1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাদাখ নিয়ে অনড় মনোভাব ভারত ও চীনের

১ সেপ্টেম্বর ২০২০

ফের উত্তপ্ত লাদাখ। ভারত এবং চীনের মধ্যে নতুন করে কথার লড়াই শুরু হয়েছে। লাদাখে সৈন্য বাড়াচ্ছে ভারত।

https://p.dw.com/p/3hq4i
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Swarup

লাদাখ নিয়ে ফের সুর চড়ালো ভারত এবং চীন। ২৯ অগাস্ট রাত থেকে ৩০ অগাস্ট ভোর পর্যন্ত নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে প্যাংগং লেক অঞ্চলে। সোমবার এ বিষয়ে বিবৃতি জারি করেছিল ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সোমবার রাতে চীনও বিবৃতি জারি করে বলেছে, ভারত স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করেছে।

ঠিক কী ঘটেছিল ২৯ রাত থেকে ৩০ ভোর পর্যন্ত, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ভারত দাবি করেছে, প্যাংগং লেকের দক্ষিণ ভাগে চীনের সেনা দেখতে পেয়ে ভারতীয় জওয়ানরা সেখানে উপস্থিত হয় এবং তাদের পিছু হঠতে বাধ্য করে। অন্য দিকে চীনের দাবি, ভারত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার স্থিতাবস্থা ভেঙে তাদের এলাকার মধ্যে ঢুকে পড়েছিল। সে কারণেই দুই সেনার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেনার একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্যাংগংয়ের দক্ষিণ প্রান্তে একটি পাহাড়ের উপর নিজেদের দখল কায়েম করেছে ভারত। স্ট্র্যাটেজিক সেই জায়গাটি নিয়েই দুই দেশের সেনার মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।

লাদাখে ব্যস্ত যুদ্ধবিমান

ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রকের একটি সূত্রের বক্তব্য, এত দিন প্যাংগংয়ের উত্তর প্রান্ত নিয়ে ভারত এবং চীনের মধ্যে বিতর্ক ছিল। এ বার দক্ষিণ প্রান্তে সংঘাত তৈরি করে ভারতীয় সেনার দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে চীন।

দুই দেশ দুই দেশের মতো করে যুক্তি সাজাচ্ছে। তবে ১৫ জুন গালওয়ানের সংঘাতের পর গত কয়েক মাসে ২৯ এবং ৩০ অগাস্টের সংঘাতই সব চেয়ে বড়। এবং এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে নতুন করে কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হয়েছে। একদিকে চীন যেমন বিবৃতি দিয়ে ভারতের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছে। অন্য দিকে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করও চীনকে বেশ চড়া সুরে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে ভারত কেবল জবাব দিতে জানে তাই নয়, ইটের বদলে পাটকেলও ছুড়তে জানে। অর্থাৎ, ভারতীয় সেনাও যে আক্রমণাত্মক হতে পারে, সে কথা প্রকারান্তরে বলার চেষ্টা করেছেন তিনি।

৩০ অগাস্টের পরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রক এবং গোয়েন্দা বিভাগও লাদাখ নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেছে। এক দিকে সামরিক বাহিনীর সমস্ত অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। অন্য দিকে এনএসএ অজিত ডোভাল গোয়েন্দা প্রধান এবং রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। আরও শীতের শেষ পর্যন্ত চীন সীমান্তে পর্যাপ্ত সৈন্য মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বস্তুত, অগাস্টের ঘটনার পর লাদাখে আরও সৈন্য মজুত করার পরিকল্পনাও হয়েছে।

এ দিকে সোমবার চুসুলে ভারত এবং চীনের সেনার মধ্যে যে ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছিল, তা ফলপ্রসূ হয়নি বলে খবর। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, লাদাখ সমস্যা সহজে মেটার নয়। দুই দেশই বুঝে গিয়েছে, এই পরিস্থিতি চলতে থাকবে। অতীতে ডোকলাম নিয়ে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ডোকলামের সঙ্গে এ বারের পরিস্থিতি তুলনীয় নয়। অনেকরই বক্তব্য, এ ভাবে ছোট ছোট ঘটনার মধ্য দিয়েই আপাতত দুই দেশ এগোবে। পাশাপাশি কূটনৈতিক আলোচনা চলতে থাকবে। তবে ছোট স্ফূলিঙ্গ থেকেও আগুন জ্বলার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। যদি তা হয়, তা হলে পরিস্থিতি যে কোনও সময় অন্য দিকে মোড় নিতে পারে বলে অনেকেরই আশঙ্কা।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)