1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লকডাউনে কারা, কেন গ্রেপ্তার হচ্ছেন?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৯ জুলাই ২০২১

লকডাউনের প্রথম আট দিনে ঢাকায় পাঁচ হাজারের বেশি লোক গ্রেপ্তার হয়েছে৷ জরিমানা করা হয়েছে প্রায় সম পরিমাণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে৷ তারপরও মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন৷ আর যারা জরিমানার শিকার হচ্ছেন তাদের অধিকাংশই গরিব মানুষ৷

https://p.dw.com/p/3wGsh
Bangladesch Corona-Pandemie Lockdown Dhaka
ছবি: Mortuza Rashed/DW

গত ১ জুলাই থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে কঠোর লকডাউন শুরু হয়৷ শেষ হবে ১৪ জুলাই৷ করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এই কঠোর লকডাউনে যায় প্রশাসন৷ এরইমধ্যে ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু ২০০ ছাড়িয়েছে৷ এই পরস্থিতিতে টেকনিক্যাল কমিটি এই লকডাউনের পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ তারা নতুনভাবে কার্ফ্যু জারির সুপারিশ করেছে৷
লকডাউন কার্যকর করতে চার ধরনের আইন ব্যবহার করা হচ্ছে৷ সংক্রামক ব্যাধি আইন, মোটর যান আইন, ডিএমপি অ্যাক্ট এবং মোবাইল কোর্ট৷ সেনা, পুলিশ ও র‌্যাবের সাথে ৫০টিরও বেশি মোবাইল কোর্ট কাজ করছে৷ আর রাজধানীর প্রবেশ পথ ছাড়াও  শহর জুড়ে শতাধিক চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে৷
প্রথম আট দিনে লকডাউনের নির্দেশ অমান্য করে বাইরে বের হওয়ার অভিযোগে মোট চার হাজার ৩৬৭ জনকে জরিমানা করা হয়েছে৷ আটক করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৭৪ জনকে৷ এই সময়ে জরিমানা করা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা৷ শতাধিক প্রতিষ্ঠানকেও জরিমানা করা হয়েছে৷
যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই গরিব ও খেটে খাওয়া মানুষ৷ তারাও আদালত থেকে জরিমানা দিয়ে ছাড়া পাচ্ছেন৷ তাদেরকে আদালত সর্বোচ্চ ১০০ টাকা জরিমানা করছে৷
এই লকডাউনে জরুরি সেবা ও রিকশা চালু আছে৷ কিন্তু যারা শ্রমজীবী মানুষ দিন আনে দিন খান তাদের কোনো উপায় নেই৷ বিশেষ করে ভাসমান মানুষ এবং দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে যারা কাজ করেন তারা অসহায় অবস্থার মধ্যে আছেন৷ আর যারা ক্ষুদ্র ও ভাসমান দেকানদার তারাও বিপাকে আছেন৷ ৩৩৩-তেও ফোন করে তারা সহায়তা পাচ্ছেন না৷ আবার অনেকে জানেনই না যে ওই নাম্বারে ফোন করলে সহায়তা পাওয়া যায়৷ তারাই মূলত কাজের জন্য বা সহায়তার জন্য বাইরে বের হয়ে জরিমানা ও গ্রেপ্তারের মুখোমুখি হচ্ছেন৷ মানবাধিকার কর্মী নূর খান গত কয়েকদিন ধরে আদালত পাড়ায় যাচ্ছেন ওইসব মানুষের সাথে কথা বলতে৷ তিনি জানান," যারা আটক হচ্ছেন তাদের ৯৯ ভাগই গরিব মানুষ৷ দিন আনে দিন খায়৷ তারা পেটের দায়ে বের হন৷ তবে অসচেতন থাকায় অনেকেই মাস্ক পরেন না৷” তিনি অভিযোগ করেন," প্রত্যেক থানা এলাকায় কোটা দেয়া আছে৷ সেই গ্রেপ্তারের কোটা পূরণ করা হচ্ছে৷”
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদলতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু স্বীকার করেন, "যারা আটক হচেছন তাদের বড় একটি অংশ গরিব মানুষ৷ তবে এর বাইরেও আছেন৷ তারা আইন অমান্য করে নানা অজুহাতে বের হচ্ছেন৷ তাদের ডিএমপি অ্যাক্টে আটক করায় কারাগারে যেতে হচ্ছেনা৷ আদালত জরিমানা করে ছেড়ে দিচ্ছেন৷ তবে কেউ জরিমানা না দিতে পারলে কারাগারে যেতে হচ্ছে৷”
তবে তিনি অভিযোগ করেন," আটকদের প্রিজন ভ্যানে গাদাগাদি করে আদালতে নেয়া হচ্ছে৷ তাতে তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে৷ আমরাও বলেছি, আদালতও বলেছেন যে তাদের  প্রিজন ভ্যানে সামাজিক দূরত্ব মেনে আদালতে নিতে হবে৷”
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল  আউয়াল বলেন," যাদের আটক করা হচ্ছে তাদের বড় একটি অংশ মাস্ক না পরে বিনা কারণে বাইরে বের হন৷ এত কড়াকড়ির পরও তারা মাস্ক ব্যবহার করতে চাননা৷ সব শ্রেণির মানুষের মধ্যেই এই প্রবণতা৷ তাদের কোনো ভাবেই সচেতন করা যাচ্ছে না৷”
লকডাউনে মাদক:
করোনা এবং লকডাউনে ঢাকাসহ সারাদেশে মাদক ব্যবসা ও ব্যবহার বেড়ে গেছে৷ আর নতুন ধরনের মাদক ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে৷ সর্বশেষ ঢাকায় ‘ম্যাাজিক মাশরুম' নামে নতুন একটি মাদকসহ চক্রের সদস্য এবং ব্যবহারকারীদের আটক করেছে পুলিশ৷ পুলিশ জানায়, এখন মাদক ব্যবসায় অনলাইন ও কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করা হচ্ছে৷ এই ম্যাজিক মাশরুম দেশের বাইরে থেকে আনা হয়েছে৷ মাদক ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করছে৷ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক ডা. তাজুল ইসলাম বলেন,"করোনা ও লকডাউনকে মাদক ব্যবসায়ীরা একটা সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে৷ আর ঘরে থেকে অবসাদগ্রস্ত হয়ে তরুণরা নতুন করে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন৷”
তার কথা, এব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও পরিবারের সদস্যরা নজর না দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে৷

আব্দুল্লাহ আবু

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য