1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লংগুদুর পাহাড়িরা এখনো বিপন্ন, নিরাপত্তাহীন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ আগস্ট ২০১৭

বাংলাদেশের রঙামাটির লংগদুতে চার গ্রামে আগুন দিয়ে দুই শতাধিক বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়ার পর প্রায় তিন মাস কেটে গেলেও এর সঙ্গে কারা জড়িত তা জানা যায়নি৷

https://p.dw.com/p/2ihkq
Bangladesch Brandstiftung im Rangamati Distrikt
ছবি: Anvil Chakma

পুলিশ কেন নিষ্ক্রিয় ছিল? প্রশাসন কেন নির্লিপ্ত ছিল? এসব প্রশ্ন আইনজীবী এবং খাগড়াছড়ির বাসিন্দা নিকোলাস চাকমার৷ লংগদুতে তাঁর স্বজনরাও ওই হামলার শিকার হয়েছেন৷ ১২ জুন নিকোলাস চাকমা লংগদুতে পাহাড়িদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবিতে সরকারকে উকিল নোটিশ পাঠান৷ কিন্তু এর কোনো জবাব না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নিকোলাস চাকমাসহ ৯ জন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন৷ আর সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২১ আগস্ট সরকারের প্রতি রুল জারি করে হাইকোর্ট৷

Nicolas Chakma - MP3-Stereo

বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ রুলে জানতে চেয়েছে, ‘‘রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় পাহাড়িদের ৪টি গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনা তদন্তে আইন অনুযায়ী কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না?'

একই সঙ্গে কমিশন কেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতি নিরূপণ করবে না তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে৷ কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্টের অধীনে ওই কশিন গঠন করা যায়৷
আট সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব এবং ৩ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে৷ রুলে মন্ত্রীপরিষদ সচিব, আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে বিবাদী করা হয়েছে৷

গত ১ জুন লংগদু এলাকার ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুল ইসলামের লাশ খাগড়াছড়ি সদরের চারমাইল এলাকায় রাস্তার পাশের জঙ্গল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়৷ পরের দিন এর প্রতিক্রিয়ায় লংগদু উপজেলা সদরের তিনটিলা পাড়া ও মানিকজুড় ছড়াসহ পাহাড়িদের চারটি গ্রামের অন্তত ২৩০টি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়৷ চালানো হয় লুটপাট৷ ওই এলাকা থেকে পালিয়ে জঙ্গলে আশ্রয় নেয় কয়েক হাজার নারী-পুরুষ

পরে নাশকতার ঘটনায় অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে পুলিশ৷ এরপর ১০ জুন পাহাড়িদের পক্ষে কুমার চাকমা বাদী হয়ে ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে চার-পাঁচ শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন৷

কিন্তু ওই পর্যন্তই৷ এরপর তদন্ত এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে কোনো উদ্যোগ দেখ যায়নি৷ নিকোলাস চাকমা বলেন, ‘‘আমি জানতে চাই ওই ঘটনা কেন ঘটল৷ সকাল ১০টা থেকে ওই এলাকার চারটি গ্রামে হামলা হলো, আগুন দেয়া হলো৷ সেখানে পুলিশ ছিল, আনসার ছিল, বাহিনীর লোক ছিল, প্রশাসনের লোক ছিল৷ তারা কী করল৷ কিছুই করলনা৷ তাদের কাজ তো জানমালের নিরাপত্তা দেয়া৷ কেন তারা নিরাপত্তা দিলো না? কেন তারা নির্লিপ্ত ছিল? আমি এসব জানতে চাই৷ জানতে চাই কারা হামলায় জড়িত৷ তাদের বিরুদ্ধে কী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে?''

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি  বলেন, ‘‘লংগদুর ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িরা এখনো তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি৷ তাদের পুড়ে যাওয়া ঘর-বাড়ি এখনো পুনঃনির্মাণ হয়নি৷ কাপ্তাই লেকের পানিতে এখন তারা বন্যার কবলে৷ মন্দির, ,মসজিদ বা স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে৷ পুনর্বাসনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘হামলার পর সরকারের পক্ষ থেকে গত তিন মাসে পরিবার প্রতি এক হাজার টাকা এবং ২০ কেজি চাল দেয়া হয়েছে৷ দুই বান্ডিল করে ঢেউ টিন দেয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ পরিবার তা পায়নি৷ এর বাইরে স্থানীয় লোকজন কিছু সহায়তা করেছে৷''

সরকারের এই উদাসীনতা এবং নির্লিপ্ততায় লংগুদুর ক্ষতিগ্রস্তরা বিপন্ন বোধ করছে বলে জানান তিনি৷ আরো জানান, তাঁরা নিরপত্তাহীন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য