1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাতিন অ্যামেরিকায় পুলিশি সহিংসতার নির্মম রূপ

১৩ অক্টোবর ২০২০

লাতিন অ্যামেরিকায় করোনার সংক্রমণ যত বাড়ছে, পুলিশি সহিংসতাও যেন পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে৷ পুলিশের হেফাজতে বা বিক্ষোভে প্রায়ই মারা যাচ্ছে সেখানকার মানুষ৷

https://p.dw.com/p/3jpXH
Proteste in Chile
ছবি: Chepa Beltran/UIG/Imago Images

চিলিতে সম্প্রতি স্বাস্থ্যসেবার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে এক কিশোরকে ব্রিজ থেকে ফেলে দেয়া হয়৷ গত বছরের শেষে শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের হাতে মারা গেছে অন্তত ৩০ জন বিক্ষোভকারী৷ বিক্ষোভের সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মুখ লক্ষ্য করেও রাবার বুলেট ছোঁড়ে৷ ফলে অনেকেই চোখে আঘাত পান৷

কলম্বিয়ায় সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে থানায় নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় আইনের ছাত্র হাভিয়ের অরদোনেজকে৷ করোনাকালে রাস্তায় মদ্যপান নিষিদ্ধ৷ অরদোনেজ রাস্তায় মদ খেয়ে করোনা বিধিনিষেধ ভেঙেছিলেন, এই অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল৷ এই ঘটনায় ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে৷ বিক্ষোভে পুলিশি হামলায় ১৩ জন মারা যান৷ সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পুলিশের গুলিতে নিহত হন এক তৃতীয় লিঙ্গের নারী৷

মেক্সিকোতে পুলিশি হেফাজতে নিহত হন ৩০ বছরের জিওভানি লোপেজ৷ মাস্ক না পরার কারণে আটক করা হয়েছিল তাকে৷ এই ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে মেক্সিকোর মানুষ৷ মেক্সিকো পুলিশ বন্দিদের যেভাবে নির্যাতন করে তা ভয়াবহ নৃশংস বলে গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে৷

চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনা পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল৷ অথচ লাতিন অ্যামেরিকায় পুলিশের নির্যাতন যেন কোনো ব্যাপারই নয়৷ মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মুখপাত্র ফার্নান্দা ডোজ কস্টা জানালেন, ‘‘কয়েকটি স্থানে সহিংসতার মাত্রা এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে৷''

ভেনেজুয়েলা এবং এল সালভাদরেও পুলিশের হাতে অনেক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে৷ ব্রাজিলও আছে তালিকার শীর্ষে৷ তবে এসব দেশে এসব ঘটনার রেকর্ড নথিভুক্ত না থাকায় প্রকৃত সংখ্যাটা আরো বেশি বলে মনে করেন কস্টা৷

তাঁর মতে, অনেক পুলিশের মধ্যে ৭০ থেকে ৯০ দশকের স্বৈরশাসনের বীজ গেঁথে আছে৷ যেমন, চিলির পুলিশের আচরণে ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৯ সালের পিনোশের স্বৈরশাসনের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়৷ এইসব পুলিশ বিক্ষোভকারীদের রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক মনে করে এবং যতই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হোক না কেন তাতে বাধা দেয়া উচিত বলে মনে করে৷

লাতিন অ্যামেরিকার বেশিরভাগ দেশে পুলিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে৷ ফলে তাদের প্রশিক্ষণও হয় ভিন্ন রকম৷ আর নির্যাতনে সেই প্রশিক্ষণের ছাপ লক্ষ্য করা যায়৷

বিশ্বের বিপজ্জনক শহরগুলোর তালিকায় শীর্ষে আছে লাতিন অ্যামেরিকার ৫০টি শহর৷ এছাড়া কোনো ব্যক্তি নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণ করার সুযোগও পান না অনেক ক্ষেত্রে, কেননা, কোনো কোনো এলাকায় পুলিশের নীতি ‘আগে গুলি করো, পরে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে৷'

কস্টা বলছেন, ‘‘লাতিন অ্যামেরিকায় পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা বরাবরই এরকম৷ আমাদের মানবিক পুলিশবাহিনী দরকার, যারা মানবাধিকারকে শ্রদ্ধা করবে৷ এমন পুলিশ দরকার নেই, যার কারণে আমার সন্তান কোনো বিক্ষোভে গিয়ে ফিরে আসবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কায় থাকতে হবে৷''

ইনেস আইসেলে/এপিবি