মেরিলিন মনরো – যার সৌন্দর্য্য অমলিন
মৃত্যুর ষাট বছর পেরিয়ে গেছে৷ কিন্তু আজও ভক্তদের হৃদয়ে তিনি রয়ে গেছেন চিরসবুজ ‘বিউটি আইকন’ হিসেবে৷ ছবিঘরে থাকছে তার বর্ণাঢ্য জীবনের কাহিনি৷
হলিউডের আইকন
হলিউডের সুপারস্টার হিসেবে খ্যাত অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো খুব অল্প সময়েই সাফল্যের শিখরে পৌঁছে ছিলেন৷ পরবর্তীতে অনেক অভিনেত্রী ও সংগীত শিল্পী তাঁকে অনুকরণ করেন৷ পপ মিউজিক তারকা লেডি গাগা অথবা ম্যাডোনার কাছে তিনি ‘সেক্স সিম্বল’ বা ‘যৌন আবেদনময়ী’-র একজন আদর্শ মডেল৷
অপ্রত্যাশিত সন্তান
১৯২৬ সালের ১লা জুন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম হয় মনরোর৷ আসল নাম ছিল নরমা জিন মর্টেনসন৷ তাঁর বাবা-মার বিয়ে না হওয়ায় মা মনরোকে প্রতিপালন করতে চাননি৷ তাই বিভিন্ন পরিবারের মধ্যে থেকে তিনি বড় হন৷ এরপর মাত্র ১৬ বছর বয়সে জোর করে তাঁকে বিয়ে দেয়া হয়৷ কয়েক বছর পর অবশ্য তিনি বিবাহবিচ্ছেদ করেন৷
কর্মজীবনের শুরু
মনরো ৪০-এর দশকে কাজ করতেন অস্ত্র কারখানায়৷ সেসময় এক সেনা আলোকচিত্রী তাঁকে সামরিক পত্রিকার প্রচ্ছদের মডেল হওয়ার প্রস্তাব দেন৷ মনরো স্বচ্ছন্দে তাতে রাজি হন৷ এরপরেই মডেল হিসেবে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে৷ এটা ১৯৪৫-এর ঘটনা৷ তাঁর চুলের রং ছিল বাদামি এবং বেশ কোঁকড়ানো৷ সেটা বদলে সোনালি এবং সোজা করা হয়৷ আর তখন থেকেই তাঁর নতুন নাম হয় মেরিলিন মনরো৷
ক্যালেন্ডার কেলেঙ্কারি
মনরো জানতেন কীভাবে নিজের শরীরকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হয়৷ ১৯৬২ সালে একটি ক্যালেন্ডারে তাঁর নগ্ন ছবি প্রকাশিত হয়৷ স্বাভাবিকভাবেই এটা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে৷ সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছু পড়িনি তা ঠিক নয়, তবে একটি রেডিও তো ধরেছিলাম আমি৷’’
মিষ্টি এবং দুর্দান্ত আকর্ষণীয়
একটি যৌন আকর্ষণ, অন্যদিকে প্রতিভার সম্মিলন – এভাবেই মনরোকে দেখানো হয়েছিল ‘হাউ টু ম্যারি আ মিলিওনেয়ার’ ছবিতে৷ ১৯৫৩ সালে মুক্তি পাওয়াটা এই ছায়াছবিটিতে মেরিলিনকে যাঁরা একবার দেখেছেন, তাঁরা আজীবন মনে রেখেছেন তাঁকে৷
মন্ত্রমুগ্ধ করার ক্ষমতা
১৯৪৭ সালে ‘টোয়েন্টিয়েথ সেঞুরি-ফক্স’ স্টুডিও-র সাথে চুক্তি বদ্ধ হন মেরিলিন মনরো৷ এরপর ১৯৪৯ সালে তিনি আবারো মডেলিং জগতে ফিরে আসেন৷ ১৯৫৭ সালে মুক্তি পায় তাঁর বিখ্যাত ছবি ‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ’৷ এছাড়া ‘হাউ টু মেরি আ মিলিওনিয়ার’, ‘দ্য প্রিন্স অ্যান্ড দ্য শোগার্ল’ প্রভৃতি ছবিতে অভিনয় করে তিনি বিশ্বকে এক কথায় ‘মন্ত্রমুগ্ধ’ করেন৷
সংগীত শিল্পী মেরিলিন
মেরিলিন মনরো কিছু গানও রেকর্ড করেছিলেন, যা আজও অবিস্মরণীয়৷ ‘আই ওয়ানা বি লাভড বাই ইউ’, ‘ডায়মন্ডস আর আ গার্লস বেস্ট ফ্রেন্ডস’ – তাঁর বিশ্বখ্যাত কয়েকটি গান৷
শুভ জন্মদিন মিস্টার প্রেসিডেন্ট
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সঙ্গে মেরিলিনের খুব ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল বলে শোনা যায়৷ তবে এ তথ্য সত্য কিনা – তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ এই ছবিতে জন এফ কেনেডি এবং রবার্ট কেনেডির মাঝে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন৷ মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে মেরিলিনের পারফর্মেন্সের পর তোলা ছবিটি৷ গানের মাধ্যমে সেদিন মনরো প্রেসিডেন্টকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন৷
ওহ দুষ্টু বাতাস
‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ’ মুভির দৃশ্য এটি৷ এই ছবির কারণে তৎকালীন স্বামী ক্রীড়াবিদ জো দিম্যাজিও-র সাথে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় মনরোর৷
চিরবিদায়
মেরিলিন সংক্ষিপ্ত জীবনে তিন তিনবার বিয়ের করেন৷ তৃতীয়বার মার্কিন কাহিনিকার আর্থার মিলারকে বিয়ে করেন তিনি৷ এই বিয়েতে বেশ সুখিই হয়েছিলেন মনরো৷ কিন্তু সে সুখ বেশিদিন টেকে না৷ ১৯৬২ সালের ৫ই আগস্ট মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান এই কিংবদন্তি৷ মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়৷