1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাষ্ট্রপতি-প্রার্থী যশবন্তকে নিয়ে কি বিড়ম্বনায় মমতা?

৭ জুলাই ২০২২

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী হওয়ার আগে যশবন্ত সিনহা ছিলেন তৃণমূল সাংসদ। এখন সেই যশবন্তকে নিয়েই কি অসুবিধায় পড়েছেন মমতা?

https://p.dw.com/p/4Dn0H
যশবন্ত সিনহা।
যশবন্ত সিনহা।ছবি: AP

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লড়াই এখন এনডিএ-র দ্রোপদী মুর্মু বনাম বিরোধীদের প্রার্থী যশবন্ত সিনহার মধ্যে। সংখ্যা তার সঙ্গে নেই জানা সত্ত্বেও যশবন্ত লড়াইয়ে বিন্দুমাত্র ঢিলে দিচ্ছেন না। তিনি দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে বিরোধী সাংসদ, বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করছেন। ভরপুর প্রচার করছেন। বিপক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী দ্রৌপদী মুর্মুকেও তিনি আক্রমণ করতে ছাড়ছেন না।

তৃণমূল সূত্রের খবর, সেটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তৃণমূল এখন চাইছে না যে, যশবন্ত কলকাতায় এসে প্রচার করুন এবং দ্রৌপদী মুর্মুর বিরুদ্ধে কথা বলুন।

কেন এই বিড়ম্বনা?

পশ্চিমবঙ্গে আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা দুইটি। ঝাড়গ্রাম এবং আলিপুরদুয়ার। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দুইটি আসনেই জিতেছিল। রাজ্য়ে আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত বিধানসভা আসনের সংখ্যা ১৬টি। লোকসভার ফল অনুযায়ী, ১৬টির মধ্যে ১৩টি আসনে বিজেপি এগিয়েছিল। কিন্তু ২০১৯-এর ছবিটা ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বদলে যায়। বিধানসভায় আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে  বিজেপি-র তুলনায় ভালো ফল করে তৃণমূল। দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, সেই সময় ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর আদিবাসী ভোট পাওয়ার জন্য বিশেষ কৌশল নিয়েছিলেন।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ তৃণমূল নেতা ও সাংসদ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, মমতা আর আদিবাসী আসন হারাতে চান না। বিধানসভা ও লোকসভা কোনো জায়গাতেই নয়। সেজন্যই তিনি দ্রৌপদী মুর্মুর বিরোধিতা করেননি। বরং বলেছেন, আগে থেকে তার নাম জানালে তিনি দ্রৌপদীকে সমর্থন করতেন। সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এবং দ্রৌপদীও সাঁওতাল। সেজন্যই মমতার চিন্তা আরো বেড়েছে।

আর এক তৃণমূল নেতার ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''আমরা চাই না, যশবন্ত পশ্চিমবঙ্গে এসে দ্রৌপদীর বিরুদ্ধে কোনো কথা বলুন। এখানে বিজেপি বিধায়ক-সাংসদদের বাদ দিয়ে বিরোধীদের সব ভোটই তিনি পাবেন। ফলে পশ্চিমবঙ্গে তার প্রচারে আসার কোনো প্রয়োজন নেই।'' ওই তৃণমূল নেতার দাবি, ''রাষ্ট্রপতি পদে মমতা তিনটি নাম প্রস্তাব করেছিলেন। শরদ পাওয়ার, গোপালকৃষ্ণ গান্ধী এবং ফারুক আবদুল্লা। তিনজনই জানিয়ে দেন, তারা প্রার্থী হবেন না। তারপরই মমতা বিরোধী প্রার্থী নিয়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। যশবন্তকে নিয়ে তার কোনো উচ্ছ্বাসও দেখা যায়নি।''

রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত

বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ধর্ম সারনা-কে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঠিক হয়েছে, সারনাকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য মোদী সরকারের কাছে আবেদন জানাবে রাজ্য সরকার। সারনাকে স্বীকৃতি দেয়ার দাবিতে আগে ঝাড়খণ্ডে আন্দোলন হয়েছে। সাঁওতালরা সারি বা সারনা ধর্মকে মেনে চলেন। আরো বেশ কিছু আদিবাসী জনগোষ্ঠীও সারনাকে মানেন। উত্তরবঙ্গের সাঁওতালরা সারনা ও দক্ষিণবঙ্গের সাঁওতালরা সারি ধর্ম মানেন। কিন্তু যেহেতু তাদের ধর্মের কোনো কোড চালু নেই, তাই তারা নিজেদের ধর্মের কথা জানাতে পারেন না। তৃণমূলও বিধানসভা ভোটের আগে সারি ও সারনাকে স্বীকৃতি দেয়ার কথা বলেছিল। এবার সেই লক্ষ্যেই তারা এগোচ্ছে।

তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার সারনাকে স্বীকৃতি না দিলে আদিবাসীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিজেপি দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রার্থী করে আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলিতে জিততে চায়। কেন্দ্র সারনাকে মেনে নিলে তার কৃতিত্ব মমতা পাবেন। তাই মমতা সারনা ধর্মের স্বীকৃতির বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছেন বলে তাদের দাবি।

জিএইচ/কেএম(টাইমস অফ ইন্ডিয়া, পিটিআই)