ল্যাবরেটরিতে হীরা তৈরি হচ্ছে
১০ মে ২০২১এখন ল্যাবরেটরিতে হীরা তৈরি সম্ভব হচ্ছে বলে কয়েক দশকের মধ্যে এর দামও নাগালের মধ্যে চলে আসতে পারে৷
ভূপৃষ্ঠ থেকে দেড়শ কিলোমিটারেরও বেশি গভীরে হীরা পাওয়া যায়, যেখানে তাপমাত্রা ৮০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকে৷
হীরা খাতের বিশ্লেষক পাউল জিমনিসকি বলছেন, বিজ্ঞানীরা ল্যাবে হীরা তৈরি করতে পারেন৷ গত শতকের ৫০-৬০ এর দশক থেকে হীরা তৈরির প্রযুক্তি বিদ্যমান৷ তবে অনেকদিন ধরে শুধু শিল্পখাতে ব্যবহারের জন্য ছোট দানার মতো হীরা তৈরি করা যেতো৷ ‘‘চার-পাঁচ বছর আগে হীরা তৈরির প্রযুক্তিতে উন্নতি আসে৷ ফলে এখন জেম-কোয়ালিটির হীরা তৈরি সম্ভব হচ্ছে৷ এর মান এত ভালো যে অলংকার হিসেবে ব্যবহার করা যায়,'' জানান তিনি৷
এদিকে, হীরা ব্যবসায়ী এএলটিআর ইনকর্পোরেশনের প্রেসিডেন্ট আমিশ শাহ বলছেন, ল্যাবে তৈরি হীরা খনির হীরার মতোই হয়ে থাকে৷
এবং এই হীরার গুন এত ভালো হচ্ছে, আর এত দ্রুত তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে যে, ভবিষ্যতে হয়ত আঙুলের চেয়ে হাতেই হীরা বেশি থাকবে৷
আমিশ শাহ আরো বলছেন, হীরা কখনোই মূল্যবান ছিল না৷ হীরার বিরলতার বিষয়টি একটা মিথ৷
বর্তমানে হীরাকে আর বিরল পদার্থ মনে করা হয় না৷ তবে হীরার যে বিশেষ গুণ আছে, সেটা বিরল৷
হীরা শুধু কার্বন দিয়ে তৈরি, তবে এর পরমাণুগুলো একটি ক্রিস্টাল স্ট্রাকচারে শক্তভাবে লেগে থাকে৷
সেকারণে এটি পৃথিবীর অন্যতম শক্ত ও বিদ্যুৎ পরিবাহী উপাদান এবং প্রকৌশলীদের কাছে বিস্ময়কর এক উপাদান৷
হীরা স্ক্রিনকে আরও প্রতিরোধী করতে পারে, সোলার প্যানেলকে আরও কার্যকর, লেজারকে আরও শক্তিশালী, হার্ড ড্রাইভকে আরও ছোট করতে পারে-- এবং আরো ভালো মানের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস তৈরি করতে পারে৷
ভালো সেমিকন্ডাক্টরকে অবশ্যই উচ্চ ভোল্টেজ ও তাপমাত্রা প্রতিরোধী হতে হবে৷ বর্তমানে সেগুলোর বেশিরভাগই সিলিকন দিয়ে তৈরি৷
হীরার তাপ পরিবাহী ক্ষমতা ১৪ গুণ বেশি... আর বিদ্যুৎ প্রতিরোধী ক্ষমতা বেশি ৩০ গুণ৷
পাউল জিমনিসকি মনে করেন, ‘‘আমরা হয়ত এখনও কয়েক দশক দূরে আছি, কিন্তু আমার মনে হয় একসময় আমরা প্রতিদিন ব্যবহারের অনেক জিনিসের মধ্যেই হীরা দেখতে পাব৷''
আমরা হয়ত কখনো হীরার মেন্যু পাবো না, উচ্চ-প্রযুক্তির অ্যাপ্লিকেশন তৈরি হতেও হয়ত আরো সময় লাগবে৷
ক্রিস্টিয়ান কাউরিয়া/জেডএইচ