লিবিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় অভিবাসনপ্রত্যাশী নিহত, বাড়ছে ক্ষোভ, আতঙ্ক

এক সপ্তাহ আগে রা্জধানী ত্রিপোলির বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করে লিবিয়ার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷ অভিযানে পাঁচ হাজারেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়৷

পাঁচ হাজারেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রাখায় ত্রিপোলির কারাগারে ভিড় অত্যন্ত বেড়ে যায়৷ শুক্রবার ব্যাপক হাঙ্গামা শুরু হয়ে যায় সেখানে ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালালে অন্তত ছয়জন অভিবাসনপ্রত্যাশী নিহত হয় বলে জাতিসংঘের অভিবাসন সংক্রান্ত সংস্থা আইওএম জানায়৷

অতিরিক্ত ভিড়ে গোলযোগ বেধে গেলে এক সুযোগে অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশী কারাগার থেকে পালিয়ে যায়৷ পরে অভিযান চালিয়ে তাদের অনেককে আবার আটক করে পুলিশ৷

রবিবার ত্রিপোলির জাতিসংঘ কেন্দ্রের সামনে শত শত অভিবাসনপ্রত্যাশী ভিড় জমান৷ তাদের অনেকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যান্ডেজ বা আঘাতের চিহ্ন ছিল৷

লিবিয়া হয়ে ইউরোপে প্রবেশের উদ্দেশ্যে ত্রিপোলিতে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েক হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী৷ তাদের একজন মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বললেন, ‘‘অভিবাসনের আশায় দেশ ছেড়েছি- শুধু এটাই আমাদের অপরাধ৷ অপরাধীদের মতো আচরণ করা হচ্ছে আমাদের সঙ্গে৷’’ সুদান থেকে আসা ২৫ বছর বয়সি আব্দুল্লাহর দাবি, লিবিয়ায় এ পর্যন্ত পাঁচ জায়গায় বন্দি করা হয়েছে তাকে এবং প্রত্যেক জায়গাতেই তার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে৷

তিন বছর আগে সুদান থেকে লিবিয়ায় গেছেন নাদিয়া আব্দেল রহমান৷ স্বামী, দুই সন্তান, বোন, দুলাভাই এবং এক ভাগ্নিও ছিল তার সঙ্গে৷ কিন্তু দুর্বৃত্তরা তার স্বামীকে আটক করে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে৷ সেই টাকা দেয়ার পরও স্বামীকে মেরে ফেলা হয়৷ দুলাভাই মারা যান ভূমধ্যসাগরে ডুবে৷এখন নাদিয়ার একটাই কথা, ‘‘যে-কোনো উপায়ে আমরা লিবিয়া ছাড়তে চাই৷’’

জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলেছে, ত্রিপোলির জাতিসংঘ কেন্দ্রের সামনে ভিড় করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত তারা৷ তবে যাদের অবস্থা বেশি খারাপ, সহযোগিতার হাত তাদের দিকেই আগে বাড়ানো উচিত বলে মনে করে তারা৷ তাই অগ্রাধিকার তালিকায় কাদের রাখা যেতে পারে তা চিহ্নিত করার জন্য জাতিসংঘ কেন্দ্রের সামনের ভিড় কমানোর আহ্বান জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর৷