মিউনিখকে ভালোবাসার দশ কারণ
জার্মানির কথা বললেই অনেকের মনে লেডারহোসে, বিয়ার আর অক্টোবরফেস্টের ছবি ভেসে ওঠে৷ আর এসবই জার্মানির বাভারিয়া রাজ্য, আরো খোলসা করে বললে রাজ্যটির রাজধানী মিউনিখে মিলবে৷ তবে ঐতিহ্যবাহী এই শহরটির দেবার আরো অনেককিছু রয়েছে৷
মারিয়েনপ্লাৎসে গ্লোকেনস্পিল
মিউনিখে গেলে পর্যটকরা শহরটির কেন্দ্রীয় চত্বরে যাবেনই৷ সেখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে মারিয়েনপ্লাৎসের নিউ টাউন হলে গ্লোকেনস্পিল৷ প্রতিদিন ঠিক সকাল এগারোটায় এবং গ্রীষ্মে দিনে তিনবার প্রমাণ আকারের ৩২টি মানবমূর্তি বাভারিয়ার ষোড়শ শতকের ইতিহাসের দু’টি ঘটনা ফুটিয়ে তোলে৷ এটা জার্মানির সবচেয়ে বড় গ্লোকেনস্পিল৷
‘হ্যোফব্রয়হাউস আম প্লাৎসেল’
মারিয়েনপ্লাৎস থেকে একটু দূরেই ‘হ্যোফব্রয়হাউস আম প্লাৎসেল’৷ এটি সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত বিয়ার হল৷ ১৫৮৯ সালে বাভারিয়ার ডিউক ম্যাক্সিমিলিয়ান রাজকীয় ভাঁটিখানার সম্প্রসারিত অংশ হিসেবে বিয়ার পানের এই স্থানটি তৈরি করেন৷ প্রতিদিন ৩০,০০০ অতিথিকে পানীয় সরবরাহ করে এই বিয়ার হলটি৷
ইংলিশ গার্ডেন
মিউনিখের কেন্দ্রে অবস্থিত এক বড় গণউদ্যান ইংলিশ গার্ডেন৷ ৪০০ হেক্টর জমিতে অবস্থিত এই উদ্যানে গ্রীষ্মকালে অনেককে সূর্যস্থান করতে দেখা যায়৷
ঠান্ডা পানিতে সার্ফিং
‘দ্য আইসবাখ’ সার্ফারদের কাছে বেশ জনপ্রিয়৷ সেখানকার পানি গ্রীষ্মকালেও বরফ শীতল থাকে এবং অনেকের পক্ষে সেই পানিতে নামা সম্ভব নয়৷ তবে সার্ফারদের কথা আলাদা৷ তারা সেখানে সার্ফিং বেশ উপভোগ করেন৷
দামি স্থাপনা
মিউনিখে দামি স্থাপনার অভাব নেই৷ তবে সেগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় ‘দ্য রেসিডেন্স’-এর কথা৷ চারশ’ বছরের বেশি সময় এই স্থাপনাটি বাভারিয়ার ডিউক, ইলেক্টর এবং রাজাদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে৷
নিম্ফেনব্যুর্গ প্যালেস
মিউনিখের আরেকটি পর্যটন আকর্ষণ হচ্ছে নিম্ফেনব্যুর্গ প্যালেস৷ ১৬৬৪ সালে বাভারিয়ার ইলেক্টর ফ্যের্ডিনান্ড মারিয়া তাঁর স্ত্রীর জন্য উপহার হিসেবে এই প্যালেসটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ পরবর্তীতে এটি বাভারিয়ার রাজপরিবারের মূল গ্রীষ্মকালীন আবাস হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে৷ প্রতিবছর তিন লাখের বেশি পর্যটক এই প্যালেসটিতে ঘুরতে যান৷
পিনাকোথেক আর্ট মিউজিয়াম
শিল্পপ্রেমীদের মিউনিখের তিনটি পিনাকোথেক আর্ট মিউজিয়ামে অবশ্যই ঘুরতে যাওয়া উচিত৷ মিউনিখের কেন্দ্রেই সেগুলো অবস্থিতি৷
ঐতিহ্য
মিউনিখের বাসিন্দারা ঐতিহ্য ভালোবাসেন৷ ফলে তারা সুযোগ পেলেই বাভারিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন৷ বছরের যে-কোনো সময় সেখানে লেডারহোসে পরা পুরুষ আর ড্রিন্ডেল পরা নারী দেখতে পাবেন৷ অক্টোবরফেস্ট ছাড়াও স্থানীয় উৎসবগুলোতে এই পোশাক পরেন তারা৷
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিয়ার উৎসব
মিউনিখে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিয়ার উৎসব অক্টোবরফেস্ট৷ এই উৎসবে অধিকাংশ মানুষই বাভারিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক লেডারহোসে এবং ড্রিন্ডেল পরে অংশ নেন৷ অক্টোবরফেস্ট প্রথম হয়েছিল ১৮১০ সালে৷ এখন বিশ্বের নানা স্থানে এর আদলে উৎসবের আয়োজন করা হয়৷
ছবিতে সব দেখানো যায় না
জীবনের এমন কিছু বিষয় থাকে যা চাইলেও ক্যামেরাবন্দি করা যায় না৷ যেমন, বড় শহরে ছোট শহরের মতো অনুভূতি৷ তবে এতটুকু বলে শেষ করছি: ‘‘মিউনিখ, আমরা তোমাকে পছন্দ করি৷’’
প্রতিবেদন: এলিজাবেথ ইয়র্ক ভন ভার্টেনব্যুর্গ/এআই