মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ
১৫ মে ২০১৭মহাকাশচারীদের মাধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাতে হয় না বটে, কিন্তু পেশি ও হাড়ের ক্ষয় সামলাতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়৷ কারণ এমন অবস্থায় শরীরের উপর স্বাভাবিক ভার লোপ পায়৷ এয়ারোস্পেস চিকিৎসক প্রো. রুপার্ট গেয়ারৎসার সেই সমস্যার সমাধান খুঁজছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘মহাকাশচারীদের ক্ষেত্রে একটি সমস্যা রয়েছে৷ পেশি ও হাড়ের ক্ষয় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন তাঁরা দু’ঘণ্টা ব্যায়াম করেন৷ সে কারণে যে মহাকাশচারীরা দীর্ঘ সময় ধরে মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে থাকেন, তাঁদের জন্য প্রশিক্ষণের নতুন পদ্ধতির প্রয়োজন আছে৷ সেনট্রিফিউজ সে কাজে সহায়ক হতে পারে৷’’
হাইটেক ক্যাটাপুল্ট-এ প্রশিক্ষণের প্রহর গোনা হচ্ছে৷ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী যখন দ্রুত গতিতে ঘুরতে থাকবেন, তখন তাঁর হৃৎস্পন্দন ও রক্ত চলাচলের উপর নজর রাখা হবে৷ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মাত্রা বাড়িয়ে পেশিসহ গোটা শরীরকে আরও শক্তিশালী করে তোলাই এর উদ্দেশ্য৷
এমন অবস্থায় মাথা ঘুরতে পারে৷ সেন্ট্রিফিউজ যত দ্রুত ঘোরে, শরীরে মাধ্যাকর্ষণের টান ততটাই বেড়ে যায়৷ প্রশিক্ষণের প্রভাবও সেই হারে বাড়ে৷
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সে সময় প্রকৌশলি ও ডাক্তারদের সঙ্গে ওয়্যারলেস পদ্ধতিতে যোগাযোগ রেখে চলেন, যাতে বিপদ হলে প্রক্রিয়া সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দেওয়া যায়৷ রোলার কোস্টারে লুপিং-এর সময়ে যে তীব্র মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অনুভব করা যায়, আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য সেটা সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে৷
সেন্ট্রিফিউজ ধীরে ধীরে ঘুরতে শুরু করে, তারপর সর্বোচ্চ গতির মাত্রা ছোঁয়৷ তখন মিনিটে ৪৫ বার ঘোরে সেটি৷ সেন্ট্রিফিউজিয়াল ফোর্স পায়ের উপর সবচেয়ে বেশি চাপ সৃষ্টি করে৷ ব্যায়ামের জন্য তা খুবই ভালো৷ কিন্তু বিজ্ঞানীরা তাতেও খুশি নন৷ প্রো. রুপার্ট গেয়ারৎসার বলেন, ‘‘আমাদের সমস্যা হলো, মহাকাশচারীর ট্রেনিং-এর সময় কমাতে হবে৷ সেন্ট্রিফিউজের সুবিধা হলো, সেটি ঘোরার সময় শরীরের উপর অংশের তুলনায় নীচের অংশে বেশি চাপ পড়ে৷ কিন্তু সেখানেই আবার সমস্যা৷ তাই আমাদের আশা, সেন্ট্রিফিউজের সঙ্গে সঙ্গে সাইক্লিং-এর মতো ফিটনেস ট্রেনিং-ও করাতে পারবো, যাতে সব মিলিয়ে আধ ঘণ্টা সময় বাঁচানো যায়৷’’
আইএসএস-এর মহাকাশচারীরা প্রথাগত পদ্ধতিতেই ট্রেনিং নিচ্ছেন৷ কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে মহাকাশেও সেন্ট্রিফিউজ প্রয়োগ করা হবে৷