1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রঙিন বুদবুদ দিয়ে শিল্প সৃষ্টি করছেন জার্মান শিল্পী

৫ জানুয়ারি ২০২৩

বুদবুদ ওড়াতে অথবা সাবানের ফেনা নিয়ে খেলতে অনেকেরই ভালো লাগে৷ এক জার্মান শিল্পী রঙিন ফেনা দিয়ে অসাধারণ শিল্পকর্ম ও ইনস্টলেশন সৃষ্টি করে চলেছেন৷ সেই কীর্তি স্থায়ী না হলেও দর্শকদের মনে আনন্দের রেশ থেকে যায়৷

https://p.dw.com/p/4LkPk
স্টেফানি ল্যুনিং
স্টেফানি ল্যুনিংছবি: DW

প্যারিসের পঁপিদু সেন্টারের সামনের চত্বর কোটি কোটি রঙিন বুদবুদের বিশাল স্তর দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে৷ স্টেফানি ল্যুনিং নামের এক নারী ‘আইল্যান্ড অফ ফোম' নামের ফেনার এই শিল্পকীর্তি গড়ে তুলেছেন৷ ফেনার নমনীয়তা তাঁকে মুগ্ধ করে বলে তিনি রঙিন ফেনা নিয়ে কাজ করেন৷

২০১১ সালে বাথটবে স্নান করার সময়ে ফেনা দিয়ে শিল্পসৃষ্টির আইডিয়া স্টেফানির মাথায় আসে৷ ফেনার প্রায় ৯৫ শতাংশই পানি৷ সেইসঙ্গে চার শতাংশ খাদ্যের রং এবং এক শতাংশ বায়োডিগ্রেডেবল ডিটারজেন্টও থাকে৷ স্টেফানি বলেন, ‘‘ফেনার মধ্যে এই জীবন্ত সত্তা আমাকে মুগ্ধ করে৷ তাছাড়া ফেনার মধ্যে সহজেই রূপান্তর ঘটানো যায়৷ সেটির কোনো নির্দিষ্ট সীমানা নেই, তাতে রংও যোগ করা যায়৷''

স্টেফানি ল্যুনিংয়ের ফেনা সংক্রান্ত সৃজনশীলতার কোনো সীমা নেই৷ গোটা ভবন, খালি কারখানা থেকে শুরু করে শহরের খোলা চত্বর – বিশ্বের সর্বত্র তাঁর ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম শোভা পায়৷ স্টেফানি বলেন, ‘‘রঙিন ফেনা নিয়ে কাজ করার সুযোগ আবিষ্কার করতে পেরে আমি খুব খুশি৷ কারণ ফেনার নিজস্ব স্পেস রয়েছে৷ ফলে রংও একটা স্পেসিয়াল মাত্রা পায়৷ অবশ্যই সময়েরও একটা বড় ভূমিকা রয়েছে, কারণ আমার শিল্পকীর্তি তো কোনো চূড়ান্ত রূপ পায় না৷ সৃষ্টি, পরিবর্তন ও উধাও হয়ে যাবার সময় পর্যবেক্ষণ করলে তবেই সেটির অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়৷ সেটির কাজ  কখনোই শেষ হয় না৷''

স্টেফানি ল্যুনিং তার ফেনা শিল্পের কৌশলের মধ্যেও উদ্ভাবন ঘটিয়ে চলেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে নীল, লাল আর হলুদ রং রয়েছে৷ আর এখানে তরল পদার্থ রয়েছে৷ সেটি এখানে বেরিয়ে এসে এই মিক্সারে জমা হয়, যেটি আসলে বাগানের কাজের জন্য তৈরি৷ আমি পাইপের মাধ্যমে তিনটি রংয়ের স্রোতের মুখ খুলতে বা বন্ধ করতে পারি৷ নীল ও হলুদ মেশালে অবশ্যই সবুজ রং সৃষ্টি হয়৷ তারপর সেই সবুজ রং এখান দিয়ে চলে যায়৷ তারপর দুটি পাম্পের মধ্যে বিভক্ত হয়ে দুটি পাইপের মাধ্যমে উপরে ফেনা তৈরির মেশিনে ধাবিত হয়৷''

রঙিন বুদবুদের এক জার্মান শিল্পী

প্যারিসের শিল্প উৎসব ‘নুই ব্লঁশ'-এর আওতায় স্টেফানির ফেনা ইনস্টলেশন দেখানো হচ্ছে৷ প্রশ্ন হলো, এটা কি সত্যি শিল্প, নাকি শুধু রঙিন আমোদের একটা প্রদর্শন? এক দর্শক বলেন, ‘‘মানুষের এটা আমোদ মনে হতে পারে৷ তবে এটা খুব সুন্দর এবং শিল্প কখনো শুধু সুন্দর হতে পারে৷ ফলে এটাও শিল্প হতে পারে৷ বিনামূল্যে সবার জন্য শিল্প৷'' আর একজন বলেন, ‘‘আমার কাছে এটা অবশ্যই শিল্প, কারণ এটা দেখলে অনুভূতি জাগে৷ ফেনার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার ইচ্ছা হয়৷ বেশ মজার৷ দেখলে অবশ্যই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়৷''

তবে সবাই এমন প্রচেষ্টা সম্পর্কে একমত নয়৷ এক দর্শক বলেন, ‘‘একদিকে এটা শিল্প বটে৷ দেখতে সুন্দর, অনেক মানুষকে আকর্ষণ করে৷ অন্যদিকে অবশ্যই এটা অপচয়৷ এর কী প্রয়োজন থাকতে পারে!''

স্টেফানি ল্যুনিং প্যারিসে নিজের পারফরমেন্স উপভোগ করেছেন এবং শেষে নিজের জনপ্রিয় শিল্পকর্মের অংশবিশেষ দর্শকদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন৷ স্টেফানি ল্যুনিং বলেন, ‘‘আমি সন্তুষ্ট এবং খুশি যে প্রযুক্তি ঠিকমতো কাজ করেছে এবং সবকিছু ঠিক চলেছে৷ বাতাসও কিছুটা শান্ত হয়েছে৷ আমার মতে, খুব সুন্দরভাবে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে৷''

শিল্পের ইনস্টলেশন শেষ হবার পর অবশিষ্ট আবর্জনা দূর করাও স্টেফানি ও তাঁর টিমের সদস্যদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷

অবশ্য বাগানের পাইপ দিয়ে পানি ঢেলে জায়গাটা দ্রুত পরিষ্কার করা যায়৷ রঙিন ফেনার স্বপ্নও সেইসঙ্গে পুরোপুরি উধাও হয়ে যায়৷

ক্রিস্টিয়ানে লেব্যার্ট/এসবি