1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘লিভিং স্ট্যাচু' প্রতিযোগিতা

ইয়ানা ওরটেল/এসবি৮ জানুয়ারি ২০১৫

ছোটবেলায় অনেকেই ‘স্ট্যাচু-স্ট্যাচু' খেলা খেলেছেন৷ কিন্তু শখ বা পেশার কারণে পথের মাঝে স্থির হয়ে থাকার কথা ভেবেছেন কি? বিশ্বের অনেক দেশে অনেকে ‘লিভিং স্ট্যাচু' হিসেবে জনপ্রিয় স্থানে দাঁড়িয়ে থাকেন, নানা অঙ্গভঙ্গি করেন৷

https://p.dw.com/p/1EGVf
World Statues Festival 2013 in Arnheim Jan Eissens
ছবি: DW/C. Nasman

স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, তারপর সবাইকে অবাক করে আচমকা নড়ে ওঠা৷ এটাই হলো জীবন্ত মূর্তির ‘আর্ট'৷ নেদারল্যান্ডস-এর আর্নেম শহরে তাদেরই বিশ্ব প্রতিযোগিতায় ২৪টি দেশের আর্টিস্টরা জুরি ও সাধারণ মানুষের মন জয় করতে আসেন৷ দিনের শেষে তিনটি সেরা পুরস্কার বিতরণ করা হয়৷

বেলজিয়ামের পাট্রিক ফান হর্নে-ও এই উৎসবে অংশ নিচ্ছেন৷ বছরে তিনি প্রায় ৫০ বার পেশাদারি ‘লিভিং স্ট্যাচু' হিসেবে কাজ করেন৷ চলতি বছরই তিনি বেলজিয়ামে ‘লিভিং স্ট্যাচু' প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছেন৷ এই নিয়ে দ্বিতীয় বার আর্নেম শহরের বিশ্ব প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন তিনি৷ পাট্রিক বলেন, ‘‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমি নিজের কস্টিউম তৈরি করি৷ তবে এটা এত কঠিন, যে সেটি তৈরি করাতে হয়েছে৷''

ড্রেসিং রুমে শুধু পরিচিতদের দেখা পাওয়া যায় না, প্রতিযোগীদের সম্পর্কেও প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়৷ যেমন এই দম্পতি বিখ্যাত ওলন্দাজ নীল চীনামাটির তৈরি মূর্তি তুলে ধরতে চান৷ হ্যারমিন ফান ডেয়ার বুরখট বলেন, ‘‘সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো ভালো আইডিয়া পাওয়া, বিশেষ করে প্রতিযোগিতার জন্য নতুন অনবদ্য আইডিয়া স্থির করা৷''

ব্রিটেনের প্রতিযোগী এড্রিয়ান সাউথ তাঁর কস্টিউম দিয়ে নিজেকে পুরোপুরি ক্যামোফ্লাজ করে ফেলতে চান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাকে না দেখেই মানুষ পাশ দিয়ে চলে যায়৷ ব্যাপারটা দারুণ৷ তাই আমি নড়ে উঠলে সবাই অবাক হয়ে যায়৷''

Luigi Peduto Gedenken an Liebe zu Mokryna Urzuk
সাধারণ মানুষের মন জয় হয়ছবি: DW

পাট্রিক ফান হর্নে-কেও এবার মেকআপ নিতে হবে৷ তিনি নিজেকে একেবারে কাঠের মানুষ হিসেবে দেখাতে চান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি ঠিক জিততে আসিনি, সুন্দর একটা দিন উপভোগ করতে এসেছি৷''

চুলের স্প্রে দিয়ে মেক আপ শেষ৷ এবার কস্টিউমে ঢুকতে হবে৷ নীচের অংশ ফোম দিয়ে তৈরি৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে কাঠের মূর্তির মতো দেখতে লাগে৷ কোনো দর্শক পয়সা দিলেই পাট্রিক নড়ে ওঠেন৷ একজন বললেন, দেখলে মনে হয় সত্যি কাঠের তৈরি৷ মাথাটাও যেন মেহগনি কাঠের মতো চকচকে৷ দারুণ দেখতে লাগছে৷ আরেকজন বললেন, নীচের লেখাটা দেখলে আমার হাসি পায়৷ ‘উড' মানে কাঠ, পড়াই যায়৷

‘লিভিং স্ট্যাচু' হিসেবে সঠিক ছন্দ নির্ণয় করা অত্যন্ত জরুরি৷ কখন স্থির থাকতে হয়, কখন দর্শকদের সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান করতে হয়, সেটা জানতে হবে৷ পাট্রিক শুধু তাঁর দর্শকদের মনোরঞ্জন করেন না, কখনো কখনো তাঁরাও পাট্রিক-কে অবাক করে দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘একবার এক বৃদ্ধা আমার কাছে এসে আবেগের বশে কাঁদতে শুরু করলেন৷ ব্যাপারটা সুন্দর লাগছে বলে তারপর তিনি আমাকে আলিঙ্গন করলেন৷ একই অনুষ্ঠানে একজন প্রবল উৎসাহে আমার দাঁড়াবার জায়গার ছবি তুলে যাচ্ছিলেন৷ অথচ আমি তখন তার মধ্যে ছিলামই না, বাইরে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম৷''

‘লিভিং স্ট্যাচু' বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় ৩ সদস্যের এক জুরিমণ্ডলী রয়েছে৷ তাঁরা প্রত্যেক প্রতিযোগীদের পয়েন্ট দেন৷ দর্শকদের ঝুলিতে রয়েছে ৫০ শতাংশ ভোট৷ কোনটা ‘লিভিং স্ট্যাচু', কোনটা নয় – এ নিয়ে কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই৷ পুরস্কার বিতরণীর আগে সব ‘লিভিং স্ট্যাচু'-দের মঞ্চে আসতে বলা হচ্ছে৷ তারপর জানা গেল, পাট্রিক ফান হর্নে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন৷ প্রথম স্থান পেয়েছে নেদারল্যান্ডস-এরই একটি গ্রুপ, যার নাম ‘অ্যাশটনিশমেন্ট' বা বিস্ময়৷

যাঁরা এমনিতে স্থির থাকেন, এমন এক মুহূর্তে তাঁরা আবেগে অস্থির হয়ে ওঠেন৷ পুরস্কার হিসেবে পাট্রিক পেলেন ১,০০০ ইউরো৷ এক দিন স্থির থাকার ফল পেলেন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য