1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌রাজ্যপাল যখন ‘‌অদরকারি’

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১৮ নভেম্বর ২০১৯

ভারতীয় সংবিধান মোতাবেক বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল মূলত কেন্দ্র সরকারের চোখ এবং কান হিসেবে কাজ করেন৷ এ ভুমিকা প্রয়োজনের সময় স্বাগত জানায় বিরোধী দলেরা, কিন্তু সরকারে গেলে তারাই হয়ে যায় কট্টর রাজ্যপাল-বিরোধী৷

https://p.dw.com/p/3TDsT
পশ্চিমবঙ্গ রাজভবনছবি: DW/P. Samanta

ভারতে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক কখনোই মধুর নয়, যখন দুটি আলাদা রাজনৈতিক দল দু'‌জায়গায় ক্ষমতায় থাকে৷ ঠিক তেমনই বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল পদটিও রাজ্য সরকারের চক্ষুশূল হয়ে ওঠে৷ কাজেই পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এবং মমতা ব্যানার্জি সরকারের মধ্যে যে লাগাতার বিরোধ বাধছে, তা আদৌ নতুন কিছু নয়৷ সর্বভারতীয় প্রেক্ষিতেও একই ঘটনা ঘটে চলে৷ সদ্য মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সে রাজ্যের অন্যতম ক্ষমতাশালী দল শিবসেনার কোপে পড়েছে৷ অভিযোগ সেই একই৷ রাজ্যপাল কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির ইশারায় কাজ করছেন৷ তার আগে জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচিত বিধানসভা ভেঙে দেওয়া এবং রাষ্ট্রপতির শাসন জারির সুপারিশের ক্ষেত্রেও মূল অভিযোগ ছিল রাজ্যপালের বিরুদ্ধেই৷ পশ্চিমবঙ্গেও বেশ কয়েকমাস ধরে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাত এবং এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজের অভিযোগ আনছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস৷

রাজ্যপালকে তাঁর কাজ করতে দেওয়া উচিত: প্রদীপ ভট্টাচার্য

একসময় এই অভিযোগ চিরস্থায়ী ছিল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে, যেহেতু স্বাধীনতার পর থেকে তারাই সবথেকে বেশি সময় কেন্দ্রে ক্ষমতায় থেকেছে৷ পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকার ৩৪ বছরে লাগাতার বিরোধ ছিল রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপালের৷ স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যপাল পদের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ তাঁর বক্তব্য, রাজ্যপালকে তাঁর কাজ করতে দেওয়া উচিত৷ তা না করে ক্রমাগত রাজ্যপালের পেছনে লেগে থাকার একটাই অর্থ আর তা হলৈা, তিনি রাজ্য সরকারের যেসব দোষত্রুটি দেখিয়ে দিচ্ছেন, তা শাসকদলের পছন্দ হচ্ছে না৷ কিন্তু সেটা রাজ্যপালের সাংবিধানিক দায়িত্ব এবং তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যেই পড়ে৷

মমতা ব্যানার্জির কোনো অধিকার নেই রাজ্যপালের সমালোচনা করার: সুজন চক্রবর্তী

মজার কথা হচ্ছে, আজকে যিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, সেই মমতা ব্যানার্জি যখন বিরোধী নেত্রী ছিলেন, তখন তাঁর বিভিন্ন প্রতিবাদ, আন্দোলনে তৎকালীন রাজ্যপালের উপস্থিতি এবং সমর্থনকে তিনি স্বাগত জানিয়েছিলেন৷ আজ ঠিক সেটাই তাঁর পছন্দ হচ্ছে না৷
‘‘সেই কারণেই মমতা ব্যানার্জির কোনো অধিকার নেই রাজ্যপালের সমালোচনা করার৷ কারণ একসময় তিনি নিজেই রাজ্যপালের পদটিকে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছিলেন,’’ বললেন সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য এবং প্রাক্তন সাংসদ সুজন চক্রবর্তী৷ বামফ্রন্ট পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় থাকতে কেন্দ্রের সঙ্গে তাদের বিরোধ এবং রাজ্যপালের ভূমিকায় অখুশি বামেরা তখনই বলত, কেন্দ্রের হয়ে নজরদারি এবং খবরদারি করার জন্য রেখে দেওয়া এই পদটির কোনো দরকারই নেই৷ এদিনও সুজন চক্রবর্তী ঠিক সেটাই বললেন৷ তবে তাঁর বক্তব্য, সাধারণ মানুষ এসব সঙ্ঘাত এবং সাংবিধানিক বিরোধ বোঝে না৷ তাঁদের সমস্যা রুটিরুজির৷ কেন্দ্র-রাজ্য কাজিয়ায় সেটাই ফাঁকি পড়ে যাচ্ছে৷