1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজনীতির মাঠে খেলোয়াড়রা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পশ্চিমবঙ্গে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই খেলার মাঠের একাধিক তারকাকে দেখা যাচ্ছে রাজনীতিতে যোগ দিতে৷ ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন দুই সদস্য মনোজ তিওয়ারি ও অশোক দিন্দা নাম লেখিয়েছেন দুই রাজনৈতিক শিবিরে৷

https://p.dw.com/p/3q27M
ছবি: Payel Samanta/DW

দুইজনই কলকাতায় একই আবাসন কমপ্লেক্সে থাকেন৷ একই জায়গায় চাকরি করেন৷ ক্লাব ক্রিকেট থেকে জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলেছেন দীর্ঘ দুই দশক৷ প্যাড, গ্লাভস, ব্যাট, বল ভাগ করে নিয়েছেন৷ কিন্তু এত বছর পর রাজনীতির পতাকা তাদের আলাদা করে দিল৷ মনোজ শাসক দল তৃণমূলে, আর অশোক যোগ দিয়েছেন বিরোধী দল বিজেপিতে৷ কেন রাজনীতিতে এলেন, এ ব্যাপারে দুজনের প্রতিক্রিয়া মোটামুটি একই, মানুষের জন্য কাজ করতে চাই৷ রাজনীতিতে যোগ না দিয়ে সেটা ভালোভাবে করা সম্ভব নয়৷ তাই নতুন ভূমিকা বেছে নেয়া৷ দিন্দার বক্তব্য, ‘‘মনোজের সঙ্গে আমার বোঝাপড়া খুব ভালো৷ ও নিজের মতো কাজ করবে, আমি আমার মতো৷ কেন্দ্রে যে সরকার চলছে, তার মতো রাজ্য সরকার তৈরি হলে বাংলার উন্নতি হবে৷ যেটাকে আমরা ডাবল ইঞ্জিন সরকার বলছি৷ তাই আমি বিজেপিতে যোগ দিলাম৷’’

ইগো বিসর্জন দিতে হবে প্রথমেই

ক্রিকেট বা ফুটবল জগত থেকে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন৷ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক৷ বাংলাদেশেও ওয়ানডে ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা সংসদ সদস্যের ভূমিকায় রয়েছেন৷ ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেট তারকা মনসুর আলি খান পতৌদি, আজহারউদ্দিন, নভজোৎ সিং সিধু, কীর্তি আজাদ, বিনোদ কাম্বলি রাজনীতিতে এসেছেন৷ ভারতীয় ফুটবল তারকা বাইচুং ভুটিয়া তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন৷  

আবার রাজনীতির মাঠ ফেলে খেলার মাঠে ফেরার উল্টো উদাহরণও আছে৷ গত জানুয়ারিতে তৃণমূল ছেড়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা৷ মন্ত্রিত্বও ছেড়েছেন তিনি৷ ফিরে যেতে চেয়েছেন ক্রিকেটের জগতেই৷ আবার নাটকীয়ভাবে যোগদানের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রাজ্য বিজেপির নব্য সদস্যপদ ছেড়েছেন ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের প্রাক্তন অধিনায়ক মেহতাব হোসেন৷ অনেকেই মনে করেছিলেন, দীপেন্দু বিশ্বাস, রহিম নবির মতো নির্বাচনের লড়াইয়ে দেখা যাবে তাকে৷ সতীর্থ দীপেন্দু বিশ্বাস প্রথম ফুটবলার হিসেবে বসিরহাট থেকে জিতে বিধানসভার সদস্য হলেও মেহতাবের রাজনীতির উচ্চাশা একদিনেই শেষ! যদিও পাণ্ডুয়ায় রহিম নবি জিততে পারেননি৷ বোঝাই যাচ্ছে, ক্ষমতা দখলের লড়াই খেলার জগতের তারকাদের অধিকাংশের কাছে তেমন সুখকর হচ্ছে না৷ কিন্তু কেন রাজনীতির মাঠে এই খেলোয়াড়রা টিকতে পারলেন না? খ্যাতিমান ফুটবলার ও তৃণমূলের তিনবারের সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজনীতিতে ইগো বিসর্জন দিতে হবে প্রথমেই৷ মানুষের সঙ্গে মিশে মানুষের হয়ে কাজ করতে হবে৷ অনেকেই খেলার মাঠে আইপিএল খেলেছেন বা প্রচুর গোল করেছেন, সে সব মনে রাখলে হবে না৷’’

দীপেন্দু বিশ্বাস

আবার তৃণমূলের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস মনে করেন, খেলার মাঠ আর রাজনীতির মাঠ দুটো সামলানো একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে খুব কঠিন নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতির মাঠে আপনাকে মানুষের সঙ্গে থাকতে হবে, মানুষের পাশে থাকতে হবে৷ বিধায়ক হিসেবে আমি কাজ করার সুযোগ পেয়েছি৷ কাজ করার একটা আনন্দ তো আছেই৷ আমার তো অসুবিধা হয়নি৷” নিজের সাফল্যের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি বসিরহাটেরই ছেলে৷ কঠোর পরিশ্রম করে এখান থেকেই ফুটবলার হয়েছি৷ মানুষ সেটা মনে রেখেই ভোটে জিতিয়েছিল৷ মানুষের কাছে নিজের নতুন করে পরিচয় দিতে হয়নি৷’’

গত লোকসভা ভোটের মাঝেই কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ জ্যোতির্ময়ী শিকদার ‘ট্র্যাক' পাল্টে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন৷ এবার একুশের ভোটের আগে এশিয়াডে সোনাজয়ী এই প্রাক্তন অ্যাথলিট বিজেপিতে যোগ দিলেন৷ খেলোয়াড়দের রাজনীতিতে যোগদান কি গুণগত ভাবে রাজনৈতিক পরিসরকে উন্নত করার চেষ্টা, নাকি নিছকই আত্মন্নোতিই লক্ষ্য? রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক শিবাজীপ্রতিম বসু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দুটো খেলা একরকম নয়৷ খেলার জগতে আর কিছু করার না থাকলে যশ, প্রতিপত্তির জন্যই অনেকে খেলায় আসেন৷ তারপর রাজনীতির জটিল আবর্তে খেলতে গিয়ে অসুবিধায় পড়েন৷ রাজনীতির ব্যাকরণ জেনে খেলতে নামাটাই শ্রেয়৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান