1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ম্যার্কেলের পরে কোন পথে জার্মানির পররাষ্ট্রনীতি?

১ মার্চ ২০২১

ম্যার্কেলের পর কে হবেন জার্মানির চ্যান্সেলর? আসছে নির্বাচন৷ তবে তার অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে ম্যার্কেল-পরবর্তী জার্মানির পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ভাবনা৷

https://p.dw.com/p/3q3wz
আর্মিন লাশেট, আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও মার্কুস স্যোডার
(বা থেকে) আর্মিন লাশেট, আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও মার্কুস স্যোডার

আগামী সেপ্টেম্বরেই নির্বাচন৷ সেখানে কে জয় পাবেন, কে হবেন ম্যার্কেলের উত্তরসূরী তা জানতে এখনো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে৷ তবে আপাতত এটুকু বলা যায় যে, সম্ভাবনার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন আর্মিন লাশেট এবং মার্কুস স্যোডার৷ জার্মানির সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ রাজ্য নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ার মুখ্যমন্ত্রী লাশেট সম্প্রতি ম্যার্কেলের দল সিডিইউ-র প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন৷ দলের প্রধান হওয়ার পর থেকে দেশের চ্যান্সেলর হিসেবে নিজের যোগ্যতা তুলে ধরার চেষ্টাও জোরেশোরেই করছেন তিনি৷ এ মাসে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘মানুষ এমন একজনকে চ্যান্সেলর হিসেবে দেখতে চায় যার পররাষ্ট্র এবং অভ্যন্তরীণ নীতিতে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে৷’’

লাশেটকে জবাব দিতে একটুও দেরি করেননি জার্মানির অন্যতম বড় রাজ্য বাভারিয়ার প্রধানমন্ত্রী মার্কুস স্যোর্ডার৷ স্যোর্ডার শুধু বাভারিয়ার প্রধানমন্ত্রী নন, সিডিইউ-এর সহযোগী দল সিএসইউ-র প্রধানও৷ লাশেট চ্যান্সেলর প্রার্থী হিসেবে নিজের যোগ্যতা ই্ঙ্গিতে তুলে ধরার পরই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে তার এক টেলিফোন আলাপচারিতার কথা৷ ৪৫ মিনিটের সেই কথোপকথনে দু দেশের মধ্যে বিমান চলাচল বিষয়ক প্রকল্প গুরুত্ব পেয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷

ম্যার্কেলের সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুব গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে নিয়েছে জার্মানি৷ নতুন চ্যান্সেলরের সময়ে জার্মানি সেই অবস্থান ধরে রাখতে পারবে কিনা এ প্রশ্ন ম্যার্কেল-যুগ অবসানের আগেই বড় হয়ে উঠেছে৷

হালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইয়োহানেস ফারভিক মনে করেন, ম্যার্কেল দেড় দশক চ্যান্সেলর থাকার ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তার বাইরে একটা ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছেন, সুতরাং নতুন কাউকে সেই পর্যায়ে যেতে সময় দিতে হবে৷

লাশেট আর স্যোর্ডারের পররাষ্ট্রনীতি

লাশেটের জন্ম বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ডস সীমান্ত সংলগ্ন আখেন শহরে৷ ইউরোপীয় নীতি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অভিজ্ঞতায় তিনি স্যোর্ডারের চেয়ে এগিয়ে৷ করোনা সংকটের সময়ও তিনি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গের সীমান্ত খোলা রাখার চেষ্টা করেছেন৷ অধ্যাপক ফারভিক মনে করেন, লাশেটের তুলনায় স্যোর্ডারের পররাষ্ট্র ভাবনা অনেকটাই অজ্ঞাত৷

তবে বার্লিনকেন্দ্রিক গ্লোবাল পাবলিক পলিসি ইন্সটিটিউটের পরিচালক থরস্টেন বেনার মনে করেন, ইউরোপীয় প্রকল্পের সঙ্গে স্যোর্ডারের সম্পৃক্ততা অতি নগণ্য৷

তবে মোটাদাগে দুজনই ইউরোপীয় ঐক্য ও মর্যাদা ধরে রাখার পক্ষে সদা সোচ্চার৷ ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান ছিল দুজনেরই৷ দুজনই মনে করতেন ট্রাম্পের কারণে ‘স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের ভূমি' যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে৷

এছাড়া লাশেট বা স্যোডার যিনিই চ্যান্সেলর হোন না কেন চীনের সঙ্গে সম্পর্ক একই থাকবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নরম নীতি?

ম্যার্কেলের বিদায়ের পর ক্রেমলিনের বিষয়ে বার্লিনের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে তা সময়ই বলতে পারবে৷ তবে সাম্প্রতিক সময়ের দুটি বিষয় একটা দিকনির্দেশনা দিতে পারে৷ নাভালনিকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ ওঠার পর কঠে্ার ভাষায় ক্রেমলিনের নিন্দা জানিয়েছিলেন লাশেট৷ সমালোচনা স্যোডারও করেছেন৷ তবে অতীতে লাশেট সিরিয়ায় রাশিয়ার ভূমিকার যেমন প্রশংসা করেছেন, সেরকম বক্তব্য স্যোডারের মুখে কখনো শোনা যায়নি৷ ২০১৪ সালে লাশেট ‘‘শুরুতে যখন রাশিয়া সবাইকে জিহাদিদের বিষয়ে সতর্ক করেছিল, তখন অনেক জার্মান বিষয়টিকে প্রোপাগান্ডা বলে উড়িয়ে দিয়েছিল’’ বলে পুটিনের প্রশংসাই করেছিলেন৷

ক্রিস্টফ হাসেলবাঙ্ক/এসিবি