কুমারীত্ব পরীক্ষা ধর্ষণের শামিল
১ জানুয়ারি ২০১৯নারীরা মনে করেন, এ ধরনের পরীক্ষা ধর্ষণের শামিল৷
মরিয়মের বয়স ২৪ বছর৷ তিনি অবিবাহিত৷ কারো সাথে যৌন মিলনে ভয় পান তিনি৷ শৈশবেই তাঁকে কুমারীত্ব পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে৷ এই পরীক্ষাকে তিনি বর্বরোচিত এবং ভয়াবহ বেদনাদায়ক বলে উল্লেখ করেছেন৷ এটা নারীত্বের অধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করেন তিনি৷
তবে কেবল মরক্কো নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই এই প্রথা প্রচলিত আছে৷ মরক্কোর গ্রামগুলোতে এটা খুবই সাধারণ ঘটনা৷ এখানে এমন ধাত্রীরা এই পরীক্ষা করেন, যাঁদের যথার্থ প্রশিক্ষণ নেই এবং বিয়ে হওয়ার আগ পর্যন্ত মেয়েদের এই ভয়াবহ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিয়মিত যেতে হয়৷ তবে এই ধাত্রীদের উপর পরিবারের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে৷ মরিয়ম বলেন, প্রতিটি নারীর কাছেই এই পরীক্ষা ধর্ষণের মতো, কেননা, এতে শারীরিক যন্ত্রণার পাশাপাশি নারীরা মানসিক কষ্টও ভোগ করেন৷
ডয়চে ভেলে এমন ধাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে যিনি নিয়মিত এই পরীক্ষা করেন৷ তাঁর মতে, ‘‘এটা একটা গুরু দায়িত্ব, কেননা, এর মাধ্যমে অনেক পরিবারের গোপন তথ্য জানতে পারি আমি৷ কিন্তু আমি সেগুলো প্রকাশ করি না, কেননা, কুমারীত্ব একটা পরিবারের সম্মানের বিষয়৷'' হাত দিয়েই সতীচ্ছদ পরীক্ষা করেন বলে জানালেন তিনি৷
মানবাধিকার ও নারী অধিকার কর্মীরা অবিলম্বে এ ধরনের পরীক্ষা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন৷ এটা ধর্ষণের অন্য রূপ বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা৷ অধিকার-কর্মী সারাহ আল আওনি জানালেন, ‘‘আমরা নারীদের সচেতন করে তুলছি, যাতে তাঁরা নিজেরাই এর প্রতিবাদ করতে পারে৷'' পাশাপাশি ‘কুমারীত্ব বিয়ের অন্যতম শর্ত'- এমন ধারণার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন তাঁরা৷ এই ট্যাবু ভাঙার চেষ্টা করছেন৷
এ ধরনের পরীক্ষায় অপরিচ্ছন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়, যা নানা ধরনের সংক্রমণের সৃষ্টি হয়৷ সারাহ জানালেন, এই ধাত্রীরা অনেক সময় গর্ভপাত করান, যা অবৈধ এবং এতে অনেকের মৃত্যুও ঘটেছে৷
ফাতিমা এজ্জাহরা কোয়াজ্জৌজ/এপিবি