রাশিয়ার নির্বাচনে অল্পের জন্য রক্ষা পেল পুটিনের দল
৫ ডিসেম্বর ২০১১বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুটিনের জন্য এটিই সবচেয়ে বড় ধাক্কা৷ গত নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হলেও এবার পুটিনের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড রাশিয়া ৭৭ টি আসন হারিয়েছে৷ সোমবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সংসদের নিম্নকক্ষের ৪৫০ আসনের ২৩৮টিতে বিজয়ী হয়েছে ক্ষমতাসীন সরকারি দল৷
অন্যদিকে, ২০ বছর আগে ধরাশায়ী রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি আবারও কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে৷ ২০০৭ সালে ৫৭টি আসনে বিজয়ী হলেও রবিবারের নির্বাচনে ৯২টি আসন পেয়েছে তারা৷ মূলত ক্ষমতাসীন দলের বেশ কিছু ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ মানুষ আবারও কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে ভোট দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ বেশ কিছু ভোটার জানিয়েছেন যে, তারা কমিউনিস্ট পার্টিকে পছন্দ না করলেও বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ হিসেবেই কমিউনিস্টদের ভোট দিয়েছেন৷ এছাড়া বিশ্লেষকদের মতে, তরুণ সমাজ, বুদ্ধিজীবী এবং ব্যবসায়ী মহলের একাংশকেও নিজেদের পক্ষে টানতে সক্ষম হয়েছে কমিউনিস্টরা৷
তবে রবিবারের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে ওএসসিই নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল৷ তাদের অভিযোগ, রবিবারের নির্বাচনে কারচুপি, প্রভাব খাটানো এবং ব্যালট বাক্স দখলের মতো পদ্ধতিগত অনিয়ম হয়েছে৷ এছাড়া বিরোধী দল কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দও ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন৷ দলীয় প্রধান এবারের নির্বাচনকে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন৷ রাশিয়ার নির্বাচনে এমন অনিয়মের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জার্মানি৷ সোমবার এক বিবৃতিতে জার্মান সরকারের মুখপাত্র গেয়র্গ স্ট্রাইটার বলেন, ‘‘নির্বাচনে অনিয়ম এবং অবৈধ হস্তক্ষেপের ঘটনায় বার্লিন সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন৷'' পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদনে উত্থাপিত অভিযোগ চিহ্নিত করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান স্ট্রাইটার৷
তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ‘‘সুষ্ঠু, সঠিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই নির্বাচন হয়েছে৷'' অবশ্য ভোটাররা এই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলকে একটি সতর্ক বার্তা দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন মেদভেদেভ৷ তিনি আরো বলেন, বেশ কিছু অঞ্চলে ইউনাইটেড রাশিয়া ভালো করতে পারেনি৷ তবে এর পেছনে দলের উপর আস্থা হারানো নয় বরং কিছু স্থানীয় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ দায়ী বলে মনে করেন মেদভেদেভ৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক