মোশাররফ দেশে ফিরলে আপত্তি নেই সেনার
গুরুতর অসুস্থ পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ। দেশে ফেরার শেষ ইচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। আপত্তি নেই সেনার।
মোশাররফ কেমন আছেন?
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে যায় যে, সাবেক পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতের হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। যদিও এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তার পরিবারের তরফে ওই খবর অস্বীকার করা হয়। তবে কয়েকঘণ্টা ধরে এ নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল।
মোশাররফের অসুখ
এক জটিল অসুখে আক্রান্ত মোশাররফ। অসুখের নাম অ্যামিলয়ডোসিস। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অ্যামিলয়েড নামের এক প্রোটিন তৈরি হতে থাকে। যার ফলে গোটা শরীরে অসংখ্য অতিরিক্ত টিস্যু তৈরি হয়। চিকিৎসকদের বক্তব্য, এটি একটি মারণ রোগ।
কেমন আছেন মোশাররফ
দিনকয়েক আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন মোশাররফ। কিন্তু তার শরীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই পরিস্থিতিতে দেশে ফিরতে চেয়েছেন তিনি।
মোশাররফের ইচ্ছা
এক সংবাদমাধ্যমকে মোশাররফ জানিয়েছেন, জীবনের শেষ কয়েকটি দিন তিনি দেশে থাকতে চান। এটাই তার শেষ ইচ্ছা।
পাকিস্তান সেনার বক্তব্য
পাকিস্তানের সেনা জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জীবনের শেষ সময়ে দেশে ফিরতে চাইলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। সেনার মুখপাত্র বাবর ইফতিকার একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ''সেনার অবস্থান পরিষ্কার। মুশারফ দেশে ফিরলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তার পরিবারকে একথা জানানো হয়েছে। এরপর পরিবার যোগাযোগ করলে আমরা তাকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করব।''
সরকারের অবস্থান
এক সময় মোশাররফের সঙ্গে সাপে-নেউলে সম্পর্ক ছিল পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের। নওয়াজ এখন পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) প্রধান। তার ভাই শেহবাজ শরিফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। নওয়াজ জানিয়েছেন, মুশারফ দেশে ফিরতে চাইলে সবরকম ব্যবস্থা করুক সরকার। টুইটে তিনি লিখেছেন, 'একসময় আমি যে দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে গেছি, চাই না আর কেউ তা দেখুক। মোশাররফের প্রতি আমার কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশ নেই।'
আমিরাতে মোশাররফ
৭৮ বছরের মোশাররফ ২০১৬ সালে চিকিৎসার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছিলেন। এরপর আর তিনি পাকিস্তানে ফেরেননি। স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান। এরমধ্যে ২০০৭ সালে দেশের সংবিধান তুলে দেওয়ার জন্য মোশাররফের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৯ সালে পাকিস্তানের আদালত মোশাররফকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করে এবং তার মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মোশাররফকে সেই দণ্ড ভোগ করতে হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।