1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতিকে স্বাগত

২৩ মার্চ ২০২২

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন৷

https://p.dw.com/p/48ub5
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেনছবি: Abdullah Al Momin/bdnews24.com

তবে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের পাঠানো তালিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি৷

গত সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এক অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতনকে জেনোসাইড হিসাবে ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন৷ ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের খবর অনুযায়ী, ঘোষণার পরদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এটাকে আমরা স্বাগত জানাই৷ দেরি হলেও মোস্ট ওয়েলকাম৷’’

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের দক্ষিণ-পশ্চিমে মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর ব্যাপক দমন-পীড়ন শুরু হলে প্রায় ১০ লাখ মানুষ সীমান্ত পার হয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে৷ ওই ঘটনায় মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনার প্রস্তাব করে জাতিসংঘ৷

সাড়ে চার বছর আগে রোহিঙ্গা ঢলের সে সময়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনকে ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদী উদাহরণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার কার্যালয়৷ এর আগে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো হত্যাযজ্ঞকে জেনোসাইড হিসেবে উল্লেখ করেছিল ফ্রান্স ও ক্যানাডা৷

যুক্তরাষ্ট্রের গণহত্যার স্বীকৃতিতে রোহিঙ্গারা খুশি

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতনকে জেনোসাইড হিসাবে ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন ঘোষণার এমন সিদ্ধান্তকে দীর্ঘদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসনের ‘সুখবর’ হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন৷ জেনোসাইড স্বীকৃতির ধারাবাহিকতায় বাস্তুচ্যুত বিপুল এ জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করারও আহ্বান জানান তিনি৷ 

মোমেন বলেন, ‘‘জেনোসাইডের শিকার ব্যক্তিদের প্রত্যাবাসন ও ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য বড় শক্তি যারা, তারা যদি পুশ করেন, প্রেসার দেন, তাহলে আমার ধারণা, একটা সমাধান হতে পারে৷ তারা এ ব্যাপারে আরও সজাগ হবেন, যাতে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হয় এবং সুন্দর ভবিষ্যত যাতে তারা গড়ে তুলতে পারে৷ আশা করি, ইউএস সেক্রেটারি অব স্টেটের এটা বলার পরে তারা চাপ দেবে মিয়ানমার সরকারকে, যাতে তারা নিজেদের লোকদের নিয়ে যায়৷’’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নিজেদের লোকদের নিয়ে যাবেন, কিন্তু তারা বিভিন্নভাবে এটা ধীরগতি করছেন৷ সেক্রেটারি অব স্টেটের বক্তব্যের পরে এটা যদি ত্বরান্বিত হয় আমরা খুশী হব৷ কারণ আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এদের মঙ্গল৷ আর যাতে এ ধরনের জেনোসাইডের শাস্তি হয়৷

রোহিঙ্গাদের ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তাদের পরিচয় নিশ্চিতে দেশটি ‘দুরভিসন্ধি’ করছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, তারা বলেছিল ১১ হাজারকে নিয়ে যাবে৷ তারপর কমিয়ে কমিয়ে সাতশ জনের একটা তালিকা দিয়েছে৷ লিস্টটা এত ডিফেক্টিভ, আমরা তো কাউকে জোর করে ফেরত পাঠাব না৷ তালিকা যেটা দিয়েছে, আমার সহকর্মীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন যে, এক পরিবারে বাপকে নিয়ে যাওয়া লিস্টের মধ্যে আছে তার বউ লিস্টে নাই৷ কিংবা তার ছেলেমেয়ে নাই৷’’

সবগুলো পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলায় কেউ যেতে রাজি হওয়ার সম্ভাবনা কম জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা স্বেচ্ছায় যাওয়ার বিষয় সমর্থন করি৷ এমনভাবে তৈরি করেছে তালিকাটা, তাতে মনে হয় স্বদিচ্ছার অভাব আছে৷ অন্য দুরভিসন্ধি আছে৷ মিয়ানমার এ তালিকা পাঠিয়েছে৷ পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমার সহকর্মীরা দেখেছেন, এটাতে এত শুভংকরের ফাঁকি, মনে হয় এরা যাতে না যায় এ ধরনের একটা তালিকা তৈরি করেছে৷’’

এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) 

গতবছরের ছবিঘরটি দেখুন