1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্কার্টের নীচের ছবি তোলা অপরাধ নয়?

২৮ আগস্ট ২০১৯

ইউরোপের বেশ কিছু দেশের মতো জার্মানিতেও আইনের ফাঁক গলে এই অপকর্ম করে চলেছেন কিছু ব্যক্তি৷ ফলে লুকিয়ে মেয়েদের স্কার্টের নীচের ছবি তুললেও তাদের শাস্তি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ দুই নারী এর বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছেন৷

https://p.dw.com/p/3ObnZ
ছবি: picture-alliance/Captital Pictures/R. Gold

এর আগে মাদ্রিদে ৫৩ বছর বয়সি এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাড়ে পাঁচশো নারীর ‘আপস্কার্ট' ছবি তোলার অভিযোগ উঠেছিল৷ গত বছর আপস্কার্টিংকে আইনের আওতায় আনার জন্য ব্রিটিশ সংসদে তুমুল তর্ক-বিতর্কের পর নতুন আইন পাস হয়৷ কিন্তু তারপরও এখনও জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় না

জার্মানির দুই নারী- ২৫ বছরের ইডা মারি সাসেনব্যার্গ এবং ২৮ বছর বয়সি হান্না সাইডেল-- সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চান৷ ডয়চে ভেলেকে সাইডেল বলেন, ‘‘আপস্কার্টিং-এর সবচেয়ে জঘন্য ব্যাপার হলো আপনি জানতেও পারবেন না যে এমন একটি ঘটনা ঘটে গেছে৷ আপনি হয়তো চলন্ত সিঁড়িতে, সুপারমার্কেটে, মেট্রোতে বা কনসার্টে দাঁড়িয়ে আছেন, এমন সময় কেউ একজন ছবি তুলে ফেললো৷ এই ছবিগুলো কী কাজে ব্যবহার করা হবে, তাও আপনি জানেন না৷ হয়তো কোনো পর্ন সাইটে তা আপলোড করা হবে৷''

সাইডেল নিজেই প্রথম এমন ঘটনার শিকার হন মাত্র ১৩ বছর বয়সে৷ অন্য এক স্কুলের শিক্ষক একটি শিক্ষাসফরের সময় তার আপস্কার্ট ছবি তোলেন৷ ১৬ বছর বয়সে এক অপরিচিত ব্যক্তি তার আপস্কার্ট ছবি তুলে ভিড়ের মধ্যে পালিয়ে যান৷ এসব ঘটনা তাঁর মনে গভীর প্রভাব ফেলে৷

জার্মান আইনের ফাঁক

দুই নারীর করা পিটিশনের ফলে এ নিয়ে বড় ধরনের আইনি বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷ আইনজীবী ক্রিস্টিয়ান সলমেকে বলছেন, জার্মান দণ্ডবিধির ১৮৪-আই অনুচ্ছেদ অনুসারে যৌন হয়রানির বিচারের কথা বলা হয়েছে৷ অনুচ্ছেদটি অপেক্ষাকৃত নতুন৷ ২০১৬ সালে জার্মানির কোলন শহরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে এক রাতে শত শত যৌন হয়রানির ঘটনার পর দণ্ডবিধি সংশোধন করে এ অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়৷

কিন্তু এই আইনেও ফাঁক রয়েছে৷ এর মাধ্যমে কেবল কেউ শরীর স্পর্শ করার চেষ্টা করলেই বিচার করা সম্ভব৷ আপস্কার্টিং ঠিক এই সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না

২০১৪ সালে আরেকটি সংশোধন হয়েছিল৷ সেখানে স্পর্শকাতর অঙ্গের ছবি তোলা ও বিতরণের জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়৷ কিন্তু সেটা শুধু টয়লেট বা বেডরুমের মতো একান্ত ব্যক্তিগত স্থানের জন্য প্রযোজ্য৷ ফলে প্রকাশ্যে উন্মুক্ত স্থানে কেউ এমন ছবি তুললে, এই আইনেও তাকে সাজা দেয়া অসম্ভব৷

সলমেকে জার্মানির স্ট্যার্ন টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাভারিয়া রাজ্যের ছোট এক শহরের মেয়রের উদাহরণ তুলে ধরেন৷ তিনি মেয়র থাকাকালেই চলন্ত সিঁড়িতে মেয়েদের আপস্কার্ট ছবি তুলতেন৷ পরবর্তীতে তার কাছে থাকা এমন শতাধিক ছবি উদ্ধার করে পুলিশ৷ কিন্তু শাস্তি হিসেবে ‘জনগণকে বিরক্ত' করার অপরাধে তার কেবল ৭৫০ ইউরো জরিমানা হয়েছিল৷

অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের মতো কিছু দেশে আপস্কার্টিং-এর বিরুদ্ধে কড়া আইন রয়েছে৷ এক অনলাইন পিটিশনের ফলে এ বছরের শুরুতে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসও আইনে পরিবর্তন আনে৷ ফলে আপস্কার্টিং-এর সাজা হতে পারে দুই বছরের কারাদণ্ড

মূলত ইংল্যান্ডের ঘটনাটিই নাড়া দিয়েছে সাসেনব্যার্গ ও সাইডেলকে৷ তাঁরাও ইংল্যান্ডের ২৭ বছর বয়সি জিনা মার্টিনের আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে জার্মানিতে একটি পিটিশন শুরু করেছেন৷ এরই মধ্যে তাঁদের পিটিশনে প্রায় ৯০ হাজার ব্যক্তি স্বাক্ষরও করেছেন৷ ‘অবস্থার পরিবর্তনে আরো বেশি জনগণকে আমাদের পাশে দরকার', বলছিলেন সাসেনব্যার্গ ও সাইডেল৷

ভিক্টর ভাইৎস, ইউলিয়া লাসিকা/এডিকে/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য