1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

Landslide win for ex-PM Sheikh Hasina in Bangladesh poll

সমীর কুমার দে, ঢাকা৩০ ডিসেম্বর ২০০৮

মহানগরীর ১৫টি আসনের একটি আসনেও জিততে পারেননি বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের প্রার্থীরা৷ শুধু মহানগরী নয়, ঢাকা জেলা এমনকি ঢাকা বিভাগেও একটি আসনও পায়নি বিএনপি ও জামায়াত৷ অনেক আসনে 'না' ভোট আছে তৃতীয় অবস্থানে৷

https://p.dw.com/p/GPR1
আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা মিজানুর রহমান খান দিপুর কাছে ৩১ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন খোকাছবি: Mustafiz Mamun

বিগত সরকারের সময়ে দলীয় নেতাদের সীমাহীন দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি, কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারসহ নানা কারণে বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন সাধারণ মানুষ৷ এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে সোচ্চার হয়েছেন দেশের মানুষ৷ সেখানে বিএনপি জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করেছে৷ এসবেরই প্রতিফলন ঘটেছে এবারের নির্বাচনে৷ ঢাকা-২০ আসনে (ধামরাই) স্বাধীনতার পর থেকে কোনদিনই জিততে পারেনি আওয়ামী লীগ৷ এবার সে আসনটিও হারিয়েছে বিএনপি৷

এদিকে ঢাকার বাইরে বিএনপির প্রভাবশালী সব নেতাই ধরাশায়ী হয়েছে৷ যুদ্ধাপরাধী বলে খ্যাত স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছে দেশের মানুষ৷ ঢাকার আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পরই ‘না' ভোটের অবস্থান৷ অর্থাৎ অধিকাংশ আসনেই তৃতীয় হয়েছে ‘না'৷

Bangladesch Wahlen 2008
যুদ্ধাপরাধী বলে খ্যাত স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছে দেশের মানুষ৷ছবি: Mustafiz Mamun

ঢাকায় বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন ভালো না হলেও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী প্রার্থী ছিলেন৷ ঢাকা-৬ (সুত্রাপুর ও কোতয়ালি) আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচন করেছেন ঢাকা সিটি মেয়র সাদেক হোসেন খোকা৷ ১৯৯১ সালে এই আসনেই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে পরাজিত করেছিলেন তিনি৷ এবার সেখানে আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা মিজানুর রহমান খান দিপুর কাছে ৩১ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন৷ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রভাবশালী নেতা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমাদও পরাজিত হয়েছেন উদীয়মান তরুন আইনজীবী ব্যারিষ্টার ফজলে নুর তাপসের কাছে৷ ৪৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে তিনি পরাজিত হয়েছেন৷ ঢাকা-৪ (শ্যামপুর) আসনে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আবদুল হাই পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের তরুণ নেত্রী অ্যাডভোকেট সানজিদা খানমের কাছে৷ সানজিদা খানমের চেয়ে প্রায় অর্ধেক ভোট পেয়েছেন তিনি৷ ঢাকার সবচেয়ে আলোচিত দুই প্রার্থী সালাহউদ্দিন ও নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টুও ধরাশায়ী হয়েছে৷ তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আন্দোলন হয়েছে৷ পিন্টু আওয়ামী লীগের মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের চেয়ে অর্ধেকের কম ভোট পেয়েছেন৷ ছাত্রদলের সাবেক দুই সভাপতি হাবিবুন নবী সোহেল ও আজিজুল বারী হেলালের লজ্জাজনক পরাজয় হয়েছে৷ আরেক সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া পরাজিত হয়েছেন এবারই প্রথম নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের ইলিয়াস আলী মোল্লাহর কাছে৷ বিএনপির আলোচিত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ ধরাশায়ী হয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কাছে৷

ঢাকার অধিকাংশ আসনেই তৃতীয় হয়েছে ‘না' ভোট৷ ‘না' ভোট তৃতীয় স্থানে থাকা আসনগুলোর মধ্যে ঢাকা-৫ আসনে পড়েছে ৫ হাজার ৯৩টি, ঢাকা-৬ আসনে ৪ হাজার ৪৫৯টি, ঢাকা-৮ আসনে ৫ হাজার ৪৮১টি, ঢাকা-৯ আসনে ৪ হাজার ৬৬৮টি, ঢাকা-১০ আসনে ৫ হাজার ৬৮৭টি, ঢাকা-১২ আসনে ৫ হাজার ৫৫৬টি, ঢাকা-১৩ আসনে সর্বাধিক ৮ হাজার ৬০৮টি, ঢাকা-১৪ আসনে ৭ হাজার ৮২৪টি, ঢাকা-১৫ আসনে ৫ হাজার ২৯৮টি, ঢাকা-১৬ আসনে ৪ হাজার ৮৭৮টি, ঢাকা-১৭ আসনে ৬ হাজার ২১৩টি এবং ঢাকা-১৮ আসনে ৬ হাজার ২৮৯টি৷

ঢাকার বাইরে এবারের নির্বাচনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রভাবশালী প্রার্থী হেরে গেছেন৷ তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বিএনপি ও জামায়াতের নেতা৷ পরাজিতদের মধ্যে আছেন অনেক সাবেক মন্ত্রী-প্রতিন্ত্রীও৷

পরাজিতরা হলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমান, বিএনপি মহাসচিব ও সাবেক চিফ হুইপ খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম, সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি মওদুদ আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ৷

এছাড়া বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া (স্বতন্ত্র), সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম, স্পিকার ব্যারিষ্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবেক প্রধানন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (স্বতন্ত্র), মহাজোট প্রার্থী সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জামায়াত নেতা আবদুস সুবহান, বিএনপি নেতা মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ, রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, ডেপুটি স্পীকা আখতার হামিদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু, মুফতি ফজলুল হক আমিনী, কৃষক শ্রমিক লীগের কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ৷

স্বাধীনতাবিরোধী প্রার্থীদের মধ্যে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ছাড়া অন্যরা শোচনীয়ভাবে হেরে গেছেন৷ তারা হলেন, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, এটিএম আজহারুল ইসলাম, আবদুস সুবহান, আবদুল খালেক, রিয়াছাত আলী বিশ্বাস, আবদুল আজিজ, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান