1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শরণার্থী সংকট কাটাতে প্রস্তাব

২০ জুন ২০১৮

ইউরোপে শরণার্থী সংকট সামাল দিতে সামগ্রিক সমাধানসূত্র তুলে ধরলেন ফ্রান্স ও জার্মানির শীর্ষ নেতারা৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রস্তাবও তাতে স্থান পেয়েছে৷ এভাবে জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল তাঁর সরকারের রাজনৈতিক সংকটও মেটাতে চান৷

https://p.dw.com/p/2zt9I
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ছবি: Reuters/Bundesregierung

শরণার্থী নীতিকে কেন্দ্র করে দেশের মধ্যে কোণঠাসা ম্যার্কেল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ'র সমর্থন পেয়ে কিছুটা আশ্বস্ত হলেন৷ মঙ্গলবার বার্লিনের উপকণ্ঠে শীর্ষ বৈঠকের পর মাক্রোঁ বলেন, শরণার্থীরা ইউরোপের যে দেশে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে, যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের সেখানে ফেরত পাঠাতে হবে৷ এই লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক সমাধানসূত্র খুঁজে বের করতে হবে৷ মাক্রোঁ এ ক্ষেত্রে ম্যার্কেলের সঙ্গে কাজ করতে চান৷ অর্থাৎ, শরণার্থী নীতির প্রশ্নে ম্যার্কেল একতরফা পদক্ষেপের বদলে ইউরোপীয় স্তরে সমাধানসূত্রের যে উদ্যোগ নিচ্ছেন, সেই অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানালেন মাক্রোঁ৷

ম্যার্কেল বলেন, মাক্রোঁ ও তিনি ইউরোপে আরও বিভাজন চান না৷ তাঁদের মতে, ইউরোপীয় সংকটের মুখে বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপের বদলে সাধারণ সমাধানসূত্র প্রয়োজন৷ তা না হলে শেঙেন চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এবং তার ফলে ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে উন্মুক্ত সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাবে৷ তবে মাক্রোঁ ও ম্যার্কেল ইউরোপীয় চুক্তি অমান্য করে দায়িত্ব এড়িয়ে শরণার্থীদের অন্য দেশে ঠেলে দেবার প্রথার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর৷ অর্থাৎ, এক দেশে শরণার্থীরা নথিভুক্ত হবার পর তাঁদের সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে চলে যেতে দেওয়া হবে না৷ উল্লেখ্য, এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে জার্মানির জোট সরকারের মধ্যে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ বাভেরিয়ার সিএসইউ দল ইউরোপীয় বা দ্বিপাক্ষিক সমাধানসূত্রের জন্য অপেক্ষা না করে অবিলন্বে একক পদক্ষেপ নিতে চায়৷ আপাতত তারা ম্যার্কেলকে দুই সপ্তাহ সময় দিতে রাজি হয়েছে৷ এই সময়কালে ম্যার্কেল বিকল্প সমাধানসূত্র না পেলে জুলাই মাসে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে৷

ইউরোপীয় পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক ইউরোপের বাইরে শরণার্থী শিবির গড়ে তোলার যে প্রস্তাব দিয়েছেন, ম্যার্কেল সে বিষয়ে আলোচনা করতেও প্রস্তুত৷ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংগঠন আইওএম-এর সঙ্গে যৌথভাবে এমন শিবির পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছেন টুস্ক৷ তাঁর মতে, এমন কেন্দ্রে প্রকৃত শরণার্থী ও অর্থনৈতিক শরণার্থীদের দ্রুত আলাদা করা সম্ভব হবে৷ বিপজ্জনক পথে ইউরোপে অনুপ্রবেশের বদলে আইনি পথে শরণার্থীদের এমন কেন্দ্রে যেতে উৎসাহ দেওয়া হবে৷ এখনো পর্যন্ত কোনো দেশের নাম প্রস্তাব না করা হলেও লিবিয়া ও আলবেনিয়ায় এমন কেন্দ্র গড়ে তোলার সম্ভাবনা আলোচিত হচ্ছে৷ আগামী ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে এই প্রস্তাবের খসড়া পেশ করা হবে৷ বেআইনি অনুপ্রবেশ রুখতে ম্যার্কেল সেই সঙ্গে আইনি পথে শরণার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণ বা উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থার পক্ষেও সওয়াল করেছেন৷

মাক্রোঁ ও ম্যার্কেল এই প্রসঙ্গে ইউরোপ জুড়ে শরণার্থী গ্রহণের একক মানদণ্ডের উপর জোর দিয়েছেন৷ এই লক্ষ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য এক ইউরোপীয় এজেন্সি বিভিন্ন দেশের আইনের মধ্যে সমন্বয় করবে৷ যেসব দেশে শরণার্থীদের আগমন ঘটে, তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রস্তাব দিয়েছেন দুই নেতা৷ তাঁদের প্রস্তাবিত সার্বিক সমাধানসূত্রের আওতায় ইউরোপের বহির্সীমানা সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্সকে আরও শক্তিশালী করে তোলা হবে৷ তাছাড়া যেসব দেশ থেকে শরণার্থীরা আসছেন, সেই সব দেশের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করার চেষ্টা চালানো হবে৷

বলা বাহুল্য, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এত বড় আকারের পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে না৷ তবে শরণার্থী সংকটের সমাধান করতে আগামী সপ্তাহে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনেই এসব প্রক্রিয়া শুরু করতে চান ম্যার্কেল ও মাক্রোঁ৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)