1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যান্ত্রিক জগতের সৌন্দর্য্য তুলে ধরেন তিনি

১২ নভেম্বর ২০২০

কলকারখানা, শিল্পক্ষেত্রের প্লান্ট অথবা গবেষণাগার কাজের জায়গা হিসেবেই পরিচিত৷ এক ব্রিটিশ আলোকচিত্রী এমন পরিবেশের অভিনব ছবি তুলে মানুষকে আধুনিক বিশ্বের উৎপাদন ও বাণিজ্য প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/3lAui
ছবি: Alastair Philip Wiper

বিশাল পাইপ ও তারে ভরা শিল্পজগত সাধারণ মানুষের চোখের আড়ালে লুকানো থাকে৷ ব্রিটেনের ফটোগ্রাফার অ্যালেস্টেয়ার ফিলিপ ওয়াইপারের কাছে এমন জায়গার বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে৷ তিনি কোপেনহেগেন শহরের আমাগার বাকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতরের পরিবেশ ক্যামেরাবন্দি করছেন৷ ওয়াইপার স্বীকার করেন, ‘‘ছোটবড় নানা মাপের পাইপ দেখলে আমি নিজেকে সামলাতে পারি না৷ সে কারণে আমার তার ও কেবেলের কয়েক লাখ ফটো রয়েছে৷

অ্যালেস্টেয়ার শিল্পক্ষেত্রের এমন পরিবেশকে একেবারে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখেন৷ তাঁর তোলা ছবিতে পাইপ, গর্ত ও যন্ত্রপাতি গ্রাফিক নক্সা অথবা বিমূর্ত শিল্পকলার মতো দেখায়৷ কারখানার সাদামাটা বড় শেডে শৈল্পিক মাত্রা যোগ হয়৷ ফলে এমন জায়গা ঘিরেও উৎসাহ জেগে ওঠে৷ ওয়াইপার মনে করেন, ‘‘মানুষ যেভাবে এত বিশাল কাঠামো গড়ে তোলে, তা দেখে আমার মনে বিস্ময় জাগে৷ সেখানে দাঁড়িয়ে বলি, কী অসাধারণ! ছোটবেলা থেকেই অন্য মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরের জায়গাগুলি দেখার বাসনা থেকেই এই বিস্ময় তৈরি হয়েছে৷’’

তাঁর তোলা ছবি মোটেই মন ভালো করার মতো নয়, কারণ মোটিফগুলি বড়ই শীতল৷ দশ বছর আগে অ্যালেস্টেয়ার শিল্পক্ষেত্রের প্লান্টের প্রতি নিজের আবেগ আবিষ্কার করেছিলেন৷ এমন ‘কেজো’ জায়গার অনিচ্ছাকৃত সৌন্দর্য তাঁকে মুগ্ধ করে৷

কলকারখানার ছবি তোলেন ওয়াইপার

তাঁর ফটোগুলির মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন ও তার প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা ধারণা পাই৷ যেমন একটি রোবট সসেজ তৈরির কাজে মাংসের জমাট চর্বি প্রক্রিয়াজাত করে৷ অথবা এক পরমাণু গবেষণাগারে একটি রিসিভার পারমাণবিক কণা গ্রহণ করে৷ একাধিক মহাকাশযান প্রবেশ করতে পারে, এত বড় আকারের এক স্পেস সিমুলেটরের অভিনব পরিবেশ৷ বিশাল কন্টেনার জাহাজের ছবিও অনবদ্য৷ এমন জাহাজে ৮৫ কোটি কলা পরিবহণ করা যায়৷ ওয়াইপার বলেন, ‘‘এমন বিষয়বস্তুর গ্রাফিক উপাদান ও বিশাল আকার আমাকে সত্যি মুগ্ধ করে৷ মাপ ও বিশালতার পাশাপাশি আমাদের জীবনযাত্রার এক কাহিনিও সেখানে লুকিয়ে রয়েছে৷ আমরা কত পরিমাণ উৎপাদন করি, কত পরিমাণই বা সত্যি গোটা বিশ্বে পাঠানোর সত্যি প্রয়োজন রয়েছে৷’’

২০০৪ সালে অ্যালেস্টেয়ার ডেনমার্কে এসে পাকাপাকি থেকে যান৷ ফটোগ্রাফি নিয়ে তাঁর কোনো প্রথাগত শিক্ষা নেই৷ ছবি তোলার পর তিনি সচেতনভাবেই প্রায় কোনো রদবদল করেন না৷ ওয়াইপার বলেন, ‘‘আমি যতটা কম সম্ভব পরিবর্তন করি, কারণ আমি সহজ পথে কাজ করতে ভালবাসি৷ এডিটিং করতে আমার কোনো সমস্যা নেই৷ যা আছে, সেটাই দেখাতে চাই, নিজে বেশি কিছু যোগ করতে চাই না৷’’

তাঁর ছবিতে যে প্রায় কখনোই কোনো মানুষ দেখা যায় না, সেটা চোখে পড়ার মতো বিষয় বটে৷ ওয়াইপার বলেন, ‘‘যখন মনে করি ছবিতে কোনো নতুনত্ব আসবে এবং অন্য কাহিনি বলা যাবে, তখন মাঝেমধ্যে আমার ছবিতে কোনো মানুষ চলে আসে৷ কিন্তু মানুষকে ঘিরেই এই সব যন্ত্রপাতির অস্তিত্ব৷ মানুষই সেগুলি তৈরি করেছে বলে সেগুলির মধ্যেও মানবিক সত্তা রয়েছে৷’’

মানুষ ছাড়াই সেই সব যন্ত্র মানুষেরই কাহিনি তুলে ধরে৷ তাদের কাজ, তাদের চাহিদা সম্পর্কে জানা যায়৷ একটি গ্রিনহাউসে চিকিৎসাবিদ্যার স্বার্থে গাঁজা চাষ হয়৷ ফ্রান্সের বোর্দো শহরের শিল্প ও ডিজাইন মিউজিয়ামে বর্তমানে তাঁর ছবি শোভা পাচ্ছে৷ অ্যালেস্টেয়ার ফিলিপ ওয়াইপার বলেন, ‘‘ছবির মাধ্যমে আমি অনেক কল্পনা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি৷ মানুষই এমন সব কাঠামো নির্মাণ করেছে সেটা জেনে অনেকেই যে মুগ্ধ হয়, এই বিষয়টা আমার ভালো লাগে৷ অন্যদিকে আমি চাই, যে মানুষ তার কল্পনা কাজে লাগিয়ে এমন উদ্যোগের পরিণতি বা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা করুন৷’’

ওয়াইপার নতুন মোটিফের সন্ধান করে চলেছেন৷ তিনি আরও প্লান্টের ছবি তুলে আমাদের কাছে লুকানো জগতের অদ্ভুত সৌন্দর্যের কাহিনি শোনাতে চান৷

কিয়র্স্টিন শুমান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান