মিস্ত্রির ছেলের প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠার গল্প
লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক বিশ্ব সেরা ফুটবলার জর্জ উইয়াহ৷ তাঁর শৈশব কেটেছিল রাজধানীর এক বস্তিতে৷
শুরুর কথা
লাইবেরিয়ার এক মিস্ত্রির ঘরে জন্মেছিলেন জর্জ উইয়াহ৷ দেশটির রাজধানীর এক বস্তিতে তাঁর শৈশব কেটেছে৷ অল্পবয়সে বাবা মারা যাওয়ায় আরও বেশি দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল তাঁর পরিবার৷ তবে ভাগ্য ভালো, একটি ফুটবল ক্লাব তাঁর ফুটবল প্রতিভা আবিষ্কার করতে পেরেছিল৷
প্রথম বিদেশি ক্লাব
১৯৮৭ সালে লাইবেরিয়ার অন্যতম এক শীর্ষ ফুটবল ক্লাবের হয়ে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন৷ ক্যামেরুনের একটি ক্লাবের সঙ্গে তাঁর ক্লাবের খেলার সময় ক্যামেরুনের ক্লাবটি উইয়াহর প্রতিভা দেখে তাঁকে তাদের দলে নিয়ে নেয়৷
ইউরোপ যাত্রা
ক্যামেরুনে মাত্র ছয়মাস খেলেছেন উইয়াহ৷ তারপরই পাড়ি দেন ইউরোপে৷ ফ্রান্সের মোনাকো ক্লাবে নাম লেখান তিনি৷ সময়টা ছিল ১৯৮৮৷ সেই থেকে তাঁর উত্থান শুরু৷ এরপর একে একে খেলেন মিলান, পিএসজির মতো ক্লাবে৷ ১৯৯৫ সালে তিনি বিশ্বসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন৷ আফ্রিকার সেরা ফুটবলার হয়েছেন তিনবার৷
বিশ্বকাপে সুযোগ হয়নি
বিশ্বের সেরা ফুটবলার হলে কী হবে, লাইবেরিয়ার নাগরিক হওয়ার বিশ্বকাপ খেলা হয়নি জর্জ উইয়াহর৷ কারণ, তাঁর দেশ কখনও বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করেনি৷ ছবিতে ২০০২ সালে আফ্রিকান নেশন্স কাপে উইয়াহকে দেখা যাচ্ছে৷
দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই
১৯৯৭ সালে ইউনিসেফের বিশেষ দূত হন উইয়াহ৷ সেই সময় বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায় প্রচুর অর্থ দান করেন তিনি৷ ফলে নিজ দেশ লাইবেরিয়ায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন জর্জ উইয়াহ৷
পারিবারিক জীবন
মার্কিন নাগরিক ক্লারকে বিয়ে করেন উইয়াহ৷ তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে৷ বড় ছেলে বাবার মতোই ফুটবল খেলে৷ লাইবেরিয়ায় স্ত্রীর নামে একটি টিভি চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি৷ ‘‘সে আমাকে সবসময় সমর্থন জুগিয়েছে, আমার দেশের জন্য কাজ করতে উৎসাহ দিয়েছে,’’ ২০০৮ সালে স্ত্রী সম্পর্কে জার্মান এক ম্যাগাজিনকে এমন কথাই বলেছিলেন উইয়াহ৷
রাজনীতির শুরু
গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ২০০৫ সালে লাইবেরিয়ায় প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ সবাইকে অবাক করে দিয়ে সেই নির্বাচনে লড়েছিলেন জর্জ উইয়াহ৷ তবে সেবার সফল হতে পারেননি৷
সংসদে উইয়াহ
২০১১ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও হেরেছিলেন জর্জ উইয়াহ৷ তবে ২০১৪ সালে সংসদের উচ্চকক্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছিলেন৷
অবশেষে...
২০০৫ সালে যে স্বপ্ন নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছিলেন উইয়াহ, ২০১৭ সালে এসে সেটি পূরণ হয়৷ প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে তিনি লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন৷ দায়িত্ব নিয়ে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করার অঙ্গীকার করেছেন জর্জ উইয়াহ৷