1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোদীর বাজেটে সাধারণ মানুষ কী পেল?

১ ফেব্রুয়ারি ২০২২

প্রধানমন্ত্রী মোদীর দাবি, এই বাজেট গরিবের জন্য, আর বিরোধীরা বলছে, বাজেটে দেশের ১০ শতাংশ ধনীর স্বার্থ দেখা হয়েছে।

https://p.dw.com/p/46M9f
মঙ্গলবার তার চতুর্থ বাজেট পেশ করলেন নির্মলা সীতারামন।ছবি: Anushree Fadnavis/REUTERS

তার চতুর্থ বাজেট পেশ করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীাতারামন দাবি করেছেন, আর পঁচিশ বছর পর স্বাধীনতার একশ বছরে ভারতের চেহারা কী হবে, তা এই বাজেটে বলা হয়েছে। তার ব্যাখ্যা, ভারতের পরিচয় হবে গতি ও শক্তি। উচ্চাকাঙ্খী ও দূরদর্শী বাজেট করতে গিয়ে করোনাকালে বর্তমান সমস্যার দিকে কি দৃষ্টি দিতে পেরেছেন সীতারামন? বিরোধীরা দাবি করছেন, বর্তমানে চাপে থাকা অর্থনীতির হাল ফেরাবার জন্য কোনো সুস্পষ্ট পদক্ষেপ সীতারামন নিতে পারেননি। কিছু চমক দিয়ে বাজেট তৈরি করেছেন। কিন্তু সেই চমকে বর্তমানের সমস্যা মিটবে না।

নির্মলা সীতারামন অবশ্য দাবি করেছেন, তার এই বাজেটের ফলে কৃষক, যুবক, শিক্ষার্থী, দলিত, আদিবাসী, গরিবরা বিশেষ করে উপকৃত হবেন। কাজের সুযোগ অনেকটাই বাড়বে। আর আগামী বছর আর্থিক বৃদ্ধির হার হবে নয় দশমিক দুই শতাংশ। কিন্তু বিরোধীদের দবি, এ নেহাতই কথার কথা। আসলে সেই বড়লোকেদের স্বার্থ দেখেছেন নির্মলা। গরিবদের জন্য কিছুই করেননি।

বাজেটের ঘোষণাগুলি

সরকারের দাবি ও বিরোধীদের এই তর্কে যাওয়ার আগে দেখে নেয়া যাক, বাজেটে কী কী গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী।

  • কৃষকদের কাছে ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যে ফসল কেনার জন্য দুই লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • ২০২২-২৩ সালে ৫জি চালু হবে।
  • কর্পোরেট কর ১৮ শতাংশ থেকে কমে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
  • ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়া হবে।
  • ডিজিটাল মুদ্রা চালু হবে।
  • ২০২২-২৩-এ ই পাসপোর্ট চালু করা হবে।
  • বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজেড) জন্য নতুন আইন।
  • কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কর্মীদের আয়কর ছাড়ের পরিমাণ ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৪ শতাংশ করা হলো। পেনশনপ্রাপকদের করছাড়।
  • সাধারণ মানুষের জন্য আয়করে কোনো পরিবর্তন নয়।
  • প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায়  ৮০ লাখ পরিবারের জন্য বাড়ি।
  • ৭৫ জেলায় ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিট।
  • দেশে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি।
  • মোবাইল ফোন, চার্জার সস্তা।
  • ২৩ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হবে।

বিরোধীদের বক্তব্য

বাজেট পেশের পর রাহুল গান্ধী টুইট করে বলেছেন, মোদীর বাজেটে চাকরিজীবী, মধ্যবিত্ত, গরিব, যুবক, কৃষক, ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য কিছুই নেই। একইরকম প্রতিক্রিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনিও বলেছেন, বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য কিছুই নেই। বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সরকার শুধু বড় বড় কথা বলেছে। এটা হলো পেগাসাস স্পিন বাজেট।

বিজেপি-র তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বাজেটে কৃষকদের স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে। তাদের ফসল কেনার জন্য প্রচুর বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সিপিএমের সাধাণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি টুইট করে বলেছেন, ২০২০-২১ সালে দুই হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা ফসল কেনার জন্য রাখা ছিল। সেই তুলনায় বরাদ্দ এবার কমানো হয়েছে।

ইয়েচুরির প্রশ্ন, এই বাজেট কার জন্য করা হয়েছে? ১০ শতাংশ ধনী ভারতীয়ের জন্য, যারা ৭৫ শতাংশ দেশের সম্পদের অধিকারী। আর ৬০ শতাংশ মানুষের জন্য পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের সাবেক অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেছেন, বাজেটে একশ দিনের কাজের জন্য বরাদ্দ ৯৮ হাজার কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৭৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়ছে। 

প্রধানমন্ত্রীর দাবি

বাজেট পেশের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, সব ক্ষেত্র বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যাতে আধুনিকতা আসে তার চেষ্টা করা হয়েছে। যুবক, মধ্যবিত্ত, দলিত, গরিব সকলেই এর সুবিধা পাবেন। এই বাজেটের উদ্দেশ্য গরিবের কল্যাণ। পাইপের জল, বাড়ি, শৌচাগার, আধুনিক নেট সংযোগে জোর দেয়া হয়েছে। হিমালয়ের মানুষদের জীবন যাতে সুগম হয় তার জন্য বিশেষ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথমবার পর্বতমালা যোজনা শুরু হচ্ছে। গঙ্গাতীরে প্রাকৃতিক চাষকে উৎসাহ দেয়া হবে। গঙ্গাকে কেমিক্যাল মুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।

মোদীর দাবি, কৃষকদের আয় বাড়বে। এমএসপি-তে ফসল কেনা হবে। সেই টাকা সোজা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে।

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই, এনডিটিভি)