রুটি কিনতে গিয়ে গোলার আঘাতে মৃত্যু
ইউক্রেনের খারকিভ শহরে ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা৷ বাসায় খাবার কিছু না থাকায় রুটি কিনতে বাইরে বের হয়েছিলেন ভিক্টর গুবারেভ৷ ঠিক তখনই তার বাসার সামনে এসে পড়ে এক গোলা৷ সেটির আঘাতে মারা যান তিনি৷
রুটি আর খাওয়া হলো না
পরিবারের খাওয়ার জন্য রুটি ঠিকই কিনে এনেছিলেন ভিক্টর৷ নিজের অ্যাপার্টমেন্টের ঠিক বাইরেই যখন গোলা এসে পড়ে, তার হাতে তখনও ধরা ছিল সেই রুটি৷
মেয়ের কান্না থামছে না
ভিক্টরের মেয়ে ইয়ানা বাচেক একজন ইংরেজি শিক্ষক৷ যুদ্ধের মধ্যেও অনলাইনে ক্লাস করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি৷ এমন সময় ফোনে মায়ের কাছে বোমা বর্ষণের খবর শুনে ছুটে আসেন বাবা-মায়ের অ্যাপার্টমেন্টে৷ এসে দেখেন বাবার মরদেহের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স৷
মুহূর্মুহু গোলাবর্ষণ
বাবা-মায়ের অ্যাপার্টমেন্টের পাশেই স্বামী ইয়েভগেনি ভ্লাসেংকোর সঙ্গে থাকেন ইয়ানা৷ মায়ের কল পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে বের হতে গিয়েও স্বামীর বাধায় বের হতে পারেননি তিনি৷ ইয়েভগেনির আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করে কিছুক্ষণের মধ্যে আবার সেখানে বোমা ফেলে রুশ বাহিনী৷ কিছুক্ষণ আগেই বিস্ফোরণ ও গোলাবর্যণের মধ্যেই কেনাকাটা করে ফিরেছিলেন ইয়ানাও৷
ভুলতে চান শেষ ছবি
বিস্ফোরণের কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্স৷ এক ফটোগ্রাফার তখন ভিক্টরের মৃত্যুর ঠিক পরের মুহূর্তের ছবি তুলেছেন৷ এই ছবির কথা ভুলতে পারছেন না ইয়ানা৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি দুঃখিত৷ আমি এটার কথা ভুলে যেতে চাই৷ এই ছবি, তার এই ছবির কথা আমি মনে রাখতে চাই না৷’’
বাবার স্মৃতি
বাবার সঙ্গে অন্যসব স্মৃতি নিয়েই বাকি জীবন কাটাতে চান ভিক্টরের একমাত্র সন্তান ইয়ানা৷ মাত্র ১৬ বছর বয়সে পরিবারের ভরণপোষণের জন্য ড্রাইভারের কাজ শুরু করেন ভিক্টর৷ তারপর ক্যারিয়ারের শেষ দিকে রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রমের গাড়ি পরিবহণের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন৷ ৭৯ বছর বয়সি ভিক্টর যুদ্ধাবস্থাতেও নিজের ও স্ত্রীর স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে খারকিভ ছেড়ে যেতে চাননি৷
আরো মৃত্যু
ক্রমাগত গোলাবর্ষণে ভিক্টর ছাড়াও ২৫ এপ্রিল আরো অন্তত তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷ রাশিয়ার পক্ষ থেকে বেসামরিক স্থাপনায় হামলার কথা বারবার অস্বীকার করা হলেও, আবাসিক এলাকাতেও চলছে নির্বিচার গোলাবর্ষণ৷ প্রতিদিনই ভারি হচ্ছে মৃত্যুর পাল্লা৷