1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রানা প্লাজা ধসের দুই বছর

সমীর কুমার দে, ঢাকা২২ এপ্রিল ২০১৫

রানা প্লাজা ধসের দুই বছর হতে চললেও এখনো কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি৷ এমন পরিস্থিতিতে সরকারের প্রতি শ্রম আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷

https://p.dw.com/p/1FCUI
Bangladesch Demonstration der Textilarbeiter in Dhaka
ছবি: Imago/Xinhua

গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির দুই বছরকে সামনে রেখে একটি জরিপ চালানো হয়৷ মঙ্গলবার এই জরিপের ফলাফল জানানো হয়৷ এতে বিভিন্ন কারখানার দুই হাজার শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে৷ জরিপের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, গার্মেন্টস পরিদর্শক জোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স সম্পর্কে ৯২ শতাংশ শ্রমিক কিছুই জানেন না বা বোঝেন না, ৮০ শতাংশ শ্রমিক গার্মেন্টসের বিকল্প থাকলে এ পেশা ছেড়ে দিতেন৷ তিনি বলেন, শ্রমিকরা আনন্দের সঙ্গে গার্মেন্টসের কাজ করতে ছুটে আসছে, বিষয়টি তা নয়৷ এ খাতে এখনো শ্রমিকদের জীবন ও কর্মপরিবেশ নিম্নমানের – এমনকি বর্বরোচিত৷

এমন পরিস্থিতিতে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের পক্ষ থেকে রানা প্লাজা ও তাজরীনের ‘খুনী' মালিকদের হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া, অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া, ২৪ এপ্রিলকে (রানা প্লাজা ধসের দিন) শোক দিবস ঘোষণা করা, নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের ৪৮ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া, আহতদের সুচিকিত্‍সা দেয়া, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক কারখানা গড়ে তোলা, ইপিজেড এলাকাসহ সব এলাকায় ট্রেড ইউনিয়নের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং শ্রমিকদের উপর নির্যাতন বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে৷

এদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডে বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের উন্নত কর্মপরিবেশ, ইউনিয়ন গঠনের অধিকারসহ তাদের আইনসঙ্গত অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডাবলিউ৷ সংগঠনের এশিয়া বিষয়ক উপ-পরিচালক ফিল রবার্টসন বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ যদি রানা প্লাজা বিপর্যয়ের মতো আরেকটি দুর্ঘটনা এড়াতে চায়, তাহলে দেশটির উচিত কার্যকরভাবে শ্রম আইন বাস্তবায়ন করা৷ পোশাক কারখানার কর্মীরা যাতে দুর্ব্যবহার শঙ্কা ছাড়াই কাজের পরিবেশের ব্যাপারে তাদের কথা প্রকাশ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে৷

ফিল রবার্টসন বলেন, পোশাক প্রতিষ্ঠানের যে ম্যানেজার বা ব্যবস্থাপকরা পোশাক শ্রমিকদের ওপর হামলা এবং ইউনিয়ন গঠনের অধিকারকে অস্বীকার করেন, বাংলাদেশ যদি তাদের দায়ী না করে, সেক্ষেত্রে সরকার এ ধরনের প্রথাকে স্থায়ী করে তুলবে৷ এসব প্রথার কারণে হাজার হাজার পোশাক শ্রমিককে জীবন দিতে হয়েছে৷ বাংলাদেশ সরকার, পোশাক প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং পশ্চিমা পোশাক ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি এইচআরডাবলিউ শ্রমিকদের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং পোশাক প্রতিষ্ঠানের মালিক ও তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের (সুপারভাইজার) শ্রমিক নেতাদের বেআইনিভাবে টার্গেট করার ঘটনাগুলো অবসানের আহ্বান জানিয়েছে৷

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪শে এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১,১০০ জনেরও বেশি পোশাক শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ এরপর ২ বছর অতিবাহিত হতে চলেছে৷ ওই ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশের পোশাক প্রতিষ্ঠানসমূহকে আরও নিরাপদ করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে এইচআরডাবলিউ-র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে৷

অপরদিকে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির দুই বছর পরও শ্রমিকদের পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের নিয়মিত চিকিত্‍সা ও পুনর্বাসন, দায়ীদের শাস্তির মত বিষয়ে এখনো সুরাহা হয় নি৷ এ সব বিষয়ে দ্রুততম সময়ে সম্মানজনক সমাধান হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)৷ মঙ্গলবার রানা প্লাজার দুই বছরকে সামনে রেখে আয়োজিত এক সংলাপে সিপিডি-র পক্ষ থেকে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়৷
রানা প্লাজার ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা, ক্ষতিপূরণের মানদণ্ড নির্ধারণ করা, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধা অপসারণ, কারখানা পরিদর্শনকারী দল অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও জাতীয় ত্রিপক্ষীয় কমিটির (এনটিপিএ) কাজে সমন্বয় আনা, কারখানা সংস্কার কার্যক্রম কার্যকরভাবে সমাপ্ত করা, বিদেশী ক্রেতারা (বায়ার) পোশাকের উচিত মূল্য দেয়ার উপর গুরুত্ব দেন সিপিডি-র সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য