকারীরা৷ যাদের বেশিরভাই কিশোর কিশোরী৷ নৌকা ভেড়ানোর আগেই নৌকা থেকে কয়েকজনকে পানিতে ফেলে দেয় তারা৷ ডুবে যাওয়ার পর ২৯ টি মরদেহ সেখানেই সমাহিত করেছে বেঁচে যাওয়া শরণার্থীরা৷ জানিয়েছে আরও ২২ জন এখনো নিখোঁজ৷
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা
জাতিসংঘে ইয়েমেন মিশনের প্রধান জানিয়েছেন, যারা বেঁচে গেছে সেইসব শরণার্থী তাদের জানিয়েছে, উপকূলের কাছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মত কাউকে আসতে দেখে পানিতে ধাক্কা দিয়ে তাদের ফেলে দেয় পাচারকারীরা৷ তারা আরও জানিয়েছে, যেহেতু তাদের ব্যবসাই এটা৷ তাই আরও শরণার্থীদের আনতে তাদের ফেলে ঐ পাচারকারী সোমালিয়া ও ইথিওপিয়া রওনা হয়েছিল৷ বেঁচে যাওয়া ২৭ জনকে ত্রাণ দিচ্ছে আইওএম৷ বাকিরা নিজেদের গন্তব্যে রওনা দিয়েছে৷
চরম দুর্ভিক্ষ ও জরুরি অবস্থা
সোমালিয়ায় চরম দুর্ভিক্ষ এবং সংঘাতের কারণে অনেক মানুষ দেশ ছাড়ছে৷ ইথিওপিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের কারণের জরুরি অবস্থা চলছে ১০ মাস ধরে৷ তাই ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না অনেক এলাকায়৷ আর এ কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে ঐ দেশের মানুষ৷
ধনী দেশের উদ্দেশে দেশ ছাড়া
আইওএম-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অন্তত ৫৫ হাজার মানুষ সোমালিয়া ও ইথিওপিয়া থেকে ইয়েমেন হয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোর পথে যাত্রা করেছে৷ যাদের বেশিরভাগই কিশোর-কিশোরী৷
ট্রানজিট ইয়েমেন
গত বছর ইয়েমেন উপকূলে পৌঁছেছে ১ লাখ সাড়ে ১১ হাজার মানুষ৷ ইয়েমেনে চলমান গৃহযুদ্ধে এ পর্যন্ত ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ তাই উন্নত দেশগুলোতে পাড়ি দিতে এটিকেই ট্রানজিট হিসেবে বেছে নিয়েছে পাচারকারীরা৷