এই রায়ে খুশি পাঠক নাজমুন নাহার শাপলা৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘মানুষ কিভাবে এমন চিন্তা করে যে, কেউ দিনে-দুপুরে হাজারো মানুষের সামনে কুপিয়ে একজনকে মেরে ফেলবে আর তাদের কিছুই হবে না৷’’
পাঠক পলাশ ফাল্গুন মনে করেন, ‘‘একটা মেয়েকে ঘিরে প্রায় ২৫ জনেরও বেশি মানুষ ও তাদের পরিবার আজ ধ্বংস হয়ে গেল, এর থেকে মানুষের শিক্ষা নেয়া উচিত৷’’
আর রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসির আদেশ হওয়ায় ইকবাল কবির মনে করেন, ‘‘এতে জাতি ন্যায় বিচার পেয়েছে, এই রায় যেন উচ্চ আদালতে বহাল রাখা হয়৷’’
পাঠক শাওন এ রায়ের জন্য আদালতকে ধন্যবাদ দিয়েছেন৷
-
মিন্নি: সাক্ষী থেকে আসামি, তারপর মৃত্যুদণ্ড
নৃশংস হত্যাকাণ্ড
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাতকে৷ সেখানকার সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে তিনজনকে রামদা হাতে কোপাতে দেখা যায়৷ তাদের আশেপাশে ছিলেন আরো অনেকে৷ ভিডিওতে রিফাতের স্ত্রী বরগুনার সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে দেখা যায় স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে৷
-
মিন্নি: সাক্ষী থেকে আসামি, তারপর মৃত্যুদণ্ড
সাক্ষী থেকে আসামি
এই মামলায় এক নাম্বার সাক্ষী ছিলেন মিন্নি৷ কিন্তু পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন শ্বশুর৷ তার ভিত্তিতে মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷ সেদিন রাতেই তাকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়৷ তদন্তের পর মামলার অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় মিন্নির নাম যুক্ত করে পুলিশ৷
-
মিন্নি: সাক্ষী থেকে আসামি, তারপর মৃত্যুদণ্ড
ষড়যন্ত্রের প্রমাণ
রায়ে আদালত বলেছে, মিন্নিও যে তার স্বামীকে হত্যার ‘ষড়যন্ত্রে’ যুক্ত ছিলেন, প্রসিকিউশন তা ‘প্রমাণ করতে পেরেছে’৷ তবে রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর বলেন, ‘‘আমরা ন্যায়বিচার পাইনি৷ আমার মেয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার৷ আমরা আপিল করবো৷’’ মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেছেন, ‘‘আমরা বলেছিলাম, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ আমরা এই রায়ে সংক্ষুব্ধ৷’’
-
মিন্নি: সাক্ষী থেকে আসামি, তারপর মৃত্যুদণ্ড
কারাগারে মিন্নি
মিন্নি এতদিন জামিনে ছিলেন৷ তবে রায় ঘোষণার পরে দণ্ডিত বাকি আসামিদের সঙ্গে তাকেও প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে পাঠানো হয়৷ এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রিফাতের বাবা৷ (প্রতীকী ছবি)
-
মিন্নি: সাক্ষী থেকে আসামি, তারপর মৃত্যুদণ্ড
আরো যারা
মামলার এক নম্বর আসামি রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী৷ মৃত্যুদণ্ড পাওয়া বাকিরা হলেন আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আঁকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ও মো. হাসান৷ আদালত বলেছে, হত্যাকাণ্ডে তাদের সহযোগিতার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে৷ এর আগে ২০১৯ সালের ২ জুলাই হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন৷
ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় সেলিম আহমেদের মন্তব্য, ‘‘একটা ন্যায় বিচারের রায় দেখলাম৷ জাতির প্রশ্ন- রায়টা কি কাযকর হবে?’’ একই প্রশ্ন পাঠক কাশেম আবুলেরও৷
পাঠক কাওসার আহমেদ এই রায় সম্পর্কে লিখেছেন, ‘‘বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতে যাদের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল এক নাম্বার আসামি থেকে শুরু করে সবাই কিন্তু উচ্চ আদালতে জামিন নিয়ে একেবারে খালাস হয়ে বের হয়ে এসেছিল৷ এখন সেই অপেক্ষা ...৷’’
বর্তমান সময়ে বিচার বিভাগের কাজে পাঠক রফিক ইমরান সন্তুষ্ট৷ শাহেদ ও মিন্নির সাজার আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, এর ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে৷ তবে জুলেখা খানমের মতামত সম্পূর্ণ উল্টো৷ তার প্রশ্ন, ‘‘সাগর-রুনি কিংবা তনু হত্যার বিচার হয়েছে? নুসরাত হত্যারই বা কী হলো? আজ এত বছরেও সাগর-রুনি ও তনু হত্যার বিচার হলো না কেন?’’
