1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘চেহারা মনে না রাখা'

মিশায়েল হার্টলেপ/আরবি১৪ ডিসেম্বর ২০১৩

সিলভিয়া টিপমানের এমন রোগ আছে৷ জার্মানির কেমনিটৎস শহরের ২৯ বছর বয়স্ক এই জৈব তথ্যবিজ্ঞানী মানুষের মুখ বা চেহারা মনে রাখতে পারেন না৷ মনস্তত্ত্ববিদরা এই রোগের নাম দিয়েছেন ‘প্রোসোপ্যাগনোসিয়া' সহজ করে বললে, চেহারা মনে না রাখা৷

https://p.dw.com/p/1AUK6
Montagsdemonstration gegen Fluglärm
ছবি: picture-alliance/dpa

টিপমান একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, ‘‘একবার রাস্তায় এক স্প্যানিশ মহিলার সঙ্গে দেখা৷ তিনি হেসে সম্ভাষণ জানালেন৷ আমি মনেই করতে পারলাম না, ব্যক্তিটি কে? আসলে তিনি আমার স্প্যানিশ ভাষার টিউটর৷ স্প্যানিশ শেখার জন্য তাঁর কাছে যাই আমি৷ ইতোমধ্যে তিনবার দেখা হয়েছে৷ বিষয়টি খুব অস্বস্তিকর৷''

এটি একটি অসুখ

মনস্তত্ত্ববিদরা বলছেন এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের মুখ দেখে মানুষ চিনতে কষ্ট হয়৷ তারা কোনো ছায়াছবি বা থিয়েটার ঠিকমত উপভোগ করতে পারেন না৷ কারণ ঘটনাটি তারা ভালভাবে অনুসরণ করতে পারেন না৷ নায়ক নায়িকার চেহারাই ভুলে যান৷ পরের দৃশ্যে তা আর মনে করতে পারেন না৷ কিংবা পরিচিত বা সহকর্মীদের দেখলেও চিনতে পারেন না৷ সিলভিয়া টিপমান বলেন, ‘‘এইরকম হলে অন্যরা রেগে যান৷ যেহেতু আমি তাদের চিনতে পারি না তাই তারা আমাকে অহংকারী মনে করেন৷ ''


সুইজারল্যান্ডের ব্যার্ন ইউনিভার্সিটির জীব মনস্তত্ত্ববিদ অধ্যাপক ইয়ানেক লোবমায়ার বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন৷ তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, এই ধরনের প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক৷ ভুক্তভোগীদের সমস্যা শুধু মুখমণ্ডলকে ঘিরেই৷ এই সমস্যাটা জন্মগত৷ তবে মস্তিষ্কের কোনো কোনো জায়গায় আঘাত পেলে বা স্ট্রোক হলেও এমনটি হতে পারে৷ এর কারণ মস্তিষ্কের উদ্দীপক প্রক্রিয়ায় সমস্যা৷ কারো মুখ দেখে মনে রাখার প্রক্রিয়াটা চলে মস্তিষ্কে৷ সুস্থ মানুষদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভালভাবেই চলে৷ মস্তিষ্ক অন্যের মুখমণ্ডলের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, চাউনি ইত্যাদি লক্ষ্য রাখে এবং স্মৃতিতে ধরে রাখতে চেষ্টা করে৷ এজন্য মস্তিষ্কের বিভিন্ন ক্ষেত্রের এক একটি দায়িত্ব রয়েছে৷

Obst und Gemüse
ফল দিয়ে তৈরি একটি হাসি মুখছবি: picture-alliance/dpa

সংগীতের অর্কেস্ট্রার মতোই সবগুলি ক্ষেত্র সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে৷ কোনো একটি অংশ বিকল হয়ে গেলে বা কাজ ঠিকমত না করলে সমস্যার সৃষ্টি হয়৷

অনেকে জানেন না

মনস্তত্ত্ববিদরা অনুমান করেন, প্রতি একশোর মধ্যে অন্তত তিনজনের মুখ না চেনার রোগটি রয়েছে৷ পরিসংখ্যানের বাইরে থাকা সংখ্যাটা আরো বেশি হবে৷ অনেকেই হয়তো জানেনই না যে তাদের এই অসুখটি আছে৷ তারা মনে করেন মনোযোগের অসুবিধা বুঝি এটা৷ নাম মনে না রাখতে পারার সমস্যা৷ স্মৃতিশক্তি কম ইত্যাদি৷ ‘‘অনেকেই তাদের এই অসুখটার কথা শুনে হালকা বোধ করেন অবশেষে সমস্যাটির এক ব্যাখ্যা পাওয়া গেল৷'' বলেন লোবমায়ার৷

কিছু বৈশিষ্ট্য দেখে মনে রাখার কৌশল

ভুক্তভোগীরা অন্যান্য বৈশিষ্ট্য দেখে মানুষকে চিনতে চেষ্টা করেন৷ যেমন পরিচিতজনের হাঁটার ভঙ্গি, পোশাক-আশাক, কন্ঠস্বর ইত্যাদি থেকে৷ সিলভিয়া টিপমানও নানা ধরনের কৌশলে সমস্যাটি আয়ত্তে আনার চেষ্টা করেন৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘ছাত্রজীবনে সহপাঠীদের জুতো দেখে তাদের চিনতে চেষ্টা করতাম৷ পেশাজীবনে এটা কার্যকর হয় না৷ কেননা চাকরীজীবীরা অনেক জোড়া জুতা কেনার সামর্থ্য রাখেন৷ সেজন্য অন্যান্য চিহ্ন মনে রাখার চেষ্টা করেন৷ আর কোনো কিছুই যদি কাজে না লাগে, কেউ সম্বোধন করলে একটুখানি মুচকি হাসলেই হয়৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য