1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাছের ত্বকে রংয়ের বাহার ও নক্সার রহস্য

৬ জুন ২০২৩

অ্যাকুরিয়ামে রংবেরংয়ের মাছ দেখতে কার না ভালো লাগে! কিন্তু সেই মাছের ত্বকে এত রং ও নক্সার বাহার এলো কোথা থেকে? প্রায় এক শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানীরা সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন৷ এবার সেই রহস্যের কিছুটা সমাধান করা গেছে৷

https://p.dw.com/p/4SFrW
রঙিন মাছ
রঙিন মাছছবি: picture-alliance/WILDLIFE/F. Teigler

কিছু মাছের ত্বক ডোরাকাটা আর অন্য মাছের ত্বকে বিন্দু থাকে কেন? কয়েকশ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর বুকে মাছ বিচরণ করছে৷ পানির এই বাসিন্দার রং ও নক্সার বৈচিত্র্যের শেষ নেই৷ এবার মলিকিউলার বায়োলজির কৌশল প্রয়োগ করে সেই বৈচিত্র্যের রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হচ্ছে৷

সিক্লিড মাছ গবেষকদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়৷ কারণ সেই মাছ বেশিরভাগ প্রজাতির মাছের বিবর্তনের ক্ষেত্রে নানা ধরনের আকার ও নক্সার বন্দোবস্ত করেছে৷

আফ্রিকার ভিক্টোরিয়া হ্রদে বিবর্তন যেন ‘টাইম ল্যাপ্স'-এর মতো দ্রুত গতিতে ঘটেছে৷ মাত্র কয়েক হাজার বছরের মধ্যে সেখানে প্রায় ৫০০ প্রজাতির সিক্লিড মাছের আবির্ভাব ঘটেছে৷ আশেপাশের হ্রদ থেকে আসা হাতে গোনা কয়েক পূর্বপুরুষের দৌলতে এমন বৈচিত্র্য সম্ভব হয়েছে৷

ভিক্টোরিয়া হ্রদে বিভিন্ন ধরনের হ্যাবিটাট বা বাসস্থান রয়েছে৷ এই প্রজাতির মাছ সে সবের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে৷ যে সব মাছ জলজ উদ্ভিদের মধ্যে বাস করে, সেগুলির গা ডোরাকাটা হলে শিকারিদের চোখ এড়ানো সহজ হয়৷ অন্যদিকে খোলা পানির মধ্যে চরে বেড়ানো মাছের সেই ছদ্মবেশের প্রয়োজন হয় না৷ বরং ‘হরাইজন্টাল স্ট্রাইপ' বা আনুভূমিক রেখা তাদের জন্য ভালো৷ কারণ সে ক্ষেত্রে শিকারিদের পক্ষে কোনো একটি মাছের প্রতি মনোযোগ দেওয়া সহজ হয় না৷

এই প্রজাতির মাছের ত্বকে ভিন্ন ধরনের দাগ কীভাবে আসে, বিবর্তন সংক্রান্ত জীববিজ্ঞানীরা সেই রহস্য উন্মোচন করেছেন৷ একাধিক পরীক্ষায় তাঁরা ডোরাকাটা ত্বকের নর মাছের সঙ্গে আনুভূমিক রেখার পাঁচ জন করে মাদি মাছ একসঙ্গে রেখেছিলেন৷

মাছের ত্বকে লাল-নীল-হলুদের রহস্য

দেখা গেল, সেই মাছের সন্তানগুলির মধ্যে একটিরও শরীরে আনুভূমিক রেখা সৃষ্টি হলো না৷ সেই একই দল থেকে নতুন গ্রুপ সৃষ্টি করা হলো, যার মধ্যে একটি নর ও অনেকগুলি মাদি রয়েছে৷ সেই মাছের এক চতুর্থাংশ সন্তানের ক্ষেত্রে আনুভূমিক রেখা দেখা গেল৷ অর্থাৎ আনুভূমিক রেখা তখনই দেখা যায়, যখন বাবা এবং মা, দুজনের কাছ থেকেই সন্তান সেই জিন পায়৷

মিডাস প্রজাতির সিক্লিড মাছের ক্ষেত্রে রংয়ের বৈচিত্র্যের পেছনে সম্ভবত তথাকথিত ‘জাম্পিং জিন'-এর ভূমিকা আছে৷ মিডাস প্রজাতির সব সিক্লিড মাছের প্রথমে একটা ঘন রং থাকে৷ তারপর শরীরের বিকাশের সময় ‘জাম্পিং জিন'-এর কল্যাণে কমলা, হলুদ বা এমনকি সাদা রংও দেখা যায়৷

ঘন রং থেকে সোনালিতে পরিবর্তনের জন্য মেলানিন নামের ঘন পিগমেন্ট-ভরা কোষ দায়ী, যেগুলি মাছের ত্বকে মরে যায়৷ সেটা আসলে মাছের রং হারানোর প্রক্রিয়া৷ তা ছাড়া ‘জাম্পিং জিন' মাছের আঁশের মধ্যে প্রোটিন তৈরির প্রক্রিয়া পরিবর্তন করে৷

গবেষকরা একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাছের ত্বকের রং ও নক্সার বিকাশ নিয়ে কাজ করছেন৷ এখনো অনেক রহস্যের উন্মোচন সম্ভব হয় নি৷

কর্নেলিয়া বরমান/এসবি