1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিশরে সরকার-বিরোধী গণ আন্দোলনের প্রতি ভারতের প্রচ্ছন্ন সমর্থন

৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১

মিশরের মানুষের আশা আকাঙ্খাকে যাতে গুরুত্ব দেয়া হয়, সে ব্যাপারে সরব হয়েছে নতুনদিল্লি৷ গণ-আন্দোলনকে মিশরের রাষ্ট্র-ব্যবস্থার সংস্কারের প্রতি সেদেশের মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবেই দেখতে চাইছে ভারত৷

https://p.dw.com/p/10AG9
মিশরে বিক্ষোভছবি: dapd

মিশরের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক৷ শীতল যুদ্ধের প্রথম থেকে নির্জোট আন্দোলনের শরিক হিসেবে পারস্পরিক কূটনৈতিক আদানপ্রদান ঘনিষ্ঠতর হয়৷ মিশরের বর্তমান গণবিক্ষোভের প্রেক্ষিতে সেদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে সমর্থন করেও কৌশলগতভাবে ভারত চাইছে বিনা রক্তপাতেই পরিস্থিতি স্থিতিশীল হোক৷ এক কথায় মিশরের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে সতর্ক পদক্ষেপ ফেলতে চাইছে নতুনদিল্লি৷ একটা কারণ হলো বিদেশ থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত তেলের একটা বড় অংশ আসে মিশর থেকে৷ মিশরের পরিস্থিতির জেরে ঐ অঞ্চলে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে, তাতে তেলের জোগান ব্যাহত হবার সম্ভাবনা আছে৷ ভারতের বাজারে এরই মধ্যে অশোধিত তেলের দাম পৌঁছে গেছে ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারের কাছাকাছি৷ শুধু তাই নয়, প্রমাদ গুনছে ডাবর, ইমামি ও মারিকোর মত মিশরে সক্রিয় ভারতীয় কোম্পানিগুলি৷ বর্তমান অস্থিরতা জেরে ডাবর ও মারিকো তাদের উৎপাদন আপাতত বন্ধ রেখেছে৷ মিশর ছেড়ে চলে আসছে ভারতীয়রা৷ তাদের জন্য বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে সরকার৷ প্রায় ৫০০ ভারতীয় মুম্বই ও দিল্লি এসে পৌঁছেছে৷

ভারতের রাজনৈতিক দলগুলি – বিশেষ করে বামদলগুলি মিশরের গণ আন্দোলনের প্রতি জানিয়েছে অকুণ্ঠ সমর্থন৷ সিপিআই-এম পলিটব্যুরোর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিন দশকের স্বৈরাচারী, দুর্নীতিগ্রস্ত শাসক মুবারককে অবিলম্বে গদি ছাড়তে হবে৷ অন্য কোন সমাধান মিশরের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷ সিপিআই সচিবালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিশরের জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানে গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম হোক৷ হোসনি মুবারক সেদেশের আমজনতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে৷ কথিত মার্কিন প্ররোচনায় ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার বৈধ সংগ্রামকে দুর্বল করেছে৷ দিল্লিতে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনগুলি মুবারকের দমন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছে৷

মিশরের অস্থির পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারতের অবস্থান প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক অধ্যাপক ইমন লাহিড়ি ভারত ও মিশরের ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং নির্জোট আন্দোলনের শরিক দেশ হিসেবে উল্লেখ করে ডয়চে ভেলেকে বলেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চিরস্থায়ী বন্ধু বা শত্রু হয়না৷ কাজেই নতুন সরকারের সঙ্গে নিজের অবস্থানের পরিবর্তন করতে হবে ভারতকে৷ হঠাৎ এই গণবিক্ষোভ কেন? অধ্যাপক লাহিড়ি বললেন, একটা স্বৈরাচারী শাসন দীর্ঘদিন চলতে থাকলে জনগণ হঠাতই তাকে উচ্ছেদ করতে চায়৷ এমনি করেই বিপ্লব আসে৷ যেমন এসেছিল ইন্দোনেশিয়ায়,মালয়েশিয়ায এবং আফ্রিকার অনেক দেশে৷

প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন