1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গাদের নিয়ে আতঙ্কে বাংলাদেশের বৌদ্ধরা

২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সহিংসতার কারণে মিয়ানমার থেকে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে৷ অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ৷ তবে এ পরিস্থিতি শঙ্কারও জন্ম দিচ্ছে৷ এএফপিকে সে কথাই জানিয়েছেন কক্সবাজার এলাকার বৌদ্ধরা৷ 

https://p.dw.com/p/2kWWV
ফাইল ছবিছবি: Reuters

বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ায় অনেক বাংলাদেশি ক্ষুদ্ধ বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷ বিশেষত কক্সবাজারের যেসব এলকায় তাঁদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে, সেখানে অনেকেই উদ্বিগ্ন বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷ সে এলাকায় অতীতে বৌদ্ধ সংখ্যালঘুদের ঘর-বাড়ি ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে৷  ২০১২ সালে এক বৌদ্ধ তরুণ ফেসবুক পোস্টে কোরানের অবমাননা করেছেন- এমন অভিযোগ তুলে হামলা চালানো হয়েছিল ৩০০ বছরের পুরোনো এক বৌদ্ধ মন্দিরে৷ লুটপাট করার পর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল সেই মন্দির৷

বৌদ্ধ সন্যাসী প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ওখনও সেই রাতের কথা মনে করে শিউরে ওঠেন৷ হামলাকারীরা মন্দিরে ঢুকে মূর্তি ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করতে শুরু করার আগেই তিনি প্রাণ রক্ষার্থে  পালিয়ে যান৷ তবে কাছাকাছি এক জায়গায় লুকিয়ে থেকে সবই দেখেছিলেন৷

এএফপিকে তিনি বলেন, ‘‘লুটপাট শেষ হয়ে গেলে তারা মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়৷’’ ২০১২ সালের পর পুড়িয়ে দেয়া কেন্দ্রীয় শিমা বিহার মন্দির পুনর্নির্মাণ করা হয়৷

এমনিতে সেখানে সংখ্যাগুরু মুসলিমদের সঙ্গে সংখ্যালঘু বৌদ্ধরা মিলেমিশেই থাকেন৷ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে সম্প্রীতি৷ তাই পাঁচ বছর আগের বিভীষিকার রাতের কথা স্মরণ করতে গিয়ে বিস্ময় নিয়েই তিনি বলছিলেন, ‘‘এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা আমার কল্পনারও বাইরে ছিল৷ কারণ, এখানকার মুসলমানদের সাথে আমাদের বেশ ভালো সম্পর্ক৷’’

সাবেক ব্যবসায়ী মনোদা বড়ুয়াও বললেন একই কথা৷ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দু'জনকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওরা মুসলমান৷ ওদের সঙ্গে আমরা খাওয়া-দাওয়া করি, একসঙ্গে লেখাপড়া করি৷ আমাদের চার পাশে অনেকগুলো মুসলিম গ্রাম৷’’ দুই মুসলমানের মধ্যে একজনের নাম মোহাম্মদ ইসমাইল৷ এএফপি-কে তিনিও জানালেন, স্থানীয় মুসলমান এবং বৌদ্ধদের মধ্যে ভালো সামাজিক সম্পর্কের কথা৷

দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হলে কেন ২০১২ সালে এমন ভয়াবহ হামলা হলো? মোহাম্মদ ইসমাইল মনে করেন, সেবার হামলাটি হয়েছিল মূলত বহিরাগতদের কারণে৷

গত কিছুদিনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা এসেছে বাংলাদেশে৷

তাদের আগমনে স্থানীয়দের মাঝে নতুন করে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক৷ প্রকৃতি বড়ুয়া বললেন, ‘‘আমরা আতঙ্কে আছি৷ লোকজন বলাবলি করছে, মুসলমানরা নাকি আমাদের ওপর হামলা চালাবে৷’’

মিয়ানমারে বৌদ্ধরা সংখ্যাগুরু হলেও বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার শতকরা এক ভাগেরও কম বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী৷ কক্সবাজারের বৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকায় ইতিমধ্যে অতিরিক্ত ৫৫০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷  তারপরও রাঙ্গা বাবু চাকমা জানালেন, তাঁর বাড়িতে ইতিমধ্যে একবার আগুন লাগানোর চেষ্টা হয়েছে৷

এএম/ এসিবি (এএফপি)

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...