1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রামমন্দির: টিভি বিতর্কে বিতর্কিতরা নয়

২৯ জুলাই ২০২০

রামমন্দিরের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে কাকে ডাকা যাবে না, কোন কথা বলা যাবে না, তা জানিয়ে দিল জেলা প্রশাসন। চ্যানেলগুলিকে হলফনামা দিয়ে অনুমতি নিয়ে অযোধ্যা থেকে অনুষ্ঠান করতে হবে।  

https://p.dw.com/p/3g6qX
ছবি: DW/S. Mishra

আগামী ৫ অগাস্ট বেলা বারোটা বেজে  ১৫ মিনিট ১৫ সেকেন্ডে অযোধ্যায়রামমন্দিরের ভূমিপুজোর মূল অনুষ্ঠান হবে  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গর্ভগৃহে ২২ কেজি ৬০০ গ্রামের রুপোর ইট স্থাপন করবেন। অযোধ্যায় সেই অনুষ্ঠান স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্ব পাবে ভারতের সব টিভি চ্যানেলে। কিন্তু সেদিন টিভি চ্যানেলে রামমন্দির নিয়ে আলোচনার সময় কী করতে হবে, তার রূপরেখা তৈরি করে দিল উত্তর প্রদেশ প্রশাসন।

অযোধ্যা জেলা প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে, যে সব টিভি চ্যানেল ওই দিন অযোধ্যা থেকে খবর দেখাতে চায়, আলোচনা করতে চায়, তাঁদের আগাম অনুমতি নিতে হবে এবং একটি হলফনামা দিতে হবে। সেখানে বলা থাকবে, কোনও বিতর্কিত ব্যক্তিকে, মোকদ্দমাকারীকে বিতর্কে ডাকা যাবে না। হলফনামায় টিভির কর্তাকে বলতে হবে, ''আইন ও শৃঙ্খলায় যদি কোনওরকম সমস্যা হয়, তা হলে ব্যক্তিগতভাবে আমি দায়ী থাকব।''

মোট নয়টি ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে বা নিয়ম পালন করতে হবে। আলোচনা, বিতর্ক বন্ধ ঘরে করতে হবে। বাইরে করা যাবে না। করোনার সময় বাইরে ক্যামেরা ঘিরে লোক জমে গেলে মুশকিল হবে। শুধু যে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বকে ডাকা যাবে না, তাই নয়, কোনও ধর্ম, সম্প্রদায়, ব্যক্তি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা যাবে না। কোথায় অনুষ্ঠান করা হবে, তা আগাম প্রশাসনকে জানাতে হবে।

তথ্য বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর মুরলীধর সিং বলেছেন, ''রামমন্দিরের ভূমিপুজো অনুষ্ঠান সম্প্রচার করার ক্ষেত্রে মিডিয়ার কোনও অসুবিধা হবে না। সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মিডিয়া সেন্টার থাকবে। লাইভ দেখানোর ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু করোনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ঠিক হয়েছে, চ্যানেলগুলিকে আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে। তাঁদের দেখতে হবে, জনসমাবেশ যাতে না হয়, কোনো বিতর্কিত কথা যেন বলা না হয়। সকলে যেন প্রটোকল মেনে চলেন।''   

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবে কাকে বিতর্কে ডাকা যাবে, বিতর্কে কী বলা যাবে, কী বলা যাবে না, সেই সব ঠিক করে দেওয়ার মানে কি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারে হস্তক্ষেপ নয়? তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ ও আইনজীবী সুখেন্দু শেখর রায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। মত প্রকাশের অধিকার হলো মৌলিক অধিকার। ভারতীয় দণ্ডবিধিতেই বলা আছে, উত্তেজনা ছড়ানো যাবে না, দাঙ্গা-হাঙ্গামা করা যাবে না। তার জন্য প্রশাসন আগাম সতর্কতা নিতে পারে। সকলকে সতর্ক করে দিতে পারে। কিন্তু ''টিভির বিতর্কে কী বলতে হবে., কাকে ডাকা যাবে না, সেটা প্রশাসন ঠিক করার কে? আমাকে টিভি বিতর্কে ডাকা হলে আমি কী বলব, তা টিভির লোক বা অ্যাঙ্কার কী করে জানবে?''

ভিন্নমত হওয়াটা তো অপরাধ নয়। যতক্ষণ উস্কানিমূলক কোনো কথা বলা না হচ্ছে, ততক্ষণ তো কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। সুখেন্দু শেখর যেমন মনে করছেন, ''জরুরি অবস্থার সময় আইন করে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল। এখন আইন ছাড়াই করা হচ্ছে।''

প্রশ্ন উঠছে যে, তা হলে কি শুধু বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবারের লোকেদেরই টিভির আলোচনায় দেখা যাবে?

বিজেপি নেতারা অবশ্য বলছেন, অযোধ্যায় রামমন্দিরের বিষয়টি এতটাই স্পর্শকাতর যে সামান্য ফুলকিতে উত্তজনা ছড়াতে পারে এবং হাঙ্গামা হতে পারে। সে জন্যই প্রশাসন অত্যন্ত সতর্ক। তারা এ নিয়ে কোনোরকম গন্ডগোল চায় না বলেই নীতিনির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তা মেনে চললে সকলেরই মঙ্গল।

জিএইচ/এসজি(ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)