যুদ্ধ ছেড়ে নতুন ঘরে
প্রায় তিন বছর ধরে যুদ্ধ চলছে সিরিয়ায়৷ যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে মুক্তি পেতে ইরাকের কুর্দিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে দুই লক্ষেরও বেশি সিরীয় নাগরিক৷ তাঁদের নিয়েই আজকের ছবিঘর৷
নতুন ঘর?
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের এপ্রিলে৷ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষদের জীবনে ভয়াবহভাবে নেমে এসেছিল যুদ্ধের বিভীষিকা৷ দু’পক্ষের গোলাগুলিতে বেঘোরে প্রাণ হারানো, বেঁচে থাকলে জীবনে আতঙ্কের সঙ্গে উপরি পাওনা খাদ্য, বস্ত্র আর চিকিৎসার অভাব৷ এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতেই ইরাকের কুর্দিস্তানে আশ্রয় নিতে শুরু করে সিরীয় কুর্দিরা৷
প্রতিদিন নতুন অতিথি
সিরিয়া ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ ইরাকের ডোমিজ শরণার্থী শিবিরে প্রতিদিনই আশ্রয় নিচ্ছে শত শত সিরীয়৷ বেশিরভাগই আসছে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে৷ শরণার্থী শিবিরেও জীবন কাটছে অবর্ণনীয় কষ্টে৷ প্রচণ্ড শীতের সময়েও বিদ্যুৎ বলতে গেলে ছিলই না, ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করাও ছিল বাতুলতা৷ তিনবেলা পেট পুরে খেতে পারা এখানেও যেন সৌভাগ্যের বিষয়৷
শরণার্থী শিবিরই যখন শহর
ডোমিজ শরণার্থী শিবিরকে হঠাৎ দেখলে পুরোদস্তুর শহর বলে ভুল হতে পারে৷ পিচ ঢালা পথের দু’ধারে সারি সারি দোকান৷ পারফিউম, রুটি, কাবাব থেকে টেলিভিশন পর্যন্ত বলতে গেলে সবই পাওয়া যায় এ সব দোকানে৷
যুদ্ধের ক্ষত
যুদ্ধাহত এক শিশু৷ দু’হাতে জখম নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ডোমিজ শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে সিরিয়ার এই শিশু৷ শরণার্থী শিবিরেই চিকিৎসা চলছে পুরো পরিবারের৷
বাস্তবতার চোখ রাঙানি
জন্মভূমি ছেড়ে এসে জীবন নিরাপদ এবং স্বচ্ছল না হলেও সিরীয়রা কিছুটা স্বস্তিতেই আছে৷ খাবারদাবার যথেষ্ট এখনো পাওয়া যাচ্ছে না, তবে যেটুকু পাচ্ছে তার জন্যই তাঁরা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি)-র প্রতি কৃতজ্ঞ৷ শিবিরের কাছের দোকানগুলোতে সবই পাওয়া যায়৷ তাতে কী! কেনার কথা ভাবলেই বাস্তবতা চোখ রাঙায়৷ নিজের ঘর, টাকা-কড়ি সবই তো ছেড়ে আসতে হয়েছে৷ একটু ভালো থাকার জন্য যা দরকার কিনে নেয়ার সাধ্য কি আর আছে!
দুর্দিনেও স্বজনের পাশে
নিজেরাই আশ্রিত৷ তারপরও দেশে ফেলে আসা স্বজনদের জন্য মন কাঁদে৷ শরণার্থী শিবির থেকেই তাদের পাশে দাঁড়ানো চেষ্টা করেন৷ কখনো কখনো ইরাকের শিবির থেকেই খাবার পাঠান স্বজনদের জন্য৷ যুদ্ধ এখনো থামছেনা বলে শরণার্থীদের ক্ষোভের শেষ নেই৷ তবে ইরাকি কুর্দিদের আতিথেয়তায় তাঁরা মুগ্ধ, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞও তাঁরা৷