যেভাবে জলাবন বাঁচাচ্ছেন শ্রীলঙ্কার বিধবারা
স্বামী-সন্তানদের তাঁরা হারিয়েছেন গৃহযুদ্ধে৷ রক্ষণশীল সমাজ হওয়ায় মাছ শিকারই ছিল তাঁদের একমাত্র অবলম্বন৷ কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে৷ জলাবন (ম্যানগ্রোভ) বাঁচানোর মাধ্যমে আয়ও বাড়িয়ে চলেছেন শ্রীলঙ্কার বিধবারা৷
জলাবন বাঁচানোর প্রশিক্ষণ
শ্রীলঙ্কা সরকার আর স্থানীয় সুদিসা সংগঠনের সহযোগিতা নিয়ে ২০১৫ সালে জলাবন রক্ষার একটি উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘সিকোলজি’৷ প্রকল্পের আওতায় ১৫ হাজার নারীকে প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্রঋণ দিয়েছে তারা৷ এর মধ্যে আছেন পাঁচ হাজার বিধবা৷
ডোবা পরিষ্কার রাখা
প্রকল্পের আওতায় কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠন হয়েছে নারীদের৷ সপ্তাহে সংগঠনের সভার পর একযোগে ম্যানগ্রোভ এলাকার ডোবা পরিষ্কারে বের হন নারীরা৷ আবর্জনা সরিয়ে ফেলায় লবণাক্ত পানি আসা কমে যায়৷ রক্ষা পায় ম্যানগ্রোভের সামুদ্রিক প্রাণী, বাড়ে মাছের উৎপাদন৷
নতুন গাছ লাগানো
মানার এলাকায ‘সুদিসা’ সংগঠনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আছে ১৭ হাজার ম্যানগ্রোভ চারার নার্সারি৷ সেখান থেকে চারা নিয়ে লাগানো হয় বনে৷
নয় লাখ হেক্টরের লক্ষ্য
প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর প্রকল্পে প্রত্যেক কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠন ২ দশমিক ৫ হেক্টর এলাকায় গাছ রোপণ করবে এবং দেখভাল করবে আরো ৮ দশমিক ৫ হেক্টর বনের৷ প্রকল্পের আওতায় প্রায় নয় লাখ হেক্টর ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে৷
নিজের পাঁয়ে দাঁড়ানো
আগে সম্পত্তি বন্ধক রেখেই মাছ ধরার জালসহ বিভিন্ন কিছু কিনতে হতো বিধবাদের৷ এখন আর সেটা করতে হচ্ছে না৷ ঋণ নিয়ে মাছ চাষ আর মাছ ধরার ব্যবস্থা করতে পারছেন তাঁরা৷
বাড়ছে আয়
ওই এলাকায় চিংড়ির উৎপাদন বাড়ায় বিধবাদের আয় অনেক বেড়েছে৷ উশান্থিনি জেসুকুমার নামে এই বিধবা এখন কেবল দুই ছেলের খরচ চালাচ্ছেন না, এক ভাগ্নির পড়ালেখার ব্যয়ও মেটাচ্ছেন৷