1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যিশুর শিষ্যের চরিত্রে চেঙ্গিস গুরুর

১৪ জুলাই ২০২২

যিশু খ্রিস্টের বিচার, কষ্ট ও মৃত্যুর কাহিনি নিয়ে তৈরি নাটক ‘প্যাশন প্লে' নামে পরিচিত৷ জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের ছোট গ্রাম ওবারআমাগাওয়ে ৪০০ বছর ধরে প্যাশন প্লের আয়োজন হয়ে আসছে৷

https://p.dw.com/p/4E5jX
Deutschland | Oberammergauer Passionsspiele 2022
ছবি: Rudolf Gigler/IMAGO

এবার প্রথমবারের মতো যিশুর ১২ শিষ্যের একজন জুডাস চরিত্রে অভিনয় করছেন গ্রামের একজন মুসলমান৷ তার নাম চেঙ্গিস গুরুর৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি না যে, এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আপনাকে ক্যাথলিক বা খ্রিস্টান হতে হবে৷ এটা মানুষের আবেগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট৷''

২২ বছর বয়সি চেঙ্গিসের মা-বাবা ৫০ বছর আগে তুরস্ক থেকে জার্মানিতে এসেছিলেন৷ ওবারআমাগাও ফেস্টিভ্যালে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করা প্রথম মুসলমান তিনি৷

চেঙ্গিস গুরুর বলেন, ‘‘আমাকে এমন একটি ঐতিহ্যবাহী ফেস্টিভ্যালে সুযোগ দেয়ায় আমার মধ্যে বিশাল পরিবর্তন এসেছে৷ সব জায়গায় কিন্তু এমনটা হয় না৷ ওবারআমাগাও বলে এটা সম্ভব হয়েছে৷ এলাকার সবার এতে সমর্থন আছে৷ এটা প্যাশন প্লের দারুন একটা বিষয়: আপনি একা নন৷''

এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা মুক্ত সমাজে বাস করি৷ যে মুসলিম অভিনয় করছেন তিনি এই এলাকার মানুষ৷ তারও অভিনয় করার অধিকার আছে৷'' আরেক নারী বললেন, ‘‘তিনি এই গ্রামের মানুষ৷ এখানে থাকেন৷ তার বাড়ি এখানে৷ এটাই শেষ কথা৷''

বাভারিয়া রাজ্যে অবস্থিত ওবারআমাগাও গ্রামটি অনেক বেশি ক্যাথলিক৷ শুধুমাত্র এই গ্রামে জন্ম হওয়া কিংবা ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাস করা ব্যক্তিরাই উৎসবে অংশ নিতে পারেন৷ প্রতি দশ বছরে একবার এই ফেস্টিভ্যাল আয়োজনে প্রায় দুই হাজার স্থানীয় বাসিন্দা অংশ নিয়ে থাকেন৷

মারিয়া মাগডালেনা চরিত্র অভিনয় করা বারবারা শুস্টার বলেন, ‘‘এটা গ্রামের সবার মধ্যে সংযোগ বাড়ায়৷ দারুন একটা কমিউনিটি অনুভূতি নিয়ে আসে৷ আমি বলবো, এটা একটা সামাজিক ইভেন্ট৷''

নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার এক বছর আগে থেকে অভিনেতারা চুল বা দাড়ি কাটতে পারেন না৷ গ্রামের সবাই এতে অংশ নেয়৷

কাঠমিস্ত্রি টোবিয়াস হাজাইডেল মঞ্চের নকশা করেন৷ এছাড়া অর্কেস্ট্রার সদস্য হিসেবে গায়কদলের অনুশীলনের সঙ্গেও জড়িত তিনি৷

জার্মানির গ্রামে যিশুর জীবনী

মেয়র আন্দ্রেয়াস রোডলও অর্কেস্ট্রার সদস্য৷ সবাই এখানে একটা দল হিসেবে কাজ করে৷

ওবারআমাগাওয়ের আইসক্রিম পার্লারে চেঙ্গিস গুরুরের অভিনয় জীবন শুরু হয়৷ তিনি জানান, ‘‘যিশু কিংবা জুডাস চরিত্রে অভিনয়ের কথা আমি বলিনি৷ হঠাৎ করেই এটা হয়েছে৷ আমি এখানে আইসক্রিম পার্লারে বসেছিলাম৷ মায়ের সঙ্গে যখন আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন ক্রিস্টিয়ান এসে বললো, চেঙ্গিস, তুমি কি অভিনয় করতে চাও না? আমরা এখন একটা নাটকের অনুশীলন করছি৷''

ক্রিস্টিয়ান স্ট্যুকল প্যাশন প্লের পরিচালক৷ নাটকে বর্তমান সময় ধরে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চান তিনি৷ স্ট্যুকল বলেন, ‘‘এটা উসকানির বিষয় নয়৷ একেবারেই নয়৷ বরং এটা যুক্তিসঙ্গত, এ কারণে যে আমাদের এখানে ৫০ বছর ধরে তুর্কি বংশোদ্ভূত মানুষজন বাস করছেন৷ তারা এখানকার নাগরিক, ওবারআমাগাওয়ের নাগরিক৷ নাটকে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো, চরিত্রটা বোঝা৷ এরপর কে, কোথা থেকে এলো সেটা বিষয় নয়৷''

অনুশীলনের সময়ই চেঙ্গিসের অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ পাওয়া যায়৷ ইতিমধ্যে তিনি মিউনিখের এক নাটক স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেছেন৷ ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র ও থিয়েটারের জগতে পা রাখছেন চেঙ্গিস৷

গেয়ারহার্ড সনলাইটনার/জেডএইচ