মানুষকে বাঁচাতে ভাইরাস শিকারিদের বাদুর ধরা
ফিলিপাইন্সের গবেষকরা রাতের আঁধারে বেরিয়ে পড়েন বাদুর ধরতে৷ গবেষণা শেষে আবার তাদের ফিরিয়ে দেন প্রকৃতির বুকে৷ গবেষকদের আশা, তিন বছরের মধ্যে মহামারির কবল থেকে মানুষকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করা যাবে৷ দেখুন ছবিঘরে...
ভাইরাস শিকারি
ফিলিপাইন্সের একদল গবেষককে অনেকেই এখন ‘ভাইরাস শিকারি’ নামে চেনেন৷ অনেক ধরনের ভাইরাসের বাহক বাদুরদের ধরে ধরে তাদের নিয়ে গবেষণা করেন বলে এমন নামকরণ হয়েছে তাদের৷
বাদুরের ঝোলা
অনেক কষ্ট করে ধরা বাদুরগুলোকে এসব ব্যাগে পোরেন গবেষকরা৷ তারপর সব বাদুর গবেষণাগারে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়৷
জাপানের ভূমিকা
করোনা সংক্রমণে সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত ২৮ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ ফলে এই মহামারি এবং ভবিষ্যতের সব মহামারি মোকাবেলার প্রস্তুতি এখন সারা বিশ্বেরই ভাবনা৷ ফিলিপাইন্সের ইউনিভার্সিটি অব দ্য ফিলিপাইন্স লোস বানোস-এর বিজ্ঞানীরা শুরু করেছেন তিন বছরের গবেষণা৷ এর যাবতীয় খরচ বহন করছে জাপান৷
গবেষণার উদ্দেশ্য
গবেষক দলের প্রধান ফিলিপ আলভিয়োলা ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাদুরের ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছেন৷ অভিজ্ঞ এই ইকোলজিস্ট বলেন, ‘‘মানুষের দেহে বাসা বাঁধতে পারে করোনা ভাইরাসের এমন সব স্ট্রেইন নিয়ে কাজ করছি আমরা৷ ভাইরাসটাকে যদি চিনি আর তা কোত্থেকে এসেছে তা-ও যদি জানতে পারি, তাহলে কোনো সমস্যা হবে না, কারণ ভাইরাসটিকে ভৌগলিকভাবে কিভাবে বিচ্ছিন্ন করতে হয় তা আমরা জানি৷’’
যেভাবে বাদুর ধরছেন
বাদুরের সন্ধানে ফিলিপাইন্সের লাগুনা প্রদেশ চষে বেড়াচ্ছেন গবেষকেরা৷ রাতের আঁধারে পিপিই, হ্যান্ডগ্লাভস, মাস্ক পরে টর্চ নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন জঙ্গলে৷ পাহাড় বেয়ে নানা স্থানে খুঁজে বেড়াচ্ছেন বাদুর৷ বিভিন্ন বাড়ির ছাদে উঠেও পেতে রাখছেন বাদুর-ধরা জাল৷ ওপরের ছবিতে জালে ধরা পড়া বাদুর ধরছেন এক গবেষক৷
মানবকল্যাণে ঝুঁকির কাজ
বাদুরের ১৩ হাজার প্রজাতির মধ্যে হাতে গোণা যে কয়েকটা করোনা ভাইরাস বহন করে, হর্সহেড বাদুর তাদের মধ্যে অন্যতম৷ গবেষকরা মূলত এ ধরনের বাদুর ধরে তাদের পাখার দৈর্ঘ মাপা, মুখের লালা পরীক্ষার কাজ সারেন৷ তারপর আবার তাদের ফিরিয়ে দেন প্রকৃতির বুকে৷ সামান্য অসতর্কতার কারণে গবেষকরাও সংক্রমিত হতে পারেন৷ তবুও সারা বিশ্বের মানুষকে মহামারির হাত থেকে বাঁচাতে ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজ করছেন তারা৷