ইমরান হোসেন মিলনের প্রশ্ন, ‘‘রিফাত হত্যার বিচার যেভাবে হয়েছে, সেভাবে কি তনু, সাগর-রুনি, বিশ্বজিৎ, আবরার ফাহাদ কিংবা মেজর সিনহার বিচার করতে পারবে আওয়ামী আদালত?’’
এদিকে মিন্নিকে দেয়ায় জুল আফরোজ খুব অবাক৷ ফেসবুক পাতায় তিনি লিখেছেন, ‘‘এই মেয়েকে ফাসি কী করে দেয়? ভিডিওতে দেখা গিয়েছে সে তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে৷ আসল আসামিকে ক্রস ফায়ার দিয়ে হত্যা করে এখন একটা গোঁজামিল রায় দিয়েছে৷’’
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী
গতবছরের ৩০ আগস্টের ছবিঘরটি দেখুন...
-
মোড় ঘোরানো সোশ্যাল মিডিয়া
নুসরাত হত্যা
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদেই পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল৷ ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চারদিন পর তাঁর মৃত্যু হয়৷ অভিযোগের আঙ্গুল ওঠে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলা ও তার সহযোগীদের দিকে৷ এর আগে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠলেও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে পার পেয়ে যান তিনি৷ তবে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উত্তাল হলে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে৷
-
মোড় ঘোরানো সোশ্যাল মিডিয়া
রিফাত হত্যাকাণ্ড ও মিন্নি
২০১৯ সালের ২৬শে জুন বরগুনায় রিফাত শরীফ নামে এক ব্যক্তিকে তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনেই কুপিয়ে হত্যা করে একদল লোক। ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ালে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত হামলাকারীদের একজন নয়ন বন্ড 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিন্নিকেও দায়ী করে আলোচনা ছড়ায়৷ পুলিশ মিন্নিকেও আটক করে৷ তাদের দাবি, মিন্নি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন৷
-
মোড় ঘোরানো সোশ্যাল মিডিয়া
শিশু রাজন হত্যা
একটি রিকশা ভ্যান চুরির অভিযোগ তুলে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে ১৩ বছর বয়সী রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মূল আসামি কামরুলের সহযোগী নূর মিয়া সেদিন রাজনকে পেটানোর দৃশ্য ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন। ওই ঘটনায় সারা দেশে তৈরি হয় তীব্র ক্ষোভ। এ মামলায় চার আসামির ফাঁসি ও পাঁচজনের কারাদণ্ডের রায় দেয় আদালত৷
-
মোড় ঘোরানো সোশ্যাল মিডিয়া
হজ ও লতিফ সিদ্দিকী
২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর হজ, তাবলিগ জামাত, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাংবাদিকদের সম্পর্কে তৎকালীন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর একটি বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়৷ নিজেকে হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী বলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৈরি হয় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া৷ এর ফলে তাকে মন্ত্রীত্ব তো খোয়াতে হয়েছেই, বহিষ্কার করা হয় আওয়ামী লীগ থেকেও৷
-
মোড় ঘোরানো সোশ্যাল মিডিয়া
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
সম্প্রতি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের প্রবাসীদের নিয়ে দেয়া একটি বক্তব্যের খণ্ডাংশ ফেসবুকে ভাইরাল হয়৷ প্রবাসীদের কষ্টের কথা গল্পচ্ছলে স্বভাবসুলভ মজার ঢং-এ বর্ণনা করলেও তাকে প্রচার করা হয় প্রবাসীবিদ্বেষী বলে৷ অবশ্য অধ্যাপক আবু সাঈদ বা তার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না আসায় ধীরে ধীরে তা স্তিমিত হয়ে পড়ে৷