‘‘যারা পবিত্র রোজার মাসে ঘুমন্ত শিশুদের হত্যা করে, তারা মুসলমান নয়৷'' টুইটারের এই মন্তব্যটি পড়ে ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় পাঠক নঈম সানীর মন্তব্য, ‘‘আল্লাহ অবশ্যই ওদের শাস্তি দেবেন৷'' এই একই কথা লিখেছেন সাঈম আহমেদ অপুও৷
ফ্রেডি জানিয়েছেন, ‘‘আইএস কি মুসলমান? এরা জঙ্গি, এরা ইসলামের নামের কলঙ্ক৷ এদের কারণে ইসলাম আজকে ধ্বংসের পথে৷ ইসলাম মানে শান্তি৷ এটা কি ওরা বোঝে না?''
মানুষ হত্যার মতো অপরাধ কি আরো আছে? তাই আহমেদ সোহেল পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, ‘‘রোজার মাসে হত্যা করলে মুসলমান নয়, তাহলে অন্য মাসে হত্যা করলে কি মুসলমান?'' সোহেল আরো লিখেছেন, ‘‘মূলকথা, ইসলাম কখনই নির্দোষ মানুষকে হত্যা করা সমর্থন করে না৷ আর শিশুদের তো প্রশ্নই উঠেনা৷''
প্রায় পাঁচ মাস পর সিরিয়ার কুর্দি অধ্যুষিত কোবানি শহরে বৃহস্পতিবার হামলা করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর জঙ্গিরা৷ হামলায় অন্তত ৩৫ জন মানুষের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ এ সম্পর্কে আসফাক মাহমুদের মন্তব্য, ‘‘আইএস কি মুসলমান? ছি, লজ্জা! ওরা তো মুসাদ-এর বানানো দালাল৷''
-
হত্যা, আতঙ্ক আর ঘৃণায় আইএস
তাদের কাছে নারী যেন বাজারের পণ্য
অনেক সময় আটক নারী ও শিশুদের আইএস জঙ্গিরা যৌন দাস হিসেবে ব্যবহার করে৷ সম্প্রতি আইএস-এর কবল থেকে পালিয়ে আসা ৪০ জনেরও বেশি ইয়াজিদি নারীর সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ নারী ও শিশুদের সঙ্গে আইএস-এর এমন আচরণে নিন্দা জানিয়েছেন সবাই৷
-
হত্যা, আতঙ্ক আর ঘৃণায় আইএস
সাংবাদিক, এনজিওকর্মী হত্যা করে হুমকি
তাদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা বন্ধ না করায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে নিরপরাধ মানুষ হত্যার বেশ কিছু নজীর গড়েছে আইএস৷ বিমান হামলার প্রতিশোধের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রের দু’জন সাংবাদিক, একজন এনজিও কর্মী এবং ব্রিটেনের দু’জন এনজিও কর্মীর শিরশ্ছেদ করেছে তারা৷ ওপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক জেমস ফলিকে৷ গত আগস্টে তাঁর শিরশ্ছেদ করে ভিডিওচিত্র প্রচার করে আইএস৷
-
হত্যা, আতঙ্ক আর ঘৃণায় আইএস
মুসলমান হলেও রক্ষা নেই....
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সিরীয় শরণার্থীদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন পিটার কাসিগ৷ মুসলমান হিসেবে তাঁর নাম হয়েছিল আব্দুল রহমান কাসিগ৷ গত নভেম্বরে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় তাঁকেও হত্যা করে আইএস৷ হত্যার পর ভিডিও চিত্রও প্রকাশ করা হয়৷ নৃশংস এ ঘটনাকে ‘শয়তানের কাজ' হিসেবে বর্ণনা করেন বারাক ওবামা৷
-
হত্যা, আতঙ্ক আর ঘৃণায় আইএস
জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি, তারপর...
জাপানের দুই নাগরিককে জিম্মি করে প্রথমে ২০০ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দাবি করে আইএস৷ মুক্তিপণ না পাওয়ায় হারুনা ইউকাওয়াকে হত্যা করলেও সাংবাদিক কেনজি গোতোকে আটকে রাখে৷ গোতো এবং জর্ডানের বৈমানিক আইমান মাজ-আল-কাসাবেহকে জিম্মি করে তাঁদের প্রাণের বিনিময়ে জর্ডানে আটক আইএস-এর এক নারী যোদ্ধার মুক্তি দাবি করা হয়৷ তাঁকে মুক্তি না দেয়ায় কেনজি গোতো এবং আইমান মাজ-আল-কাসাবেহকে হত্যা করে আইএস৷
-
হত্যা, আতঙ্ক আর ঘৃণায় আইএস
ইরাকে শুরু....
