যে মেয়ের কাজ ওবামাকেও ছুঁয়ে গেছে
জাপানের ১২ বছরের মেয়ে সাদাকো সাসাকি মৃত্যুর আগে কাগজ দিয়ে এক হাজারের বেশি সারস পাখি তৈরি করেছে৷ এখন তা বিশ্বব্যাপী শান্তি ও আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে৷
সাদাকো সাসাকি কে?
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমায় পরমাণু বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ ওটাই ছিল বিশ্বে প্রথম আণবিক বোমা নিক্ষেপের ঘটনা৷ ঐ হামলায় সঙ্গে সঙ্গে মারা যান ৮০ হাজার মানুষ৷ এরপর তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরও প্রায় কয়েক হাজার জন৷ তাদের একজন সাদাকো সাসাকি৷
মৃত্যু
হিরোশিমায় হামলার সময় সাসাকির বয়স ছিল দুই৷ হামলা থেকে বেঁচে গেলেও তার শরীরে তেজস্ক্রিয় উপকরণ ঢুকে গিয়েছিল৷ যদিও প্রথমে বিষয়টি বোঝা যায়নি৷ একদম সুস্থ বাচ্চা হিসেবে পড়াশোনা করছিল সে৷ এরপর ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় তার লিউকেমিয়া ধরা পড়ে৷ এর তিন মাস পর ১৯৫৫ সালের ২৫ অক্টোবর সাসাকি মারা যায়৷ ছবিতে সাসাকির দুই বছরের বড় ভাই মাসাহিরো সাসাকিকে (মাঝে) দেখা যাচ্ছে৷ আর ফ্রেমে আছে সাসাকির ছবি৷
বাঁচার আশা
কোনো ব্যক্তি কাগজ দিয়ে এক হাজার সারস পাখি বানালে তার একটি আশা পূরণের আশ্বাস দেয়া আছে জাপানের এক লোককাহিনিতে৷ এতে বিশ্বাস রেখে হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় হাজারের বেশি সারস পাখি তৈরি করেছিল সাসাকি৷ এর বিনিময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার আশা করেছিল সে৷ যদিও তা হয়নি৷ ছবিতে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের পার্ল হারবারের ইউএসএস অ্যারিজোনা মেমোরিয়ালে সাসাকির তৈরি একটি সারস পাখি দেখা যাচ্ছে৷
তবে শান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে...
সাসাকির আশা পূরণ না হলেও তার সারস তৈরির কাহিনি এখন সারা বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করছে৷ আশা ও শান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে কাগজের তৈরি সারস৷ ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবরের এই ছবিতে হংকংয়ে পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভস্থলে কাগজের তৈরি সারস পাখি দেখা যাচ্ছে৷
স্মৃতিস্তম্ভ
১৯৫৮ সালে জাপানের হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল পার্কে সাসাকির একটি ভাস্কর্য (ছবি) স্থাপন করা হয়৷ তার হাতে সোনালি রংয়ের একটি সারস শোভা পাচ্ছে৷ এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল পিস পার্কেও সাসাকির একটি ভাস্কর্য রয়েছে৷
ওবামাও সারস বানিয়েছেন
প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১৬ সালে হিরোশিমা সফর করেছিলেন বারাক ওবামা৷ সেইসময় তিনি কাগজ দিয়ে চারটি সারস পাখি বানিয়েছিলেন৷
কেমন বানিয়েছেন ওবামা?
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার তৈরি কাগজের একটি সারস৷ ওবামার সারসগুলো এখন হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে রাখা আছে৷