1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজনৈতিক দলের বিদেশ শাখার যত কৌশল

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২০ ডিসেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বিদেশ শাখা পরিচালনায় বিশেষ কিছু কৌশলের আশ্রয় নেয়৷ কৌশল নেয়া হয় আইন এবং দলের গঠনতন্ত্রের বাধা উপেক্ষা করার জন্য৷ এই কৌশলে প্রবাসী নেতারা দেশেও রাজনীতি করেন৷  এমপিও হন৷

https://p.dw.com/p/3V8LT
ছবি: bdnews24.com

প্রবাসে রাজনীতি করেন এরকম কমপক্ষে ৩৪ জন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিলর৷ ডেলিগেটও হয়েছেন অনেকে৷ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জানান, ‘‘ইউরোপীয় ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ আছে৷ আবার ইইউ'র ১৬টি দেশেও আলাদা কমিটি আছে৷ প্রতিটি দেশের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এবারের সম্মেলনে কাউন্সিলর৷ এই ৩২ জন বাদে ইইউ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও কাউন্সিলর৷ এর বাইরে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে যেহেতু বাংলাদেশি নগারিক বেশি, তাই ওই দুই দেশ থেকে একটু বেশি কাউন্সিলর করা হয়৷ আর মালয়েশিয়া, জাপান, সৌদি আরবের মতো দেশ থেকে সম্মেলনে ডেলিগেট করা হয়েছে৷'' তাদের বড় একটি অংশ এখন ঢাকায় এসে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন৷

তিনি জানান, ‘‘বিদেশেও কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়৷ তবে কমিটির অনুমোদন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকেই নিতে হয়৷ বিদেশ কমিটির কাউন্সিলের সময় বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা যান৷’’

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

কিন্তু নির্বাচন কমিশন আইনে কোনো রাজনৈতিক দলের বিদেশে শাখা বা অফিস খোলায় নিষেধাজ্ঞার প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, ‘‘সে কারণেই এসব কমিটি অনুমোদন এবং গঠন করা হয় আনঅফিসিয়ালি৷ অফিসিয়াল কোনো অনুমোদন থাকে না৷ মৌখিকভাবে করা হয়৷ আর আমাদের দলের গঠনতন্ত্রেও আওয়ামী লীগের বিদেশ বা প্রবাস শাখার কোনো বিধান নেই৷’’

তিনি আরো জানান, ‘‘প্রবাসে বাংলদেশ আওয়ামী লীগ বলতে কিছু নাই৷ আছে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, জাপান আওয়ামী লীগ... এভাবে৷ তারা ওই দেশের আইনের আওতায় কাজ করে৷ অফিসিয়ালি তারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শাখা নয়৷ তারা আমাদের আদর্শ অনুযায়ী প্রবাসে আমাদের সাথে কাজ করতে চান, তাই আমরা মৌখিক অনুমোদন দেই৷’’

বিদেশে এভাবে সংগঠনের প্রয়োজন কেন জনতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আসলে এতে আওয়ামী লীগের তেমন লাভ হয় না৷ সবাইকে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে রাখাই এর উদ্দেশ্য৷’’

তবে এমন অনেক প্রবাসী নেতা আছেন যারা দেশেও রাজনীতি করেন৷ দেশের কমিটিতেও আছেন৷ আওয়ামী লীগে এরকম দু’জন সংসদ সদস্য হলেন টাঙ্গাইলের ছোট মনির এবং ফেনীর রহিমুদ্দিন৷ এ প্রসঙ্গে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘হ্যাঁ, এরকম অনেকেই আছেন যারা একই সঙ্গে দেশে এবং প্রবাসে আওয়ামী লীগ নেতা৷’’

এমরান সালেহ প্রিন্স৷

অন্যদিকে বিএনপি'র গঠনতন্ত্রেও বিদেশ বা প্রবাস শাখার কোনো বিধান নেই বলে জানান বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স৷ তবে বিএনপির গঠনতন্ত্রে বলা আছে, প্রবাসীরা যে দেশে থাকেন, সেই দেশের আইন-কানুন মেনে যদি বিএনপি’র আদর্শ ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কোনো সংগঠন করতে চান, করতে পারবেন৷ এমরান সালেহ বলেন, ‘‘আমরা আরপিও মেনেই কাজ করি৷ তাই আমাদের কোনো বিদেশ শাখা নেই৷ যারা আছেন, তারা ওইসব দেশে স্থানীয়ভাবে কাজ করেন৷ তারা আমাদের ভ্রাতৃপ্রতীম৷’’

তিনি জানান, ‘‘ইউরোপ ও অ্যামেরিকার প্রায় সব দেশেই বিএনপির এরকম সংগঠন আছে৷ সৌদি আরবসহ এশিয়ার অধিকাংশ দেশেও সংগঠন আছে৷’’ তবে ভারত, নেপাল, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কায় কোনো শাখা নেই বলে  জানান তিনি৷

বিদেশে এ ধরনের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন থাকলে কী লাভ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘যারা সংগঠন করেন, তারা বিএনপির আদর্শ ও উদ্দেশ্যে অনুপ্রাণিত৷ বিদেশে তারা এর মাধ্যমে সংগঠিত থাকতে চান৷ আর বিএনপি তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে৷ নানা ধরনের তথ্য-উপাত্ত বিনিময় করতে পারে৷’’

বিএনপির প্রবাস সংগঠনগুলো নেতৃত্ব নির্বাচন হয় সেখানে কাউন্সিল বা সম্মেলনের মাধ্যমে৷ নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ থেকে বিএনপি নেতারা সেখানে যান৷ কমিটিকেও মৌখিক অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি৷

বিএনপিরও অনেক নেতা আছেন, যারা একইসঙ্গে দেশে এবং প্রবাসে রাজনীতি করেন৷ আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যাসনসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা আছেন, যারা প্রবাসেই থাকেন৷ তবে তারা কোনো প্রবাসী সংগঠনের নেতা নন বলে জানান এমরান সালেহ প্রিন্স৷

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য