গত বছরের জুন মাসে ঝটিকা আক্রমণের ইরাকের মোসুল দখল করে নেয় আইএস৷ সুন্দিদের এই জঙ্গি সংঠনটি তারপর ইরাকের বেশ বড় একটা অংশে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে৷ সিরিয়াতেও দখল করে নেয় কিছু এলাকা৷
-
হত্যা, আতঙ্ক আর ঘৃণায় আইএস
বাংলাদেশেও তৎপর আইএস...
আইএস সরাসরি যুদ্ধ করছে ইরাক আর সিরিয়ায়৷ যোদ্ধা সংগ্রহ করা হচ্ছে বিশ্বের প্রায় সব প্রান্ত থেকে৷ জার্মানি, বৃটেন, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের মতো ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে জঙ্গি মনোভাবাপন্নরা গিয়েছে ইরাক, সিরিয়ায়৷ এশিয়ার দেশগুলোতেও তৎপর আইএস৷ বাংলাদেশেও আইএস সমর্থক সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েকজনকে৷
-
হত্যা, আতঙ্ক আর ঘৃণায় আইএস
জুতার নীচে আইএস!
আইএস-এর প্রতি ঘৃণাও বাড়ছে সারা বিশ্বে৷ ইরাকের স্থপতি আকীল খ্রীফ তো আইএস জঙ্গিদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে বেছে নিয়েছেন অভিনব এক উপায়৷ পুরোনো জুতা সংগ্রহ করে তার নীচে জুতার পরিত্যক্ত ফিতা, বোতাম ইত্যাদি দিয়ে ফুটিয়ে তুলছেন আইএস জঙ্গিদের চেহারার আদল৷ আকীল খ্রীফ মনে করেন, আইএস জঙ্গিদের স্থান জুতার নীচেই হওয়া উচিত৷
-
হত্যা, আতঙ্ক আর ঘৃণায় আইএস
বৈমানিককে পুড়িয়ে মারা এবং জর্ডানের ‘প্রতিশোধ’
আটক নারী যোদ্ধাকে মুক্তি না দেয়ায় জর্ডানের বৈমানিক আইমান মুয়াত আল-কাসেসবেহ-কে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে মারে আইএস৷ ক্ষুব্ধ হয়ে পাল্টা ব্যবস্থা নিতেও দেরি করেনি জর্ডান৷ আইমান মুয়াত আল-কাসেসবেহ-কে (ওপরের ছবি) হত্যা করে আইএস ভিডিও প্রকাশের পরই তাদের নারী যোদ্ধা সাজিদা আল-রিশোয়াই ও আরেক কর্মীকে ফাঁসিতে ঝোলায় জর্ডান সরকার৷
লেখক: আশীষ চক্রবর্ত্তী
ডয়চে ভেলের ফেসবুকে এ বিষয়ে নাসের মাহমুদ লিখেছেন, ‘‘রোজা কেন, কোনো সময়ই মানুষ হত্যা করা মুসলমানের কাজ নয়, আমাদের প্রিয় নবী (স:) বলেছেন, যে ব্যাক্তি অন্যায়ভাবে একজন মানুষকে হত্যা করে সে সমগ্র মানবতাকে হত্যা করার অপরাধ করলো৷ তাই জালেম শাসকদের বলছি, মানুষ হত্যা করে গদিতে টিকে থাকার চেষ্টা করবেন না, পরিণতি ভয়াবহ হবে৷''
পাঠক রায়হানের সোজা কথা, ‘‘যারা এভাবে মানুষ হত্যা করে, তারা অমানুষ৷''
মো. রনি অবশ্য ভিন্ন কথা বলেছেন৷ তিনি প্রতিবাদের সুরে তাঁর মত জানিয়েছেন এভাবে, ‘‘আমরা যে যা মনে করি না কেন, এই সকল বর্বরোচিত হামলার পেছনে সম্ভবত অ্যামেরিকা, ইসরায়েল, ব্রিটেনরা কাজ করছে৷ কারণ এরা মুসলিমদের প্রকাশ্য এবং গোপনীয় শত্রু৷ আমাদের সকল মুসলিমদের উচিত এদের সকল পণ্য ব্যাবহার থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করা৷ চলুন আমরা চেষ্টা করি তাদের পণ্য বর্জন করতে আর এটাই তাদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ৷''
‘‘যারা এভাবে মানুষ হত্যা করে তারা মসুলমান নামধারী কুলাঙ্গার'' – এই মন্তব্য ফেসবুক বন্ধু মো. খালিদ হাসানের৷
আবদুল্লাহেল ফরিদের ভাষায়, ‘‘হামলাকারীরা মসজিদ, মন্দির, গির্জা, কবরস্থানের মতো স্থানও বাদ দিচ্ছে না, রোজার মাসেও হামলা বাদ নেই৷ এ যেন এক ভাইরাস৷ কুকুরে কামড় দিলে যেমন মানুষ জলাতঙ্কের রোগী হয়ে কুকুরের মতো আচরণ করে, তেমনি হামলাকারীরা ভাইরাসের মতো বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