মিন্নি: সাক্ষী থেকে আসামি, তারপর মৃত্যুদণ্ড
ঘটনার ১৫ মাসের মাথায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত৷ এই হত্যাকাণ্ডে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জড়িত কিনা তা নিয়ে সবার মনে প্রশ্ন ছিল৷
নৃশংস হত্যাকাণ্ড
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাতকে৷ সেখানকার সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে তিনজনকে রামদা হাতে কোপাতে দেখা যায়৷ তাদের আশেপাশে ছিলেন আরো অনেকে৷ ভিডিওতে রিফাতের স্ত্রী বরগুনার সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে দেখা যায় স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে৷
সাক্ষী থেকে আসামি
এই মামলায় এক নাম্বার সাক্ষী ছিলেন মিন্নি৷ কিন্তু পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন শ্বশুর৷ তার ভিত্তিতে মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷ সেদিন রাতেই তাকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়৷ তদন্তের পর মামলার অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় মিন্নির নাম যুক্ত করে পুলিশ৷
ষড়যন্ত্রের প্রমাণ
রায়ে আদালত বলেছে, মিন্নিও যে তার স্বামীকে হত্যার ‘ষড়যন্ত্রে’ যুক্ত ছিলেন, প্রসিকিউশন তা ‘প্রমাণ করতে পেরেছে’৷ তবে রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর বলেন, ‘‘আমরা ন্যায়বিচার পাইনি৷ আমার মেয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার৷ আমরা আপিল করবো৷’’ মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেছেন, ‘‘আমরা বলেছিলাম, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ আমরা এই রায়ে সংক্ষুব্ধ৷’’
কারাগারে মিন্নি
মিন্নি এতদিন জামিনে ছিলেন৷ তবে রায় ঘোষণার পরে দণ্ডিত বাকি আসামিদের সঙ্গে তাকেও প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে পাঠানো হয়৷ এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রিফাতের বাবা৷ (প্রতীকী ছবি)
আরো যারা
মামলার এক নম্বর আসামি রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী৷ মৃত্যুদণ্ড পাওয়া বাকিরা হলেন আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আঁকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ও মো. হাসান৷ আদালত বলেছে, হত্যাকাণ্ডে তাদের সহযোগিতার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে৷ এর আগে ২০১৯ সালের ২ জুলাই হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন৷