1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানুষের মন পেতে দুয়ারে সিপিএম

৪ নভেম্বর ২০২২

আবার পুরনো পথে ফিরতে হচ্ছে সিপিএমকে। যেতে হচ্ছে দুয়ারে দুয়ারে। জানতে হচ্ছে, তারা কীভাবে সিপিএমকে দেখতে চান?

https://p.dw.com/p/4J3o0
মানুষের মন জানতে পশ্চিমবঙ্গে এখন দুয়ারে সিপিএম।
সিপিএম কর্মীরা এবার মানুষের দুয়ারে যাচ্ছে। ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DW

পশ্চিমবঙ্গে এখন সরকারই দুয়ারে চলে আসে। দুয়ারে রেশন থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষকশ্রী, ঐক্যশ্রী সবই দুয়ারে পাওয়া যাচ্ছে বলে সরকারের দাবি। সিপিএমও এবার  প্রশ্নমালা নিয়ে মানুষের দুয়ারে পৌঁছাতে শুরু করেছে। এখন তাদের এই কর্মসুচি চলছে দুর্গাপুরে। দলের নীতি এখন এভাবেই মানুষের কাছে পৌঁছানোর। মানুষের ভাবনার শরিক হওয়া। তারপর ওই বিষয়গুলি নিয়ে পরে মানুষের কাছে আবার পৌঁছানো।

এর আগে উত্তর ২৪ পরগনায় এই চেষ্টা হয়েছে। এবার হচ্ছে দুর্গাপুরে, আরো বড় আকারে। পরে আরো জায়গায় তা ছড়িয়ে দেয়া হবে।

দুর্গাপুরে কী করছেন সিপিএম কর্মীরা? তারা ঘরে ঘরে যাচ্ছেন একটা ফর্ম নিয়ে। মানুষকে সেই ফর্ম ভরে রাখতে বলছেন। তারপর একদিন গিয়ে নিয়ে আসছেন। ফর্মে নিজের নাম লেখার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

কী জানতে চাওয়া হচ্ছে?

ফর্মে বেশ কয়েকটি বিষয়ে মানুষের মতামত চাওয়া হচ্ছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে, গত ১০ বছরে পরিবারের কেউ চাকরি পেয়েছে কি না, পেয়ে থাকলে কেন্দ্র, রাজ্য না বেসরকারি সংস্থায়? তারা সরকারি সব প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন কি না, পেলে কীভাবে পেয়েছেন, কাউন্সিলরকে কোথায় পাওয়া যায়, কাউন্সিলার কাজ করেন কি না, তারা পুরসভার নির্বাচন কখন চান, তারা কি পুর নির্বাচনে ভোট দেবেন?

সেই ,সঙ্গে জানতে চাওয়া হচ্ছে, পাড়ার সমস্যা কী? মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে য়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, সেই ব্যাপারে মতামত কী? চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সুপারিশ কী? আপনারা কি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা, বিমা কোম্পানির বেসরকারিকরণ চান?

সিপিএম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে, বাম দলের কর্মীদের কি এলাকায় দেখতে পাওয়া যায়? সিপিএম সম্পর্কে মতামত কী? সিপিএম সম্পর্কে কি কোনো সুপারিশ আছে?

উদ্দেশ্য কী?

সিপিএম নেতারা জানাচ্ছেন, তারা দুইটি কাজ করতে চান। প্রথম কাজ মানুষের মন বোঝা এবং দ্বিতীয় কাজ জনসংযোগ।

অতীতে সিপিএমের সারা সময়ের কর্মী ছিলেন আশিস গুপ্ত। পরে অবশ্য তিনি সিপিএম থেকে বেরিয়ে আসেন। আশিস গুপ্ত ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''ক্ষমতায় আসার পাঁচ-সাত বছর পর এভাবেই মানুষেরকাছে যেত সিপিএম। তখন অবশ্য ফর্ম নিয়ে যেতে হত না। সিপিএমের ক্যাডাররা চাঁদার কুপন নিয়ে বাড়ি বাড়ি যেতেন। নেতারা আগে থেকে বলে দিতেন, কেউ গালাগালি দেবে, কেউ ঘরে বসে চা খাওয়াবে। কেউ দুটো কথা শোনাবে, কেউ ভালো বলবে। সব কথা চুপচাপ হজম করতে হবে এবং সব কথা দলকে জানাতে হবে।''

আশিস জানিয়েছেন, ''বছর সাতেক পর থেকে কর্মীরা আর বাড়ি বাড়ি যেত না। তারা দোকান থেকে কুপন কেটে চাঁদা নিয়ে টার্গেট পূরণ করতো। এখনো তাই করে। ফলে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছিল। এখন আবার সিপিএম পুরনো পথে ফিরছে, মানুষের মন জানতে এবং মন পেতে। বলা যেতে পারে, এটা ব্যাক টু বেসিকস। মানুষের কাছে না গেলে, তাদের সুখ-দু:খে পাশে থাকতে না পারলে তাদের মন পাওয়া যায় না।''

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''ক্যাডার ভিত্তিক দলকে মানুষের পাশে থাকতেই হয়। সিপিএম এখন যে আবার সেই কথাটা বুঝে কাজ করতে শুরু করেছে, সেটা তাদের জন্য ভালো। তবে মানুষের মন পেতে দীর্ঘ সময় লাগে, সেই কথা মনে রাখা দরকার।''

জিএইচ/এসজি (আনন্দবাজার, নিউজ ১৮)