1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভয় না পেয়ে বাদুড়ের গুণাগুণ রপ্ত করা

২৩ আগস্ট ২০২১

করোনা মহামারির শুরু থেকেই বাদুড়কে ঘিরে বাড়তি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে৷ অসাধারণ ক্ষমতা সত্ত্বেও এই প্রাণীর সঙ্গে ভাইরাস সংক্রমণের বদনাম জড়িয়ে রয়েছে৷ কিন্তু বাদুড় সম্পর্কে রটনায় কান না দিয়ে সত্য উন্মোচন করা উচিত৷

https://p.dw.com/p/3zMbU
Sendung Eco Africa vom 16.04.2021
ছবি: DW

রাতের অন্ধকারেও তারা অনায়াসে উড়ে বেড়ায়৷ মারণাত্মক ভাইরাসও সহজে বিস্ময়কর আয়ুর অধিকারী এই প্রাণীর অনিষ্ট করতে পারে না৷ মানুষ শুধু বাদুড়ের এমন ‘সুপার পাওয়ার'-এর স্বপ্ন দেখতে পারে৷ সত্যি, বাদুড়ের মতো অন্য কোনো প্রাণীর এমন বেঁচে থাকার ক্ষমতা নেই৷

গবেষকরা বহুকাল ধরে সেই কনসেপ্ট সম্পর্কে ধারণা পাবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ অবশেষে তাঁরা সেই রহস্য উন্মোচনের পথে অনেকটা এগোতে পেরেছেন৷ সুপার পাওয়ারের উৎস আসলে জিনের মধ্যে রয়েছে৷ মাক্স-প্লাংক ইনস্টিটিউটের গবেষক মিশায়েল হিলার বলেন, ‘‘আমরা বাদুড়ের জিনোমের মধ্যে তুলনা করে অনেক নতুন তথ্য জানতে পেরেছি৷ এই প্রাণী কীভাবে অন্যান্য জীবের জন্য মারণাত্মক ভাইরাস সামলাতে পারে, সে বিষয়ে ধারণা পেয়েছি৷ ফলে বার্ধক্যের প্রক্রিয়া কমানো ও রোগব্যাধী উপশম করা সহজ হতে পারে৷''

বাদুড়ের ভাবমূর্তি কিন্তু মোটেই ইতিবাচক নয়৷ করোনা সংকট শুরু হবার আগেও এই প্রাণী বিপজ্জনক ভাইরাস বহনকারী হিসেবে পরিচিত ছিল৷ কিন্তু সেই আতঙ্ক আসলে কতটা ন্যায্য?

জার্মানির ক্লেবাখ শহরে প্রকৃতি সংরক্ষণ সংগঠনের উদ্যোগে খুব কাছ থেকে বাদুড়ের কার্যকলাপ দেখতে এক অভিযানের আয়োজন করা হয়েছিল৷ শহরের কাছেই নাকি অনেক বাদুড়ের বাসা৷ অভিযানের অংশগ্রহণকারীদের মনে উত্তেজনার অভাব নেই৷ কারণ সহজে এই রহস্যজনক নিশাচর প্রাণীর দেখা মেলে না৷ পৌরাণিক কাহিনিতেও বাদুড়ের উল্লেখ পাওয়া যায়৷ অন্ধকারের এই প্রাণীকে ঘিরে রহস্যের অভাব নেই৷

দিনের আলোয় বাদুড়ের দেখা পাওয়া কঠিন৷ অন্ধকারের অপেক্ষা করার সময়ে পরিবেশ সংগঠনের এক  প্রতিনিধি রহস্যজনক এই প্রাণী সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা দূর করার সুযোগের সদ্ব্যবহার করলেন৷ বাদুড় সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পেট্রা গাৎস বার বার মানুষের ভয়ের কথা জানতে পারেন৷ তিনি বলেন, ‘‘অনেক মানুষ সত্যি বিশ্বাস করেন, যে বাদুড় শুধু পাশ দিয়ে উড়ে গেলেই তাদের জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে৷ অবশ্যই সেটা কোনোমতে সম্ভব নয়৷ বাদুড়ের কামড় খেলে তবেই এমন সংক্রমণ ঘটতে পারে৷ অনেকে আবার মনে করেন, যে বাদুড় ওড়ার সময় মুখের লালা পড়ে৷ তাদের ধারণা, সন্ধ্যাবেলা  বাগানে বসে কিছু পান করার সময় গ্লাসে সেই লালা পড়লেও জলাতঙ্ক হতে পারে৷ কিছু লোকের মনের গভীরে এমন আতঙ্ক দানা বেঁধে রয়েছে৷''

এমন ভয়ের সত্যি কোনো কারণ রয়েছে কি? বাদুড় কীভাবে মানুষের জন্য বিপজ্জনক অনেক ভাইরাস অনায়াসে বহন করতে পারে?

ড্রেসডেন শহরে মাক্স-প্লাংক ইনস্টিটিউটে মিশায়েল হিলার আন্তর্জাতিক গবেষকদলের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে ছয় ধরনের বাদুড় প্রজাতির জিনোটাইপের প্রায় সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করতে পেরেছেন এবং জিনের মধ্যে পরিবর্তনের ইঙ্গিত পেয়েছেন৷ হিলার বলেন, ‘‘আমরা জিনোমের মধ্যে এমন সব জিনের খোঁজ করেছি, যেগুলি বাদুড়ের বিবর্তনের সময় নতুন করে যুক্ত হয়েছে৷ আমরা অ্যান্টি-ভাইরাল ক্ষমতাসম্পন্ন জিন শনাক্ত করেছি৷ সেগুলি কোষের মধ্যে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির মোকাবিলা করে৷''

সেই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা আরো অনেক নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন৷ যেমন যে জিন শরীরে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহের প্রতিক্রিয়া ঘটায়, সেগুলি আচমকা উধাও হয়ে যায়৷

গবেষকদের ধারণা, এই দুটি ক্ষমতার কারণে বাদুড় আরো ভালোভাবে ইমিউন সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং রোগব্যাধীর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে৷ বাদুড়ের কিন্তু আরো ‘সুপার পাওয়ার' আছে৷

আনা বারকভস্কি/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য